বিতর্কের মুখে কিউই অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন!

বিতর্কের মুখে কিউই অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন!

বিতর্কের মুখে কিউই অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন!

ক্রীড়া ডেস্ক

কেন উইলিয়ামসন, নিউজিল্যান্ড ক্রিকেটের অন্যতম ভরসার নাম। ব্যাট হাতে বিশ্ব সেরাদের একজন। ক্রিকেটিয় ব্যাকরণ মেনেও আধুনিক ক্রিকেটের সঙ্গে তাল মিলিয়ে খেলছেন অসাধারণ সব ইনিংস। টেস্ট কিংবা ওয়ানডেতে সবসময় দলের বড় ভরসা উইলিয়ামসন। ২০১৫ বিশ্বকাপ শেষে অবসরে যান তখনকার কিউই অধিনায়ক ব্রেন্ডন ম্যাককুলাম। পরবর্তী অধিনায়ক কে হবে সেটি নির্বাচিত করতে দ্বিতীয়বার ভাবতে হয়নি নিউজিল্যান্ড ক্রিকেট বোর্ডের। কারণ, তাদের ছিল ভরসাবান কেন উইলিয়ামসন।

অধিনায়কত্বের দায়িত্ব নেয়ার পরেও উইলিয়ামসনের ব্যাটে রানের খরা পড়েনি তেমন। মাঠে রোমাঞ্চকর মুহূর্ত সামলান খুব ধীর-স্থির থেকে। ২০১৯ ক্রিকেট বিশ্বকাপে তার ব্যাটে সওয়ার করে ফাইনাল খেলে নিউজিল্যান্ড। রোমাঞ্চকর ফাইনালে শেষ বলটির আগে পর্যন্ত একবারের জন্য বিচলিত দেখা যায়নি এই ক্রিকেটারকে। এমনকি বাউন্ডারি নিয়ম নিয়ে কথা বলে কোনো বিতর্কের জন্ম দেননি ২৯ বছরের উইলিয়ামসন। তবে সম্প্রতি নিউজিল্যান্ড ক্রিকেটে অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসনকে নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে বিতর্ক। আর বিতর্ক তুলেছেন দেশটির সাবেক অধিনায়ক গ্লেন টার্নার। যিনি নিউজিল্যান্ড ক্রিকেটের কোচ এবং পরবর্তীতে নির্বাচকের ভূমিকাও পালন করেন।

গ্লেন টার্নারের মতে, নিউজিল্যান্ডের একাদশ নির্বাচনে কেন উইলিয়ামসনের প্রভাব থাকে সবার বেশি। শুধু উইলিয়ামসন নন, টার্নার দায়ী করেছেন দলটির কোচ গ্যারি স্টেডকেও। টার্নার জানান, বিশেষ করে বাইরের দেশে সফরে গেলে উইলিয়ামসন ও স্টেড তাদের মনমতো দল নির্বাচন করেন। পছন্দের খেলোয়াড়দের সুযোগ দেন। দলের প্রধান নির্বাচকের সঙ্গে আলোচনার প্রয়োজন বোধ করেন না। আবার অনেক সময়, অহেতুক কারণে দল থেকে বাদ দেন গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়কে।

অস্ট্রেলিয়া সফরের আগে টেস্ট র‌্যাঙ্কিংয়ের দ্বিতীয়তে ছিল নিউজিল্যান্ড। অস্ট্রেলিয়ার ৩ ম্যাচের টেস্ট সিরিজে ধবলধোলাই হয় কিউইরা। মাঠের ক্রিকেটে কোন প্রকার প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারেনি উইলিয়ামসনের শিবির। ব্যাট হাতে নিষ্প্রভ ছিলেন উইলিয়ামসনও। ৪ ইনিংসে ৫৭ রান করেন এই কিউই অধিনায়ক। তৃতীয় ম্যাচে ইনজুরির জন্য খেলতে পারেননি। এ সিরিজ শেষে র‌্যাঙ্কিংয়ে তিনে নেমে গেছে নিউজিল্যান্ড। সিরিজ শেষে বোমা ফাটালেন গ্লেন টার্নার।

 

 

‘দল বাছাইয়ের ক্ষেত্রে একটা দ্বন্দ্ব দেখা যাচ্ছে। বিশেষ করে বিদেশ সফরে দলের কোচ এবং অধিনায়ক নিজের মতো করে একাদশ বাছাই করে। এটা গুরুত্বপূর্ণ একটা বিষয়। বিশেষ করে আমি যখন নির্বাচক ছিলাম। আমি বুঝতে পেরেছিলাম। তারা দল নির্বাচনের বিষয়টি নিজেদের শিবিরে নিয়ে যেতে চায়। সে মুহূর্ত নির্বাচকের আর কোনো ভূমিকা থাকে না।’- দল নির্বাচনে অধিনায়কের প্রভাব বুঝাতে এসব বলেন টার্নার।

দলে এই মুহূর্তে নির্বাচক হিসেবে কাজ করছেন সাবেক কিউই ক্রিকেটার গ্যাভিন লারসেন। কিন্তু দলের সঙ্গে ঘরের মাঠে মাউন্ট মঙ্গানুইয়ে টেস্ট ও অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে বক্সিং ডে টেস্টের সময় কথা বলেছেন লারসেন। এরপর থেকে সব উইলিয়ামসন ও স্টেডের ইচ্ছামতো হয়েছে বলে দাবি টার্নারের। সরাসরি কোনো খেলোয়াড়ের প্রতি ইঙ্গিত না করে টার্নার বলেন, ‘যখন আপনি পছন্দের সতীর্থকে খেলতে নামাবেন। আবার অন্য কাউকে ইচ্ছামতো বসিয়ে দিবেন। তখনই দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হয়। সাধারণত, নির্বাচকরা স্বাধীনভাবে কাজ করে। সবার প্রতি সমান নজর থাকে তাদের। তারা কিন্তু কোচ ও অধিনায়কের সঙ্গে আলোচনা করে। কিন্তু যখনই অধিনায়ক প্রভাব খাটানো শুরু করে তখন নির্বাচকের স্বাধীন ভাবে কাজে বাধা হয়।’

মনে করা হচ্ছে, বাজে ফর্মে থাকা সত্ত্বেও মিচেল স্যান্টনারকে খেলানো ও তৃতীয় টেস্ট থেকে টিম সাউদিকে বাদ দেয়ায় এমন কথা তুলতে পারেন গ্লেন টার্নার। নিউজিল্যান্ড ক্রিকেটের সবচেয়ে প্রতিভাবান ও বুদ্ধিদীপ্ত উইলয়ামসনের কথাবার্তা আচার-আচরণ কখনো বিতর্কের জন্ম দিতে পারেনি বিশ্ব মিডিয়ায়। অথচ নিজ দেশের সাবেক ক্রিকেটারই প্রশ্ন তুলছেন কেন উইলিয়ামসনের ভূমিকা নিয়ে। বিষয়টি এই কিউই অধিনায়ক কিভাবে সামলান সেটাই এখন দেখার বিষয়।



ঢাকা/কামরুল



from Risingbd Bangla News https://ift.tt/39Zq7QU