মালয়েশিয়ায় ৪ মাসে ১৯০ বাংলাদেশির মৃত্যু

মালয়েশিয়ায় ৪ মাসে ১৯০ বাংলাদেশির মৃত্যু

মালয়েশিয়ায় ৪ মাসে ১৯০ বাংলাদেশির মৃত্যু

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : 

মালয়েশিয়ায় দিন দিন বেড়েই চলছে বাংলাদেশিদের মৃত্যুর সংখ্যা। এখন প্রতিদিনই মালয়েশিয়া থেকে মরদেহ আসছে দেশে। শুধু গত চার মাসে মালয়েশিয়ায় মৃত্যু হয়েছে ১৯০ বাংলাদেশির।

মালয়েশিয়ার বাংলাদেশ দূতাবাস সূত্র জানায়, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে গত ৫ এপ্রিল পর্যন্ত বিভিন্ন কারণে ১৯০ জন বাংলাদেশির মৃত্যু হয়েছে। এরা হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে, সড়ক দুর্ঘটনা ও নির্মাণকাজ করতে গিয়ে মারা গেছেন। তবে এদের কারো পরিবারই মৃত্যুজনিত ক্ষতিপূরণ পায়নি।

দূতাবাসের কর্মকর্তারা জানান, মৃতদের মধ্যে যাদের বৈধতা ছিলো, তারাই ক্ষতিপূরণ পাবেন। ক্ষতিপূরণ আদায়ে দূতাবাস সর্বাত্মক সহযোগিতা করে থাকে।

এদিকে, মধ্যপ্রাচ্যসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে নানা কারণে মৃত্যু হচ্ছে বাংলাদেশিদের। সরকারি হিসাব অনুযায়ী, গত ১০ বছরে বিভিন্ন দেশে মারা গেছেন ২৪ হাজার ৩৮১ জন বাংলাদেশি। তবে সমুদ্রপথে পাড়ি দিতে গিয়ে বা অবৈধভাবে বিদেশ পাড়ি জমাতে গিয়ে কতজন মারা গেছেন তার সরকারি হিসাবে বলা হয়নি।

পরিসংখ্যানে জানা যায়, দেশে প্রতি মাসে প্রবাসীর মরদেহ আসছে ১৯৭টি। তবে গত চার মাসের হিসাব আরও উদ্বেগজনক। এ সময়ে প্রতিদিন গড়ে ১০ জনের মরদেহ দেশে আসছে বলে জানা গেছে। এই হিসাবের বাইরে যাদের বিদেশে দাফন করা হচ্ছে তাদের সংখ্যা জানা যায়নি।

বাংলাদেশের প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অধীন ওয়েজ আনার্স কল্যাণ বোর্ডের পরিসংখ্যানে জানা গেছে, স্বাভাবিক মৃত্যুর বাইরে সড়ক দুর্ঘটনা, কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনা, অগ্নিকাণ্ড, আত্মহত্যা এমনকি প্রবাসে বাংলাদেশিরা খুনের ঘটনারও শিকার হচ্ছেন। এছাড়া বিভিন্ন অপরাধে ৪৭টি দেশে ৭৮ জন বাংলাদেশিকে ওইসব দেশের আদালতের রায়ে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়েছে। মানবিক কারণে ২৯ জনের মৃত্যুদণ্ড রহিত করে তাদের অন্য দণ্ড দিতে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে চেষ্টা চালানো হচ্ছে বলেও জানা গেছে।

পরিসংখ্যানে আরও জানা যায়, প্রবাসে বাংলাদেশি মৃত্যুর তালিকায় শীর্ষে রয়েছে সৌদি আরব। এরপরে মালয়েশিয়া। গত কয়েক বছরে বিদেশ থেকে যত মরদেহ এসেছে তার প্রায় ৬৫ ভাগ এসেছে সৌদি আরব, মালয়েশিয়া, আরব আমিরাত, ওমান ও কুয়েত থেকে।

প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের ওয়েজ আনার্স কল্যাণ বোর্ড প্রবাসী শ্রমিকদের মরদেহ দেশে পাঠানোর খরচ বহন করে থাকে। এছাড়া ৯ হাজার ৭৫৪ জন শ্রমিকের পরিবার ক্ষতিপূরণ বাবদ ওই বোর্ডের তহবিল থেকে অনুদান পেয়েছে।

তবে আমলাতান্ত্রিক জটিলতা, প্রশাসনিক ধীরগতি, হয়রানিসহ নানা কারণে বেশিরভাগ শ্রমিকের পরিবার ক্ষতিপূরণ পায়নি বলে অভিযোগ রয়েছে।