নড়াইলে আ.লীগের কেন্দ্র দখল, বিএনপির ভোট বর্জন

নড়াইলে আ.লীগের কেন্দ্র দখল, বিএনপির ভোট বর্জন

বিশেষ প্রতিবদেক : নড়াইলের কালিয়া পৌরসভায় কেন্দ্র দখল করে নৌকায় ভোট, ধাওয়া-পাল্টা হামলাসহ বিচ্ছিন্ন ঘটনার মধ্য দিয়ে ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। কেন্দ্র দখল করে নৌকা প্রতীকের সমর্থকরা ভোট কাটার অভিযোগে একটি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ স্থগিত করা হয়েছে।

অনিয়ম ও কারচুপির অভিযোগ এনে বিএনপির প্রার্থী এস এম ওয়াহিদুজ্জামান মিলু ভোট বর্জন করেছে। নির্বাচনী পরিবেশ নষ্ট করার অপরাধে ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক নড়াইল এবং কালিয়ায় ৮ জনকে ছয় মাসের সাজা দিয়েছেন।

ভোট দিতে আসা প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকাল সাড়ে আটটায় নৌকা প্রতীকের সমর্থকরা পূর্ব কালিয়া সরকারি মডেল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভোট কেন্দ্র দখল করে নেয়। তারা কেন্দ্রের ছয়টি বুথে প্রবেশ করে দরজা দিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থীর এজেন্টদের বের করে দিয়ে ভোট কাটা শুরু করে।

পুলিশ-বিজিবিসহ প্রশাসনিক কর্মকর্তারা নীরবে দাঁড়িয়ে তা প্রত্যক্ষ করেন বলে জানা গেছে। খবর পেয়ে গণমাধ্যম কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছালে পুলিশ ও কর্মকর্তাদের তৎপরতা বেড়ে যায়।

পরে রিটার্নিং কর্মকর্তা শেখ আনোয়ার হোসেন, ও জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট,মো. হারুন অর রশিদ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে ভোটগ্রহণ বন্ধ করে দেন। ভোট কাটার সময় নৌকা প্রতীকের পোলিং এজেন্ট মোতাস্সেফ বিল্লাহকে (২৫) ছয় মাসের জেল দেন সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট হারুন অর রশিদ। এছাড়া মির্জাপুর কেন্দ্র থেকে নৌকার সমর্থক জান্নাত হোসেনকে ছয় মাসের জেল দেন ভ্র্যাম্যমাণ আদালত।

সকাল ১০টার দিকে কালিয়া পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে দুই কাউন্সিলর প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে হামলা-পাল্টা হামলার ঘটনা ঘটে। এসময় কাউন্সিলর প্রার্থী ফসিয়ার রহমানসহ দুপক্ষের ৪/৫ জন কর্মী আহত হন। ভোট গ্রহণ সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়। আড়াই ঘণ্টা পর দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে পুনরায় ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়াও বিভিন্ন কেন্দ্র কিছু কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনার মধ্য দিয়ে ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। এদিকে অনিয়ম ও ভোট কাটার অভিযোগ এনে বিএনপি প্রার্থী এসএম ওয়াহিদুজ্জামান মিলু ভোট বর্জন করেন।

নড়াইল পৌরসভায় বরাশুলা, ডুমুরতলা, উজিরপুর ও বিজয়পুর কেন্দ্রে অনিয়ম ও কারচুপির অভিযোগ পাওয়া গেছে।
নড়াইল সরকারি মহিলা কলেজে অনিয়মের অভিযোগে দু’জন এবং টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজে চারজনকে ছয় মাস করে সাজা দিয়েছেন সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. জাকারীয়া।

ভোট কারচুপির অভিযোগে নড়াইলের দুই স্বতন্ত্র প্রার্থী ও জাসদ ও জাতীয় পার্টির প্রার্থী ভোট বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন। বুধবার দুপুরে আওয়ামী লীগ থেকে সদ্য বহিষ্কৃত দুই স্বতন্ত্র প্রাথী মো. সোহরাব হোসেন বিশ্বাস, সর্দার আলমগীর হোসেন আলম, জাতীয়পার্টির অ্যাডভোকেট খন্দকার ফায়েকুজ্জামান এবং জাসদের সৈয়দ আরিফুল ইসলাম পান্থ এ ঘোষণা দেন।

তারা অভিযোগ করেন, নৌকা প্রতীকের সমর্থকরা বিভিন্ন ভোট কেন্দ্রে প্রবেশ করে ভোট কারচুপি করছে। কালিয়ায় আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী ওয়াহিদুজ্জামান হীরা বুধবার বিকেলে নড়াইল প্রেসক্লাবে এসে সাংবাদিকদের কাছে ভোট বর্জনের কথা জানান।

তিনি দাবি করেন, নড়াইল-১ আসনের সাংসদ কবিরুল হক মুক্তির লোকজন তার ভোটারদের কেন্দ্রে আসতে বাধা প্রদানসহ ভোট কাটার অভিযোগ করেন।