নাবালক দুই সন্তানের অসহায় এক বাবা বাঁচতে চায়!

নাবালক দুই সন্তানের অসহায় এক বাবা বাঁচতে চায়!

মোহাম্মদ হেলালুজ্জামান, টাঙ্গাইলদর্পন.কম : 
                    
 
এক সময় গান গাইতো, গিটার বাজাতো। মাতিয়ে রাখতো স্থানীয় শ্রোতাদের। ৮/৯ মাস আগেও সুস্থ ছিল, প্রাণচঞ্চল প্রাণবন্ত মারুফ হাসান মিন্টু নামের এই যুবক। কিন্তু এরই মধ্যে পাল্টে গেছে তার জীবন চিত্র। যন্ত্রণার শুরুটা হলো মাথা ব্যথার মাধ্যমে। চিকিৎসক জানিয়েছে তার মাথায় ছোট একটি টিউমার আছে কিন্তু ব্রেন টিউমার নয়। নার্ভে প্রভাব পড়েছে, যার দরুন এরই মধ্যে বাম চোখ সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে গেছে। 

                                  

বলছিলাম টাঙ্গাইলের দেলদুয়ার উপজেলার ফাজিলহাটি ইউনিয়নের এলাচিপুর উত্তরপাড়া নামক গ্রামের বৃদ্ধ কৃষক আব্দুর রহমানের ছেলে মারুফ হাসান মিন্টুর কথা! অনেক ধার-দেনা করে সুন্দর স্বপ্ন নিয়ে বিদেশ গিয়েছিলো মিন্টু কিন্তু একটা রোগ তার সব স্বপ্ন ধূলিসাৎ করে দিয়েছে! গ্রামের সহজ সরল মানুষ! নাবালক দুই সন্তানের এই বাবা, সন্তানদের ছায়া হয়ে সকলের মাঝে বাঁচতে চায়! সমাজের সামর্থবান মানুষরা কি তাকে বাঁচাতে এগিয়ে আসতে পারিনা! মানুষ মানুষের জন্য! তার ব্রেনে একটি ছোট টিউমার হয়েছে, যার প্রভাবে এখন একটি চোখ নষ্ট হয়ে গেছে! রোগের প্রভাব আরেকটি চোখের জন্য হুমকি! 

যেকোনো সময় অপর চোখটিও নষ্ট হয়ে যেতে পারে! ৯ বছরের ছেলে নাঈম হাসান, সে ক্লাস ত্রিতে পড়ে ও মেয়ে জান্নাত আক্তারের বয়স দেড় বছর। বাবা একজন বৃদ্ধ ও গরিব কৃষক। বয়সের ভারে চলা-ফেরা কঠিন। আজ ছেলের এই দুর্দিনে তার কিছু করার ক্ষমতা নাই। বাবা মায়ের সন্তানের মধ্যে সবার ছোট, মারুফ হাসান মিন্টু। জমিজমা তেমন কিছু নাই। একমাত্র সম্বল বাড়িটিও আজ নদীর ভাঙ্গনের মুখে। যেকোনো সময় বিলীন হয়ে যেতে পারে নদীর গর্ভে, এযেন এক অনিশ্চিত জীবনে হেটে চলা। 

মারুফ হাসান মিন্টু সংসারের অভাব দূর করণের জন্য গত বছর জুন মাসে ধার-দেনা করে বিদেশে যায়। ইচ্ছে ছিল নাঈম ও জান্নাতের জন্য সুন্দর ভবিষৎ রচনা করার। কিন্তু ভাগ্য তার বিপরীত। প্রায় তিন মাস ভালোই কাটছিলো তার মালেশিয়ায় প্রবাসের জীবন। হঠাৎ একদিন শুরু হলো তার প্রচন্ড মাথা ব্যথা। চোখে যেন কিছুই দেখতে পারতেছিল না। শরণাপন্ন হলো ডাক্তারের। প্রায় একমাস চিকিৎসারত অবস্থায় ছিল হাসপাতালের বিছানায়। কোম্পানির কর্তৃপক্ষ তাকে জানালো তার চিকিৎসা এখানে করলে অনেক খরচ হবে, তার চেয়ে বাংলাদেশে গিয়ে চিকিৎসা করালে খরচ অনেক কম হবে। 

দেশে গিয়ে চিকিৎসা নিয়ে রোগ ভালো হলে, তাদের কর্তৃপক্ষকে জানালে আবার তাকে ওই কোম্পানিতে নিয়ে নিবে। তখন সে সিদ্ধান্ত নেয়, দেশে ফিরে আসবে আর চিকিৎসা নিয়ে ভালো হয়ে আবার মালেশিয়াতে যাবে। দেশে ফিরে প্রথমে ঢাকাতে জাতীয় চক্ষু হাসপাতালে যায়। তারা তাকে পাঠায় জাতীয় নিউরোসায়েন্স হাসপাতালে। ডাক্তার তাকে জানিয়ে দিয়েছে তার মাথায় একটি ছোট টিউমার হয়েছে যার প্রভাবে ইতিমধ্যে বাম চোখ সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে গেছে। শরীরের সমস্যা দিন দিন বেড়েই চলছে। 

এদিকে তার হাতে কোনো টাকা নাই, চিকিৎসা নেওয়ার জন্য। পূর্বের ধারের টাকাতো রয়েই গেছে। ধার-দেনা ও সমাজের এবং প্রবাসের কিছু বন্ধুদের কাছে থেকে সাহায্য নিয়ে এতদিন চিকিৎসা চালিয়ে গেছে। সম্প্রতি পরিবার-পরিকল্পনা পরিদর্শক মোশারফ বাপ্পি ও দেলদুয়ার উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা অফিসার নুসরাত রশীদের সহযোগিতায় পাঁচ হাজার টাকা দেয়া হয়েছে মিন্টুকে। টাঙ্গাইল জেলা পরিষদেও আর্থিক সাহায্য চেয়ে একটি আবেদন করেছেন মিন্টু। 

এক বছর ধরে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে অনেকটাই হাপিয়ে উঠেছে মিন্টু। মিন্টুর আকুতিতে সমাজের কোন বিত্তবান তার পাশে দাঁড়ালে সে হয়ত ফিরে পাবে আবার নতুন এক স্বাভাবিক জীবন। সমাজের বিত্তবানরা সহযোগিতা করলে তার ব্রেনের পাশের টিউমারের অপারেশনটা করতে পারবে। ডাক্তার তাকে জানিয়ে দিয়েছে তার বাম চোখ সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে গেছে, যা ভালো হওয়ার কোন সম্ভবনা নাই। এইমুহূর্তে উন্নত চিকিৎসা না করালে ডান চোখটিও নষ্ট হয়ে যাবে। এখন সে মাথায় প্রচন্ড ব্যথা অনুভব করে। মাথা ঠিক রাখতে পারেনা। মাঝে মাঝে পুরো শরীর ব্যথা ও ফুলে যায়। 

অভাব-অনটন আর ব্যাধির সাথে তার বসবাস। নিত্য তাকে অনিশ্চয়তা তাড়িয়ে বেড়ায়। সে জানায়-আপনাদের সবার সহযোগিতায় মহান আল্লাহ আবার তাকে তার নাবালক সন্তানদের জন্য ছায়া হিসেবে রেখে যেতে পারেন! তার বিশ্বাস সকলের সহায়তায় আবার সে সুস্থ হবে, বেঁচে থাকবে তার সন্তানদের জন্য, সমাজের সকলের মাঝে। এ অবস্থায় অসুস্থ মারুফ হাসান মিন্টু অভাবের সংসার, স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে দিশেহারা হয়েছে পড়েছেন। 

তিনি বাঁচতে চান! হৃদয়বান মানুষগুলোর কাছে সহায়তা কামনা করেছেন। সমাজের সহৃদয়বান ও সামর্থ্যবান ব্যক্তিগণ তার সাথে সরাসরি যোগাযোগ করতে পারেন এই নম্বরে-০১৭৯৭০০৪৭৯৫ এবং সহযোগিতার হাত বাড়াতে চাইলে বিকাশ নম্বর- ০১৭২৩৮১২৬৭৯(পার্সোনাল)