অজ্ঞান পার্টির টার্গেট এখন গরু ব্যবসায়ী

অজ্ঞান পার্টির টার্গেট এখন গরু ব্যবসায়ী

স্টাফ রিপোর্টার : রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন স্থানে অজ্ঞান পার্টির সদস্যরা তৎপর রয়েছেন; যাদের মূল টার্গেট এখন গরু ব্যবসায়ীরা। গরু বিক্রির টাকা হাতিয়ে নিতে তারা বিশেষ মিশন নিয়ে মাঠে নেমেছেন। রাজধানীর বিভিন্ন স্থান থেকে অজ্ঞান ও মলম পার্টির ১৭ সদস্যকে গ্রেপ্তারের পর তারা গোয়েন্দা পুলিশকে এই তথ্য জানিয়েছেন।

গোয়েন্দা পুলিশের ভাষ্য, শুধু গরু ব্যবসায়ীই নয়, তারা টার্গেট করেছে দূরপাল্লার বাস যাত্রীদেরও। ঢাকার বিভিন্ন স্থানে অবস্থান করে কৌশলে কাউকে টার্গেট করে, তাকে ডাব, শরবত, কোমল পানীয় বা চায়ের সঙ্গে চেতনানাশক ওষুধ মিশিয়ে খাওয়ানোর পর সেই ব্যক্তি অজ্ঞান হয়ে পড়লে তার কাছ থেকে সব লুটে নেয় অজ্ঞান পার্টির সদস্যরা।

তবে পুলিশের দাবি অজ্ঞান পার্টি ও মলম পার্টির তৎপরতা রোধে ঢাকা মহানগর (ডিএমপি) পুলিশও তৎপর রয়েছে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্বে থাকা এই বাহিনীর বক্তব্য, নিয়মিত অভিযানের ফলে ঈদুল আজহাকে কেন্দ্র করে অজ্ঞান পার্টি ও মলম পার্টির সদস্যরা তেমন তৎপরতা দেখাতে পারেনি। এরই মধ্যে রাজধানী থেকে দুই শতাধিক অজ্ঞান পার্টির সদস্যকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে।

শনিবার রাতেই বিশেষ অভিযান চালিয়ে অজ্ঞান ও মলম পার্টি চক্রের ১৭ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ। ঈদুল আজহাকে কেন্দ্র করে ঢাকায় তৎপর অজ্ঞান পার্টির সদস্যদের ধরতে শনিবার রাতে গোয়েন্দা পুলিশের একাধিক টিম কলাবাগান, গুলিস্তান ও যাত্রাবাড়ী এলাকায় এই বিশেষ অভিযান চালায়। অভিযানে গুলিস্তানে অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে পড়া মোস্তাকিম নামে এক ভুক্তভোগীকেও উদ্ধার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ।

গোয়েন্দা পুলিশ জানায়, ঈদকে সামনে রেখে ঢাকার বিভিন্ন স্থানে বিশেষ করে বাস টার্মিনাল ও গরুর হাটে অজ্ঞান পার্টির সদস্যরা তৎপর রয়েছেন। অজ্ঞান পার্টির সদস্যদের গ্রেপ্তার করার পর তারা সহজেই জামিন পেয়ে যান। যে কারণে তাদের নিবৃত্ত করা যায় না।

গোয়েন্দা পুলিশ আরো জানায়, শনিবার গুলিস্তান ও এর আশপাশে অভিযান চালিয়ে অজ্ঞান পার্টির ৯ সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়। এই চক্রটি ৪/৫ বছর ধরে এই পেশার সঙ্গে জড়িত। তাদের প্রতিটি গ্রুপে ২০/২৫ জন সদস্য থাকেন। এর আগেও এই চক্রের অনেক সদস্য একাধিকবার পুলিশের হাতে তারা গ্রেপ্তার হয়েছেন। জামিনে বের হয়ে তারা আবার একই কাজ করছেন।

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের উপ-কমিশনার (ডিসি) শেখ নাজমুল আলম বলেন, অজ্ঞান পার্টির সদস্যরা বিভিন্ন বাস টার্মিনালে মানুষের সঙ্গে সুসম্পর্ক তৈরি করে চেতনানাশক ওষুধ মেশানো খাবার খাইয়ে অজ্ঞান করে সব লুটে নেয়। এদের অনেক সদস্য বাসে যাত্রী বেশেও অবস্থান নিয়ে থাকেন।

ঈদুল আজহায় গরু ব্যবসায়ীরা বিশেষ টার্গেট থাকে বলেও তিনি জানিয়েছে।

ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া বলেন, অজ্ঞান পার্টি ও মলম পার্টির তৎপরতা রোধে পুলিশ তৎপর রয়েছে। এরই মধ্যে অজ্ঞান পার্টির দুই শতাধিক সদস্যকে পুলিশ গ্রেপ্তার করতে সমর্থ হয়েছে। গরুর হাটগুলোতে অজ্ঞান পার্টি কোনো ধরনের তৎপরতা যাতে দেখাতে না পারে, সে জন্যও পুলিশ বিশেষ নজরদারি রাখছে।