চকরিয়া-পেকুয়ার ৭০ হাজার একর জমিতে বোরো চাষে শংকা

চকরিয়া-পেকুয়ার ৭০ হাজার একর জমিতে বোরো চাষে শংকা

স্টাফ রিপোর্টার :  জেলার চকরিয়া ও পেকুয়া উপজেলার ৭০ হাজার একর জমিতে শুষ্ক মৌসুমে বোরোসহ সবজি চাষ নিশ্চিত করতে সেচ সুবিধার্থে নির্মিত চারটি রাবার ড্যাম এখন জনদূর্ভোগের কারণ হয়ে উঠেছে। পাউবোর অবহেলা ও ঠিকাদারের দুর্নীতির কারণে ড্যামের রাবার বারবার খুলে যাওয়াসহ ছিদ্র হওয়ায় মিঠা পানি ধরে রাখতে সমস্যা এবং জোয়ারের সময় লবণাক্ত পানি ঢোকায় এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।

১৯৭৩ সালে বঙ্গবন্ধু সরকারের গৃহিত সবুজ বিপ্লবের আওতায় মাটি দিয়ে অস্থায়ী ক্রসবাঁধ নির্মাণের মাধ্যমে চকরিয়ায় শুষ্ক মৌসুমে চাষাবাদ শুরু হয়। পর্যায়ক্রমে এই উপজেলা খাদ্য উৎপাদনে উদ্বৃত্ত এলাকার তালিকাভুক্ত হয়। পরে বিএনপি সরকারের আমলে পেকুয়ার ভোলা খাল ও পঁচাকুরুলিয়ায় দুটি রাবার ড্যাম তৈরী করা হয়। কিন্তু মাতামুহুরী নদীতে ড্যাম তৈরী না করায় পেকুয়ার দুটি রাবার ড্যাম ব্যবহার করা সম্ভব হয়নি।

বর্তমান সরকারের আমলে মাতামুহুরীর নদীর চকরিয়া অংশে বাঘগুজারা ও পালাকাটায় আলাদা দুটি রাবার ড্যাম নির্মাণ করা হলে চারটি ড্যামে মিঠা পানি ধরে রাখা সম্ভব হয়। শুরু হয় শুষ্ক মৌসুমে বোরো চাষ। কৃষিখাতে ঘটে নতুন বিপ্লব।

পেকুয়ার চাষী দেলোয়ার হোসেন (৩৪) সহ অনেকে অভিযোগ করেন, পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষের দুরদর্শিতার অভাব এবং ঠিকাদারের দুর্নীতির কারণে দু’বছর না পেরোতেই বাঘগুজারা রাবার ড্যামের জোড়া লাগানো রাবার খুলতে শুরু করে। একই অবস্থা দেখা দেয় পালাকাটা ড্যামেও। ভোলা খালের ড্যামে পক্ষকাল আগে রাবারের ছিদ্র হয়। এসব কারণে একদিকে উজান থেকে নেমে আসা মিঠা পানি ধরে রাখা কঠিন হয়ে পড়ে। অপরদিকে সামুদ্রিক জোয়ারের সময় লবণাক্ত পানি ঢুকে পেকুয়ার ভোলা খালে।

জোড়াতালি দিয়ে কোনো রকমে কাজ চালানো হচ্ছে পালাকাটা ও বাঘগুজারা রাবার ড্যামের। কিন্তু ভোলা খালে নির্মিত ড্যামের রাবারে সৃষ্টি হওয়া ছিদ্র মেরামত না হওয়ায় লবণাক্ত পানি প্রবেশ অব্যাহত রয়েছে।

পেকুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মারুফুর রশিদ খান জানিয়েছেন, ঘটনাটি শুনে রাবার ড্যাম এলাকা পরিদর্শন করেছি। এরপর উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে রাবার ড্যাম মেরামতের অনুরোধ জানিয়েছি।

এদিকে, মাতামুহুরী নদীর পালাকাটা ও বাঘগুজারার রাবার ড্যাম দুটির জোড়া টেকসইভাবে লাগানো না হলে প্রতিবছরই শুষ্ক মৌসুমে লাখো কৃষক পরিবার চাষাবাদ নিয়ে শংকায় থাকবে বলে স্থানীয়রা।

পানি উন্নয়ন বোর্ড কক্সবাজারের নির্বাহী প্রকৌশলী মো.সবিবুর রহমান বলেন, ড্যাম নিয়ে আমাদের পক্ষ থেকে কোনো অযত্ন-অবহেলা হয়নি। ভোলাখালের ড্যামের রাবারে ছিদ্র হওয়ার ঘটনাটি কেউ অবহিত করেনি। সঠিক হয়ে থাকলে তড়িৎ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।