পীরগঞ্জে রেলপথ ক্রসিং যেন মরণফাঁদ

পীরগঞ্জে রেলপথ ক্রসিং যেন মরণফাঁদ

পীরগঞ্জে রেলপথ ক্রসিং যেন মরণফাঁদ

ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ উপজেলার এসকল রেলপথ ক্রসিং সাধারণ মানুষের যেন মরণফাঁদ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এসব এলাকায় প্রতিনিয়ত ঘটছে নানান দুর্ঘটনা। চলতি বছরে উপজেলায় ট্রেনে কাটা পড়ে ৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। সংশ্লিষ্ঠরা এ বিষয়ে অবগত থাকলেও নেই কোনো প্রশাসনিক ব্যবস্থা।

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি

রেল বিভাগের অনুমোদিত ১৫টি লেভেল ক্রসিংয়ের মধ্যে ১২টিই এখন অরক্ষিত। এসব অরক্ষিত লেভেল ক্রসিংয়ে কোন গেটম্যানও নেই। শুধুমাত্র সতর্কতা মূলক সাইনবোর্ড দিয়েই এর দায়ভার এড়ানোর চেষ্টা করছে সংশ্লিষ্টরা। তাও আবার সব লেভেল ক্রসিংয়ে সতর্কতামূলক সাইনবোর্ডটিও নেই। যে গুলিতে রয়েছে তার বেশির ভাগই অবহেলা আর অযত্নে পড়ে আছে। ধুলায় ভরে লেখা পড়া বা বুঝা যায় না। তাছাড়া এসব সাইনবোর্ডে কি লেখা আছে তা সহজে কোন মানুষের চোখেও পড়েনা।

ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ উপজেলার এসকল রেলপথ ক্রসিং সাধারণ মানুষের যেন মরণফাঁদ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এসব এলাকায় প্রতিনিয়ত ঘটছে নানান দুর্ঘটনা। চলতি বছরে উপজেলায় ট্রেনে কাটা পড়ে ৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। সংশ্লিষ্ঠরা এ বিষয়ে অবগত থাকলেও নেই কোনো প্রশাসনিক ব্যবস্থা।   

অথচ ঠাকুরগাঁও পীরগঞ্জ রেলরুটে প্রতিদিন ঢাকাগামী ৩টি আন্তঃনগর, রাজশাহীগামী একটি মেইল এবং একটি লোকাল ট্রেন চলাচল করে। অনুমোদিত ছাড়াও আরো বেশ কয়েকটি লেভেলক্রসিং রয়েছে।

অনুমোদিত এবং অনুমোদিত ছাড়া সবমিলে ২০টিও অধিক লেভেল ক্রসিং দিয়ে প্রতিনিয়ত ভারি যানবাহন ছাড়াও রিক্সা ভ্যানগাড়ি সাইকেল মোটর সাইকেল অন্যান্য যানবাহন ছাড়াও পায়ে হেটে অসংখ্য মানুষ পারাপার হচ্ছে।

অরক্ষিত লেভেলক্রসিং গুলোর মধ্যে পৌরশহরের জগথা মিত্রবাটি, ভোমরাদহ ইউনিয়নের মিলনবাজার ও সেনুয়া বাজার গুরুত্বপূর্ণ। এসব লেভেলক্রসিং দিয়ে যানবাহন ও মানুষ বেশি চলাচল করে থাকে। 

এর মধ্যে, ১১ জানুয়ারি পৌর শহরের জগথা লেভেলক্রসিংয়ে জেলা জজ শীপের দুই কর্মচারী আন্তনগর ট্রেনে কাটা পড়ে মারা যায়। এর কয়েকদিন পরেই এর উত্তরে একজন, সেনুয়া মিলনবাজার এলাকায় দুইজন এবং সাগুনী বাশগাড়া এলাকায় আরো দুইজন কাটা পড়ে মারা যায়।

গত মঙ্গলবার রাতেও সেনুয়া এলাকায় ট্রেনে কাটা পড়ে ১ জনের মৃত্যু হয়েছে। শহরের জগথা লেভেলক্রসিংয়ে জেলা জজ শীপের দুই কর্মচারী ট্রেনে কাটা পড়ে মারা যাওয়ার পর স্থানীয়রা এ লেভেলক্রসিংয়ে বাঁশের বেরিয়ার দিয়ে সুরক্ষার ব্যবস্থা করেছেন। ট্রেন আসলেই উপস্থিত যে কেউ বাঁশের বেরিয়ার নামিয়ে দেয়। ট্রেন চলে গেলে আবার তুলে দেওয়া হয়।

পৌর মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা ইকরামুল হক বলেন, লেভের ক্রসিং গুলো অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। এতে জীবনহানির ঘটছে। সবগুলো না হোক অন্তত শহরের গুরুত্বপূর্ণ লেভেলক্রসিং গুলোতে সুরক্ষার ব্যবস্থা করা দরকার।

পীরগঞ্জ রেলস্টেশনের সহকারি মাষ্টার সোহরাব হোসেন সুজন জানান, পীরগঞ্জ উপজেলার ভোমরাদহ হতে পার্শ্ববতী বোচাগঞ্জের সুলতানপুর স্টেশন পর্যন্ত তাদের জানা মতে ১৫ টি লেভেলক্রসিং রয়েছে। এরমধ্যে শহরের শহরের বটতলা, শহীদ অধ্যাপক গোলাম মোস্তফার সমাধিস্থল এবং বাকের পুলের কাতিহার লেভেলক্রসিংয়ে সুরক্ষার জন্য গেঁটম্যান ও বেরিয়ার আছে। বাকি গুলি অরক্ষিত। সেগুলো অবশ্যই ঝুঁকিপূর্ন। বিষয়টি রেলের উদ্ধতন কতৃপক্ষের নজরে আছে।

বাংলাদেশ জার্নাল/এএম

© Bangladesh Journal


from BD-JOURNAL https://www.bd-journal.com/bangladesh/185154/পীরগঞ্জে-রেলপথ-ক্রসিং-যেন-মরণফাঁদ