২৫ কি:মি: রাস্তা চলাচলের অনুপযোগী, প্রতিদিনই ঘটছে দূর্ঘটনা

২৫ কি:মি: রাস্তা চলাচলের অনুপযোগী, প্রতিদিনই ঘটছে দূর্ঘটনা

টাঙ্গাইলদর্পণডটকম : শরীয়তপুর-চাঁদপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের ৪০ কিলোমিটার এলাকার প্রায় ২৫ কিলোমিটারই খানাখন্ডের সৃষ্টি হয়ে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পরেছে। প্রতিদিনই সড়কের কোথাও না কোথাও ঘটছে দূর্ঘটনা। খাল-পুকুর- ডোবায় পরে যাচ্ছে পন্য বাহী ট্রাক। রাস্তায় সৃষ্টি হচ্ছে দীর্ঘ যানজটের।

ভোগান্তি হচ্ছে সকল শ্রেনি পেশার মানুষের। কোন উপকারেই আসছেনা, এমনভাবে সামান্য ইট-সুরকি দিয়ে চলচে লোক দেখানো জরুরী মেরামতের কাজ। এলাকার মানুষ ও পরিবহনের লোকেরা জরুরী ভিত্তিতে সড়কটি মেরামতের দাবি জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টদের কাছে। মাত্র দেড় বছর আগে সড়কের জেলা সদরের আংগারিয়া বাজার থেকে ভেদরগঞ্জের আলু বাজার ফেরী ঘাট পর্যন্ত প্রায় ৩৪ কিলোমিটার দীর্ঘ সড়কের সংস্কার করা হয়েছিল ২১ কোটিরও বেশি টাকা ব্যয়। ওই সময় খুলনা শহরের মেসার্স শফিক এন্টারপ্রাইজ নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নিন্ম মানের নির্মান সামগ্রী দিয়ে সড়কের উন্নয়ন কাজ করায় মাত্র ৬ মাস পার না হতেই রাস্তার বিভিন্ন পয়েন্টে সৃষ্টি হতে থাকে গর্ত ও খানাখন্ড।

৩৮ কিলোমিটার সড়কের প্রায় ২০ কিলোমিটারই চলাচলের অযোগ্য হয়ে গেছে। কিছু দুর পর পর রাস্তার পিচ সুরকি নষ্ট হয়ে যাওয়ার প্রায়ই ঘটতে থাকে ছোট বড় দূর্ঘটনা। রাস্তার মাঝখানে, পাশের খাল-পুকুর- ডোবায় প্রায় প্রতিদিনই দেবে যাচ্ছে যাত্রী ও পন্যবাহী বাস-ট্রাক। ফলে মাইলের পর মাইল যানজট সৃষ্টি হয়ে ৬ থেকে ৩৬ ঘন্টা পযর্ন্ত সময় বেশী ব্যয় হচ্ছে গন্তব্যে পৌছতে। এতে ভোগান্তিতে পরছে গণপরিবহনের যাত্রীসহ ব্যবসায়ীরা। গত মে মাসের পর থেকে অবিরাম বর্ষনের কারনে রাস্তা চলাচলের জন্য আরো অধিক অনপুযোগী হয়ে পরেছে।

সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, শরীয়তপুর-চাঁদপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের শরীযতপুর পৌরসভার আংগারিয়া বাজার থেকে বুড়িরহাট হয়ে ভেদরগঞ্জ উপজেলার বিস্তীর্ন বিরাট এলাকা নিয়ে সড়কের বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক খানা খন্ডের সৃষ্টি হয়েছে। ভেদরগঞ্জ বাসস্টান্ড থেকে শুরু করে নারায়নপুর পর্যন্ত রাস্তার দুই পাশ দেবে এবং রাস্তার পিচ সুরকি ওঠে অসংখ্য ছোট বড় গর্তেও সৃষ্টি হয়ে যানবাহন চলাচলের অনুপুযোগি হয়ে পরেছে।

আরো যানা যায়, অচল রাস্তা ইট সুরকি দিয়ে জরুরী মেরামতের নামে এক শ্রেনীর অসাধু লোকের হাতে লক্ষ লক্ষ তুলে দিচ্ছে সড়ক বিভাগ।

শরীয়তপুর সড়ক ও জনপদ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, রাজধানী ঢাকা শহর থেকে পন্যবাহী ও গণপরিবহনের চাপ কমানোর জন্য চট্রগ্রাম থেকে মংলা, সিলেট থেকে বেনাপোল এবং চট্রগ্রাম ও সিরেট বিভাগ থেকে বরিশাল ও খুলনা বিভাগের সাথে সহজে যাতাযাত করার জন্য ২০০১ সালে শরীয়তপুর-চাঁদপুর ফেররি সার্ভিসের মাধ্যমে শরীয়তপুর জেলার ওপর দিযে শরীয়তপুর চাঁদপুর আঞ্চলিক মহাসড়ক নামে এ সড়ক চালু করা হয়। সড়কটি চালু হওয়ার এসব জেলাগুলোতে সড়ক পথে এক অঞ্চল থেকে অপর অঞ্চলের সাথে যাতায়াত করতে স্থানভেদে দুরুত্ব হ্রাস পেয়েছে ১শত ৫০ থেকে ২শ‘ ২০ কিলোমিটার পর্যন্ত। ২০০২ সালের পর থেকে এই সড়কটিতে দীর্ঘদিন সংস্কার কাজ হয়নি। বর্তমান সরকার ২০০৯ সালে পূনরায় ক্ষমতালাভের পর পর্যায়ক্রমে জেলার অন্যান্য সড়কের মত এই সড়কটিরও উন্নয়ন করানো হয় ২০১৩-১৪ অর্থ বছরে।

ভেদরগঞ্জ ইকরকান্দি এলাকার শহিদুল ইসলাম, হাসেম ফকির, সালাউদ্দিন মাদবর জানান, মাত্র ১ বছর আগে রাস্তার সংস্কার করা হয়। দুই নম্বর মানের কাজ করার ফলে ৮ মাস না যেতেই রাস্তার পিচ ইটে খোয়া উঠে গেছে। প্রতিনিয়ত ঘটছে দূর্ঘটনা । প্রতিদিনই রাস্তা ভেঙ্গে এলাকায় গাড়ি দেবে যায়। হাজার হাজার মানুষকে হয়রানি হতে হচ্ছে। রাস্তার দুই দিকেই শত শত গাড়ি জরো হয়ে যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। আমরা এলাকা বাসী সরকারের কাছে শরীয়তপুর-চাঁদপুর আঞ্চলিক মহাসড়কটি অতি দ্রুত মেরামত দাবী জানাই।

চালক পাবেল বয়াতী বলেন, আমি কলা নিয়ে জেমে পরে আছি। ১৪ ঘন্টা পার হয়ে গেছে আমরা এখান থেকে ছারা পাওয়ার কোন লক্ষন দেখছিনা। গারির কলাগুলো নষ্ঠ হওয়ার উপযোগী হয়ে পরেছে।

ট্রাক চালক হাফিজুল বলেন, আমার বাড়ি মাদারীপুর আমি মাল নিয়ে ইন্ডিয়া থেকে এসেছি। মাঝে মাঝে এই রাস্তা দিয়ে আমি মাল নিয়ে আসি। যেই বড় বড় ভাঙ্গা অনেক সময় ১ থেকে ২দিন জেমে পরে থাকতে হয়। এই রাস্তাটি অতি দ্রুত মেরামত করা উচিত।

তারা আরো বলেন, দেশে সরকার থাকতে এমন একটি গুরুপ্তপূর্ন সড়কের এত খারাপ অবস্থা বছরের পর বছর থাকতে পারে না।

শরীয়তপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মিন্টু রঞ্জন দেবনাথ বলেন, অতি বর্ষনের কারণে শরীয়তপুর-চাঁদপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে গর্ত হয়ে রাস্তা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্থ সড়কের পূন-নির্মানের জন্য বরাদ্দ চেয়ে মন্ত্রনালয় আবেদন করা হয়েছে।