মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর ৫৮.৫ মেট্রিক টন পারদ আমদানি

মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর ৫৮.৫ মেট্রিক টন পারদ আমদানি

জাতীয় ডেক্স : ২০১৪ সালে দেশে মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর ৫৮ হাজার ৫০০ কেজি পারদ আমদানি করা হয়েছে। বিপুল পরিমাণ এ পারদ শিল্প, স্বাস্থ্য, জ্বালানি, ইলেক্ট্রনিক যন্ত্রপাতি, প্রসাধনী, খেলনা, গয়নাসহ বিভিন্ন খাতে ব্যবহৃত হচ্ছে।

রোববার (১৬ আগস্ট) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে এক কর্মশালায় এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (এসডো) এ তথ্য জানায়।

জাতিসংঘের পরিবেশ প্রকল্পের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে ‘রিডাকশন অব ডিমান্ড ফর মার্কারি, ইন কনটেইনিং প্রোডাক্টস ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক কর্মশালায় এক প্রতিবেদন তুলে ধরে সংগঠনটি।

পারদ আমদানি, ব্যবহার ও এর ক্ষতিকর প্রভাব নিয়ে এসডো’র জরিপে জানানো হয়, সারা দেশে ৮ লাখ ৮৭ হাজার ৪৭২টি থার্মোমিটার ব্যবহার করা হয়, এর মধ্যে প্রতি বছর ৩৭ শতাংশ ব্যবহারের ফলে ভেঙে যায়। একই ভাবে ৩ লাখ ৫ হাজার ৯২৬টি সিগমোম্যানোমিটার ব্যবহার হয়, এটি ব্যবহারের কারণে ১০ শতাংশ ভেঙ্গে যায়।

একটি স্ট্যান্ডার্ড থার্মোমিটারে ০ দশমিক ৫ থেকে ২ গ্রাম পারদ ও একটি সিগমোম্যানোমিটারে ৮০ থেকে ১৬০ গ্রাম পর্যন্ত পারদ রয়েছে বলে প্রতিবেদনে জানানো হয়।

থার্মোমিটার ভাঙ্গার কারণে প্রতি বছর ০ দশমিক ৬৯ টন পারদ ও সিগমোম্যানোমিটার ভাঙ্গার কারণে ৩ দশমিক ৩ টন পারদ পরিবেশ ও বায়ুমণ্ডলে মুক্ত হয়। এছাড়া দেশের ডেন্টাল খাতের ডেন্টাল আমালগাম থেকে প্রতি বছর ১ দশমিক ০৯ থেকে ৬ দশমিক ২২ মেট্রিক টন পারদ বাষ্প তৈরি হচ্ছে বলে প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, ডেন্টাল আমালগাম, প্রসাধনী সামগ্রী, থার্মোমিটার, শিশুদের খেলনা, খাদ্যে পারদ ব্যবহার বন্ধে দ্রুততার সাথে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন।

আগামী ২০১৭ সালের মধ্যে দেশে থেকে পারদযুক্ত পণ্যের ব্যবহার বন্ধে সবাইকে এক সাথে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

২০১৩ সালে বাংলাদেশ মিতামাতা কনভেনশনে স্বাক্ষর করেছে। মিতামাতা সনদ অনুসারে আগামী ২০২০ সালের মধ্যে দেশে পারদের ব্যবহার নিষিদ্ধ করতে হবে।

এ বিষয়ে কামাল উদ্দিন বলেন, মিতামাতা কনভেনশন বাস্তবায়ন করতে মন্ত্রণালয় থেকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। দ্রুত পারদের ব্যবহার বন্ধের মাধ্যমে এই কনভেনশন বাস্তবায়ন সম্ভব বলে তিনি মনে করেন।

কর্মশালায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ড. আবু জাফর মাহমুদ বলেন, পারদ অত্যন্ত বিষাক্ত ধাতব পদার্থ, যা বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় পরিবেশ ও মানবদেহে প্রবেশ করে। পারদ মস্তিষ্কের ক্ষতি করে, শ্রবণশক্তি হ্রাস ও রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়ে দেয়। গর্ভবতী মা ও শিশুদের উপরে পারদের ক্ষতিকর প্রভাব রয়েছে বলে তিনি জানান।

পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব ও এসডোর চেয়ারপারসন সৈয়দ মার্গুব মোর্শেদের সভাপতিত্বে কর্মশালায় এসডোর মহাসচিব ড. শাহরিয়ার হোসেন, নির্বাহী পরিচালক সিদ্দিকা সুলতানা, বিএসটিআই, বিসিএসআইআরসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা বক্তব্য রাখেন।