সখীপুরে ইউএনওকে বিবাদী করে মামলা সাবেক সাংসদ ও নবনির্বাচিত উপজেলা চেয়ারম্যান

সখীপুরে ইউএনওকে বিবাদী করে মামলা সাবেক সাংসদ ও নবনির্বাচিত উপজেলা চেয়ারম্যান

জুয়েল রানা, সখীপুর প্রতিনিধি: টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আমিনুর রহমানকে বিবাদী করে মামলা করেছেন টাঙ্গাইল-৮ (সখীপুর-বাসাইল) আসনের সাবেক সাংসদ অনুপম শাহজাহান জয়, সখীপুর উপজেলা পরিষদের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান জুলফিকার হায়দার কামাল ও চেয়ারম্যানের আপন ছোটভাই আবদুল আজিজ তালুকদার। উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ঘেঁষে একতলা ভবনে দুটি দোকানের মালিকানা দাবি করে তাঁরা তিনজন বাদী হয়ে এ মামলা করেন। টাঙ্গাইল তৃতীয় যুগ্ম জেলা জজ আদালতে গত ২৫ এপ্রিল মামলা হলেও গতকাল সোমবার বিকেলে বিবাদীর কাছে মামলার নোটিশ আসে। আদালত আগামী ১০ জুনের মধ্যে বিবাদী ইউএনও আমিনুর রহমানকে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা উপস্থাপন করার জন্য নির্দেশ দেন।

মামলা সূত্রে জানা যায়, সখীপুর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ঘেঁষে উত্তর পাশে এক শতাংশ জমির ওপর এক তলা ভবন করে দুটি দোকান প্রায় ১০ বছর ধরে ভাড়া দিয়েছেন সাবেক সাংসদ অনুপম শাহজাহান ও তাঁর দুই চাচা। দুই ভাড়াটিয়া জুলহাস উদ্দিন ও আমিনুল ইসলাম সময়মতো তাঁদের ভাড়াও পরিশোধ করছেন। হঠাৎ করে গত ২১ এপ্রিল সখীপুরের ইউএনও আমিনুর রহমান মুক্তিযোদ্ধা সংসদের বর্তমান প্রশাসক হিসেবে  ওই দুটি দোকান মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সের দাবি করে ওই দুই ভাড়াটেকে এক বছরের ভাড়া পরিশোধের জন্য নোটিশ দেয়। এর প্রেক্ষিতেই  এক শতাংশ জমির মালিকানা দাবি করে ওই মামলাটি করা হয়।
সখীপুর উপজেলা পরিষদের আওয়ামী লীগ মনোনীত নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান ও মামলার দুই নম্বর বাদী জুলফিকার হায়দার কামাল বলেন, মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ঘেঁষে আমাদের তিন শতাংশ জমি রয়েছে। কমপ্লেক্স ঘেঁষে এক শতাংশ জমির ওপর ১০ বছর আগে একতলা ভবন করে দুটি দোকান ভাড়া দেওয়া হয়েছে। হঠাৎ করে ইউএনও সাহেব ওই দুটি দোকান মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সের দাবি করে আমাদের ভাড়াটেদের কাছে এক বছরের ভাড়া চেয়ে নোটিশ দেয়। আমরা ওই জমির মালিকানা দাবি করে মামলা করেছি।

সাবেক সাংসদ অনুপম শাহজাহান বলেন, আমার বাবা শওকত মোমেন শাহজাহান মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ছিলেন। চারবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। আমার বাবাই ওই মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সের চারতলা ভবনটি করে দিয়েছেন। কমপ্লেক্স ঘেঁষে আমার দাদা মুখতার আলী তালুকদারের জমি রয়েছে। ইউএনও সাহেব এসব ইতিহাস না জেনে আমাদের দুই ভাড়াটেকে ভাড়া চেয়ে নোটিশ দেওয়া উচিত হয়নি।

দোকানের ভাড়াটে জুলহাস উদ্দিন বলেন, আমরা ১০ বছর আগে ওই দোকান সাবেক সাংসদের পরিবারের কাছ থেকে জামানত দিয়ে ভাড়ায় নিয়েছি। ১০ বছর ধরে মুক্তিযোদ্ধাদের নয়, সাবেক সাংসদের পরিবারের কাছেই ভাড়া পরিশোধ করে আসছি। এখন এক বছরের ভাড়া চেয়ে নোটিশ আসায় আমরা বিপাকে পড়েছি।

সখীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও মুক্তিযোদ্ধা সংসদের বর্তমান প্রশাসক আমিনুর রহমান বলেন, ওই দুটি দোকান ও জমি মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের। ফলে ওই দুটি দোকানের এক বছরের ভাড়া চেয়ে দুই ভাড়াটের কাছে চিঠি দেওয়া হয়েছে। মামলার বিবাদী করার সত্যতা স্বীকার করে  বলেন, আইনি ভাবেই এ মামলার মোকাবেলা করা হবে।