সংকটময় সময়ে অস্ত্র প্রতিযোগিতার পরিবর্তে শান্তিপূর্ণ বিশ্ব গড়ুন
সংকটময় সময়ে অস্ত্র প্রতিযোগিতার পরিবর্তে শান্তিপূর্ণ বিশ্ব গড়ুন
অস্ত্র প্রতিযোগিতার পরিবর্তে সর্বজনীন টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতে সকলকে সম্পদ ব্যবহারের আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিশ্বের এ চরম সংকটময় সময়ে অস্ত্র প্রতিযোগিতায় সম্পদ ব্যয় না করে শান্তিপূর্ণ বিশ্ব গড়ে তুলতে তা ব্যবহার করুন।
বাংলাদেশ
জার্নাল ডেস্ক
অস্ত্র প্রতিযোগিতার পরিবর্তে সর্বজনীন টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতে সকলকে সম্পদ ব্যবহারের আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিশ্বের এ চরম সংকটময় সময়ে অস্ত্র প্রতিযোগিতায় সম্পদ ব্যয় না করে শান্তিপূর্ণ বিশ্ব গড়ে তুলতে তা ব্যবহার করুন।
রোববার ঢাকায় ‘বিশ্ব শান্তি সম্মেলন-২০২১’ এর সমাপনী ভাষণে তিনি এসব কথা বলেন।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে শনিবার দুই দিনব্যাপী শান্তি সম্মেলন শুরু হয়।
সর্বজনীন টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতে সবাইকে সম্পদ ব্যবহার করার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আসুন আমরা সর্বজনীন শান্তির জন্য প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়ে কর্মযজ্ঞে নেমে পড়ি।
শেখ হাসিনা বলেন, মহামারি করোনাভাইরাস দুই বছর ধরে বিশ্বব্যবস্থাকে এক নতুন সংকটের মুখোমুখি করেছে। এ সংকট প্রমাণ করে- আমরা কেউই আলাদা নই। কাজেই শান্তিপূর্ণভাবে এ পৃথিবীতে বসবাস করতে হলে অংশীদারত্বের ভিত্তিতে একটি জবাবদিহিমূলক বিশ্বব্যবস্থা গড়ে তোলার কোনো বিকল্প নেই। এজন্য তিনি অংশীদারত্বের ভিত্তিতে শান্তিপূর্ণ বিশ্ব গড়ে তোলার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, জাতির পিতার আদর্শ ধারণ করে পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ ও সমঝোতার ভিত্তিতে সবার সঙ্গে কাজ করার জন্য বাংলাদেশ সদা প্রস্তুত।
স্বাধীনতার জন্য জাতির সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকারের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, এর মধ্য দিয়ে আমরা শান্তির মূল্য এবং সমগ্র মানবজাতির গভীরতম আকাঙ্ক্ষাগুলো অনুধাবন করেছি। ফিলিস্তিনের ভ্রাতৃপ্রতিম জনগণের প্রতি সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করে তিনি বলেন, বরাবরের মতো ফিলিস্তিনের জনগণের ন্যায্য দাবির পক্ষে আমাদের অবিচল সমর্থন রয়েছে।
সম্পদের সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও ১১ লাখের অধিক রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে বাংলাদেশে সাময়িক আশ্রয় দেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এর ফলে এ অঞ্চলে একটি বড় ধরনের মানবিক বিপর্যয় এড়ানো সম্ভব হয়েছে। নিজ মাতৃভূমিতে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের জন্য তার সরকার শান্তিপূর্ণ কূটনৈতিক তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
বিশ্ব শান্তি অটুট রাখতে যুদ্ধবিগ্রহের পরিসমাপ্তি এবং অস্ত্র প্রতিযোগিতা বন্ধ করে জোটনিরপেক্ষ নীতি গ্রহণ এবং বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক স্থাপনের ওপর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশেষ গুরুত্বারোপ করেন। জাতির পিতার শান্তি স্থাপনের প্রয়াস সম্পর্কে আলোকপাত করতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘১৯৪৭ সালে পাকিস্তান সৃষ্টির পর পূর্ববাংলার জনগণের ওপর উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে চাপিয়ে দেওয়া হয়। তখন এর প্রতিবাদ করেন তরুণ ছাত্রনেতা শেখ মুজিব এবং বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠার আন্দোলন সংগঠিত করতে গিয়ে বারবার কারাবরণ করেন। দীর্ঘ কারাবাসের পর ১৯৫২ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি তিনি মুক্তি পান। একই বছর তিনি বেইজিংয়ে অনুষ্ঠিত এশীয়-প্রশান্ত মহাসাগরীয় শান্তি সম্মেলনে যোগ দেন এবং প্রথম বাঙালি হিসেবে বিদেশের মাটিতে বাংলায় বক্তৃতা করেন।’
শেখ হাসিনা বলেন, স্বাধীনতা অর্জনের পর মাত্র নয় মাসে বঙ্গবন্ধু সংবিধান প্রণয়ন করে সেই সংবিধানের ২৫ অনুচ্ছেদে ‘আন্তর্জাতিক শান্তি, নিরাপত্তা ও সংহতির উন্নয়নের’ ক্ষেত্রে বন্ধুত্বকে রেখেছেন আমাদের পররাষ্ট্রনীতির কেন্দ্রবিন্দুতে। একইসঙ্গে শক্তি প্রয়োগ পরিহার, সম্পূর্ণ নিরস্ত্রীকরণ, নিজ নিজ আর্থসামাজিক-রাজনৈতিক ব্যবস্থা নির্ধারণ এবং সম্রাজ্যবাদ, ঔপনিবেশিকতাবাদ বা বর্ণবাদের বিরুদ্ধে বিশ্বের সর্বত্র নিপীড়িত জনগণের ন্যায়সংগত সংগ্রামকে বঙ্গবন্ধু সমর্থন দিয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, সাম্প্রদায়িকতা ও সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধেও সোচ্চার ছিলেন বঙ্গবন্ধু এবং এ দেশে সম্প্রদায়িকতার কোনো স্থান নেই বলেও বঙ্গবন্ধু উল্লেখ করেছেন। ১৯৭৪ সালে বাংলাদেশের সমুদ্র সীমানা নির্ধারণ এবং এর সম্পদের শান্তিপূর্ণ ব্যবহার নিশ্চিত করার জন্য বঙ্গবন্ধু ‘দ্য টেরিটোরিয়াল ওয়াটারস অ্যান্ড মেরিটাইম জোনস অ্যাক্ট’ও প্রণয়ন করেন। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ অপ্রতিরোধ্য গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। আগামী প্রজন্মের জন্য জাতির পিতার স্বপ্নের আত্মমর্যাদাশীল, উন্নত ও সমৃদ্ধ ‘সোনার বাংলাদেশ’ বিনির্মাণে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। সূত্র- বাসস
বাংলাদেশ জার্নাল/এমজে
from BD-JOURNAL https://www.bd-journal.com/bangladesh/183925/সংকটময়-সময়ে-অস্ত্র-প্রতিযোগিতার-পরিবর্তে-শান্তিপূর্ণ-বিশ্ব-গড়ুন