ঈদে সাংবাদিকদের সোয়া কোটি টাকার অনুদান

ঈদে সাংবাদিকদের সোয়া কোটি টাকার অনুদান

মিডিয়া ডেক্স : বাংলাদেশের অসুস্থ, অসচ্ছল, অসহায় এবং বেকার সাংবাদিকদের জন্য সরকারের তরফ থেকে এবার ঈদ উপলক্ষে প্রায় সোয়া কোটি টাকার অনুদান দেয়া হচ্ছে। আজ বৃহস্পতিবার ঘটা করে আনুষ্ঠানিকভাবে এ অনুদান দেয়া হবে। অনুদান পাচ্ছেন এরকম সাংবাদিকের সংখ্যা ১৭৭ জন। এদের মধ্যে কয়েকজন প্রয়াত সাংবাদিকের পরিবারও রয়েছেন।

জানা গেছে, আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১১ টায় এক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেই এই অনুদানের অর্থ সাংবাদিকদের হাতে তুলে দেবেন বলে কর্মসূচি রয়েছে। যারা ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে পারবেন না তাদের চেক পাঠিয়ে দেওয়া হবে।

তথ্য মন্ত্রণালয়  চলতি সপ্তাহে এ অনুদানের চূড়ান্ত তালিকা প্রস্তুত করেছে। তালিকায় রয়েছেন ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের  ৫৩ জন, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের বিভিন্ন জেলা ইউনিটের ৫০ জন এবং বিভিন্ন জেলা থেকে আবেদনকারী আরও ৭৩ জন ।

অনুদানের তালিকায় অন্তর্ভুক্তরা সর্বনিম্ন ৫০ হাজার টাকা এবং সর্বোচ্চ দুই লাখ টাকা পর্যন্ত পাচ্ছেন। এর মধ্যে কয়েকজন এক লাখ এবং এক লাখ ৫০ হাজার টাকা করেও পাচ্ছেন। অনুদান প্রার্থী  অনেকেই তাদের পরিবারের সদস্যের অসুস্থতাজনিত কারণও উল্লেখ করেছেন। সাংবাদিকদের এভাবে ঘটা করে ব্যাপকহারে অনুদান দেয়ার বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

সরকারের কাছ থেকে হাত পেতে অনুদান গ্রহণ স্বাধীন সাংবাদিকতা পেশার জন্য কতটা মর্যাদার? এ প্রশ্নের জবাবে  বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল একটি বিদেশি সংবাদ মাধ্যমকে বলেছেন, দুস্থ, অসহায়ত্ব বা চিকিৎসার কারণে আগেও সাংবাদিকরা সরকারি সাহায্য নিয়েছে । বর্তমান সরকার সেটাকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিয়েছে। এতে অমর্যাদার তেমন কিছু নেই।

তবে তিনি স্বীকার করেন, যে সব প্রতিষ্ঠানের সাংবাদিক সরকারি অনুদান নিচ্ছেন সে সব প্রতিষ্ঠানের জন্য বরং এটা অমর্যাদাকর ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায়।

এ প্রসঙ্গে বাম রাজনৈতিক নেতা সাইফুল হক বলেন, এটা স্বাধীন সাংবাদিকতা পেশার জন্য অবমাননাকর। সরকার অনুদান দিয়ে তাদের অনুগত সাংবাদিক সৃষ্টি করতে চায়।

তিনি মনে করেন, সাংবাদিকদের চেয়েও অসহায় অবস্থায় পড়ে যে সব পোশাক শ্রমিকরা প্রেসক্লাবের সামনে রোদ-বৃষ্টিতে ভিজে অবস্থান কর্মসূচী পালন করছে তাদের সাহায্য করলে সরকারের   সততা প্রকাশ পেতে পারতো।

সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, বাংলাদেশের একজন সাংবাদিক নিজেকে অসহায় বা দুস্থ পরিচয় দিয়ে যখন সরকারি অনুদান হাত পেতে গ্রহণ করেন এবং সেটা যখন টেলিভিশনে প্রচারও হয়, তখন সে সাংবাদিক নিজেকে যতটা  হেয় করেন তার চেয়ে বেশি করে ফুটিয়ে তুলেন সাংবাদিকতার দৈন্য দশা। একজন আত্ম-মার্যাদা সম্পন্ন সাংবাদিকের কাছে দারিদ্র্য বা অসহায়ত্ব সরকারের করুণা ভিক্ষার কারণ হওয়া উচিত নয় -এটা বুঝার মতো চেতনাবোধ না থাকলে তার সাংবাদিকতা পেশা থেকে বিদায় নেয়া উচিত।