ইউপি নির্বাচন! টাঙ্গাইলে বেড়েছে নৌকার কদর

ইউপি নির্বাচন! টাঙ্গাইলে বেড়েছে নৌকার কদর

বিভাস কৃষ্ণ চৌধুরী :  আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে জেলার একমাত্র উপজেলা নাগরপুরের ১২টি ইউনিয়ন পরিষদে নির্বাচন হওয়ার কথা থাকলেও পুরো জেলাতেই বইছে নির্বাচনী হাওয়া। সম্ভাব্য প্রার্থীরা ব্যস্ত রয়েছে দলীয় মনোনয়নের পিছনে। উভয় দলের নিস্ক্রিয় নেতা কর্মীরাও দলীয় কার্যক্রমে সক্রিয় হয়েছেন। ইতিমধ্যে প্রচার প্রচারণায় নেমেছে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের সম্ভাব্য প্রার্থীরা। জেলার সবকটি উপজেলার অধিকাংশ ইউনিয়নগুলোতেই একই চিত্র লক্ষ করা যায়। গত পৌর নির্বাচনে অধিকাংশ আসনে আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী নির্বাচিত হওয়ায় বেশিরভাগ ইউনিয়ন পরিষদে প্রচার প্রচারণায় আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীদের আগ্রহ বেশি দেখা যাচ্ছে। ফলে জেলার রাজনৈতিক অঙ্গনে নৌকার কদর অনেকটাই বেড়েছে। পৌর নির্বাচনের ফলাফল থেকে আওয়ামী প্রন্থী প্রার্থীরা ধারণা করছে নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করলে জয়ের ব্যাপারে অনেকটাই নিশ্চিত । লক্ষ্য একটাই আওয়ামীলীগের মনোনয়ন পেয়ে নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করতে হবে। ফেসটুন ব্যানারের মাধ্যমের প্রচারণা করেই বসে নেই প্রার্থীরা। চলছে জোড় লবিং। দলের তৃণমূল পর্যায়ে বাড়ছে গ্র“পিং। অধিকাংশ ইউনিয়ন পরিষদে আওয়মীলীগ থেকে হাফ-ডজন করে নেতাকর্মী প্রচারণা করছে। ইউপি সদস্য ও মহিলা সংরক্ষিত আসনের প্রার্থীরা দলীয় পরিচয়েই প্রচারণা করছে। সম্ভাব্য প্রার্থীরা এবার ভোটারদের চেয়ে বেশি দ্বারস্থ হচ্ছেন কেন্দ্রীয়, জেলা ও স্থানীয় সংসদ সদস্যের দরজায়।

জেলার নাগরপুর উপজেলার সবকটি ইউনিয়নেই নির্বাচন হচ্ছে প্রথম ধাপে ২২ মার্র্চ। সোমবার মনোনয়ন পত্র জমা দেয়ার শেষ দিনে লক্ষ্য করা যাচ্ছে, নাগরপুরের সদর ইউনিয়ন ছাড়া অধিকাংশ ইউনিয়নে পরিষদেই একাধিক আওয়ামীলীগের প্রার্থীরা মনোনয়ন পত্র জমা দিচ্ছে। সকাল ১১টা পযন্ত দেখা গেছে, উপজেলার বাকড়া ইউনিয়ন পরিষদে নৌকা প্রতীক পেয়েছেন মো. শওকত হোসেন, বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে মনোনয়ন পত্র জমা দিয়েছেন বর্তমান চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান খান কেসলু, মোল­া মনিরুজ্জামান মিঠু ও চিত্তরঞ্জন। এদিকে গয়েহাটা ইউনিয়নে নৌকা প্রতিক পেয়েছেন,শেখ শামসুল হক, একই দলে বিদ্রোহী প্রার্থী রয়েছেন বর্তমান চেয়ারম্যান মো. আশরাফ হোসেন । অন্যান্য ইউনিয়ন পরিষদেও আওয়ামীলীগের একই চিত্র। তবে একাধিক প্রার্থীর ঝামেলা থেকে অনেকটাই মুক্ত আছে বিএনপি প্রার্থীরা।

মনোনয়ন পাওয়ার পূর্বেই নৌকা ধানের শীষ প্রতীক ব্যবহার করে প্রচারণা করছে প্রার্থীরা। কোথাও কোথাও শুরু হয়েছে প্রার্থীদের গণসংযোগ বা মিছিল সমাবেশ। গত পৌরসভা নির্বাচনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থীরা আশানুরুপ পৌরসভায় মেয়র পদে জয়ি হতে না পারায় অনেকটাই আশা হারিয়ে ফেলেছে বিএনপি মনা প্রার্থীরা। ফলে প্রচার প্রচারণা থেকে শুরু করে লবিংয়েও এদের অনাগ্রহ লক্ষ করা যাচ্ছে।

আওয়ামীলীগ থেকে ইউপি নির্বাচনে মনোনয় প্রত্যাশীরা জানান, আওয়ামীলীগ সরকারের উন্নয়ন মূলক কাজে সাধারণ মানুষ খুশি। এজন্য গত পৌর নির্বাচনে অধিকাংশ আসন আওয়ামীলীগ প্রার্থী জয় লাব করেছে। আগামী ইউপি নির্বাচনেও আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থীদের মানুষ ভোট দেবে। এই আত্ম বিশ্বাসেই প্রার্থীরা মাঠে কাজ করছে।

বিএনপি মনা একাধিক মনোনয়ন প্রত্যাশী জানান, নির্বাচন করেই লাভ কি । বর্তমানে অবাদ নিরোপেক্ষ নির্বাচন হয় না। কারচুপির মাধ্যমে প্রার্থীদের জয়ি করানো হয়। তারপরও দলের স্বার্থে নির্বাচনে অংশ নিতে হয়।

এদিকে বসে নেই স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। প্রতীক ও দলীয় নেতাদের ছবি বিহীন ফেসটুন চোখে পড়ছে অহরহ। নিজের ব্যক্তিত্ব পুজি করেই নির্বাচনে অংশ নিতে চায় এসব প্রার্থীরা। খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে এসকল স্বতন্ত্র প্রার্থীরা অনেকে আওয়ামীলীগ বা বিএনপির ছাত্র নেতা ছিলেন। রাজনীতিতে সক্রিয় না থাকায় এরা সতস্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিতে চাচ্ছে।

জেলা আওয়ামীলীগের একাধিক সূত্রে জান যায়, ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দলীয় বিদ্রোহী প্রার্থী থাকলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে আওয়ামীলীগ।

জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কৃষিবিদ শামসুল আলম তোফা জানান, ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থীর বিষয়ে সচেতন রয়েছে বিএনপি। তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের মতানুসারে প্রার্থী নির্বাচন করা হচ্ছে। সেক্ষেত্রে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দলের বিদ্রোহী প্রার্থী থাকার কথা না।