পুনঃভর্তি পরীক্ষা গ্রহণের আন্দোলনে সাড়া নেই স্বাস্থ্য অধিদফতরের

পুনঃভর্তি পরীক্ষা গ্রহণের আন্দোলনে সাড়া নেই স্বাস্থ্য অধিদফতরের

বিশেষ প্রতিবেদক :  সরকারি মেডিকেল কলেজের পুনঃভর্তি পরীক্ষা গ্রহণের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে কোনো সাড়া দিচ্ছে না স্বাস্থ্য অধিদফতর। প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগে বঞ্চিত শিক্ষার্থীরা ২৩ সেপ্টেম্বর ভর্তি পরীক্ষার পর থেকে আন্দোলন চালিয়ে আসছে। ঈদের দিনেও তারা আন্দোলন কর্মসূচি বহাল রাখে। ধারাবাহিক কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজও তারা শাহবাগ ও জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছে।

এদিকে, আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আজ শাহবাগে এসে সংহতি জানিয়েছেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা সমন্বয়ক ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। তিনি বলেন, সরকারি মেডিকেল কলেজের ভর্তি পরীক্ষা পৃথক পৃথক কেন্দ্রে পৃথকভাবে গ্রহণ করলে ভর্তি পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁস হওয়ার অভিযোগ উঠবে না। এসময় তিনি শিক্ষার্থীদের আন্দোলন যৌক্তিক বলেও মন্তব্য করেন।

এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলনে বিন্দুমাত্র সাড়া নেই স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় কিংবা স্বাস্থ্য অধিদফতরের। পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী মঙ্গলবার থেকে ভর্তি কার্যক্রম শুরু হচ্ছে।

সোমবার দুপুরে জাগো নিউজের সঙ্গে আলাপকালে স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক (চিকিৎসা শিক্ষা ও স্বাস্থ্য জনশক্তি উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. এ বি এম আবদুল হান্নান প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ আবারো অস্বীকার করে বলেন, কাল থেকে যথারীতি ভর্তি কার্যক্রম শুরু হবে। পুনঃভর্তি পরীক্ষা গ্রহণের প্রশ্নই উঠে না ।

আন্দোলনকারী সাধারণ শিক্ষার্থীরা বলছেন , নানা কারণে এবারের ভর্তি পরীক্ষা প্রশ্নবিদ্ধ হলেও সরকারের কোনো মাথা ব্যাথা নেই।

তারা জানান, পরীক্ষার কয়েকদিন আগে রাজধানীর মহাখালী ডিওএইচএস থেকে প্রশ্নপত্র, উত্তরপত্র এবং শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে নেয়া আগাম দেড় কোটি টাকাসহ চারজনকে গ্রেফতার করে র‌্যাব। পরীক্ষার পরও রংপুরে প্রশ্নপত্রসহ আরো চারজনকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে দুজন চিকিৎসকও ছিলেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভর্তি পরীক্ষার হুবহু প্রশ্ন ও একটি করে সঠিক উত্তর তুলে ধরা হয়।

তারা প্রশ্ন রেখে বলেন, প্রশ্নপত্র ফাঁস না হয়ে থাকলে র‌্যাব কেন তাদের গ্রেফতার করলো? কোনো প্রকার লেনদেন না হয়ে থাকলে কেন শিক্ষার্থী বা অভিভাবকরা লাখ লাখ টাকার চেক জমা রাখলেন? এবার কেন আনুষ্ঠানিকভাবে ফলাফল প্রকাশের আগেই তড়িঘড়ি করে এসএমএসের মাধ্যমে ফলাফল শিক্ষার্থীদের কাছে পাঠানো হলো? এমন অনেক প্রশ্নের কোনো সঠিক জবাব স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় কিংবা স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে আসেনি।

তবে গত কয়েকদিনের চেয়ে আজ আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেশি ছিল। সাধারণ শিক্ষার্থীরা আজ শাহবাগের রাস্তায় শান্তিপূর্ণভাবে অবস্থান করে। তাদের চারদিক থেকে পুলিশ সদস্যরা ঘিরে দাঁড়িয়েছিলেন। এসময় শিক্ষার্থীরা ৩শ’টাকা দিয়ে ৩০টি ফুল কিনে এনে পুলিশ সদস্যদের শুভেচ্ছা জানাতে গেলে পুলিশ তা গ্রহণ করতে অস্বীকৃতি জানায়।

এসময় পুলিশ তাদের আন্দোলন বন্ধ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষা দেয়ার অনুরোধ জানিয়ে বলেন, ভালভাবে পড়াশুনা করে বড় কর্মকর্তা হলে তারাই একদিন ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানাবেন।

সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজের শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী মসিউর রহমান যিনি গত কয়েকদিন যাবৎ আন্দোলনকারীদের কর্মসূচির প্রতি সংহতি জানিয়ে অবস্থান করছেন তিনি বলেন, ইতোমধ্যেই বিভিন্ন মেডিকেল কলেজে দু তিন দিন করে পরীক্ষা পিছিয়ে দেয়া হয়েছে। তবে এ তথ্য অস্বীকার করেছেন স্বাস্থ্য পরিচালক এবিএম আবদুল হান্নান। তিনি জানান, এ ধরনের কোনো নির্দেশনা তারা জারি করেননি।