সড়কে বিশৃঙ্খলা, যানজটে ভোগান্তি
সড়কে বিশৃঙ্খলা, যানজটে ভোগান্তি
নিজস্ব প্রতিবেদকজ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে শুক্রবার সকাল ৬টা থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য সারাদেশে গণপরিবহন চলাচল বন্ধ থাকবে বলে জানিয়েছেন পরিবহন মালিক-শ্রমিকরা। আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা না দিলেও শুক্রবার থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য গণপরিবহন বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তারা। পরিবহন মালিকরা বলছেন, বাসের ভাড়া পুনর্নির্ধারণের আগে সারা দেশে যানবাহন চলবে না।
এ ঘোষণার পরপরই যে যার মত ছুটতে শুরু করেন। এর ফলে সড়কে বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়। পরিবহন শ্রমিকরা অতিরিক্ত ভাড়া দাবি করলে যাত্রীদের সঙ্গে তর্কাতর্কি শুরু হয়। কোথাও কোথাও হাতাহাতির ঘটনাও ঘটে। বিশেষ করে নারায়ণগঞ্জ রুটে যাত্রীদের কাছ থেকে ৩৬ টাকার ভাড়া ৫০ টাকা আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এদিকে বিকেলের পর থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে তীব্র যানজট দেখা দেয়। এর ফলে অফিস থেকে ঘরমুখো মানুষেরা সীমাহীন ভোগান্তিতে পড়েন। অনেককে বাড়ি যেতে গাবতলি, সায়েদাবাদ, মহাখালী টার্মিনালে ভিড় জমা দেখা যায়।
বুধবার মধ্যরাত থেকে ডিজেলের মূল্য লিটারপ্রতি ১৫ টাকা বৃদ্ধি করেছে সরকার। এ নিয়ে বৃহস্পতিবার পরিবহন খাতের বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা নিজেদের মধ্যে বৈঠক করেছেন। এসব বৈঠক থেকেই ভাড়া বৃদ্ধি না করার ঘোষণা দেয়ার আগ পর্যন্ত পরিবহন বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পরিবহন মালিক সমিতির এক নেতা বলেন, পরিবহনের অধিকাংশ সংগঠনের নেতারা সরকারপন্থি রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। তাই তারা আনুষ্ঠানিকভাবে ধর্মঘট ঘোষণা করতে চান না। তবে অনানুষ্ঠানিকভাবে বাসসহ বাণিজ্যিক যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকবে।
জানতে চাইলে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খোন্দকার এনায়েত উল্যাহ বলেন, তেলের মূল্য বাড়ায় মালিকরা গাড়ি চালাবেন না, এমন সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন। তবে আনুষ্ঠানিক ধর্মঘট ঘোষণা দেয়া হয়নি। সংগঠনের পক্ষ থেকে বিআরটিএকে চিঠি দিয়ে ভাড়া বাড়ানোর দাবি জানানো হয়েছে।
এর আগে ডিজেলের দাম লিটারে ১৫ টাকা বাড়ানোর প্রতিবাদে শুক্রবার সকাল ৬টা থেকে সারাদেশে ট্রাক-কাভার্ডভ্যান ধর্মঘটের ডাক দেয়া হয়। জ্বালানি তেলের বর্ধিত এ দাম না কমানো পর্যন্ত ধর্মঘট চলবে বলেও পণ্য পরিবহন সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন। বৃহস্পতিবার দুপুরে বাংলাদেশ আন্তঃজেলা ট্রাকচালক ইউনিয়নের সভাপতি তাজুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
বিআরটিএর চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ মজুমদার রাতে বলেন, ভাড়া বাড়াতে মালিকদের কাছ থেকে আবেদন পেয়েছেন তারা। সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে রোববার বৈঠক ডাকা হয়েছে।
বাসের ভাড়া পুনর্নির্ধারণ বিষয়ক কমিটির সবাই থাকবেন। এই কমিটিতে পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের প্রতিনিধি, মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরসহ সব স্টেকহোল্ডার উপস্থিত থাকবেন। বৈঠকে ভাড়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে।
এ অবস্থায় পরিবহন মালিকরা গাড়ি বের না করলে কী পরিস্থিতি তৈরি হবে- সে বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে নুর মোহাম্মদ বলেন, বাস চলাচল ‘স্বাভাবিক থাকবে’ বলেই তার বিশ্বাস। পরিবহন মালিকদের সঙ্গে কথা হয়েছে। কেন্দ্র থেকে কোনো ঘোষণা দেয়নি মালিক সমিতির নেতারা। কিছু ভুল বোঝাবুঝি আছে, বিভিন্ন জায়গায় বিচ্ছিন্নভাবে বাস না চালানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। কিন্তু কেন্দ্রীয় নেতারা বলেছেন বাস চালাবেন। এখানে যে ফাঁকটি রাখা হয়েছে, মালিক সমিতির নেতা খন্দকার এনায়েত উল্যাহর কথাতেও তা স্পষ্ট।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি এবং বাংলাদেশ বাস-ট্রাক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের নেতারা বৈঠক করেছেন। বৈঠকে বাস চালানোর সিদ্ধান্তের ভার তারা বিভিন্ন জেলার মালিকদের ওপর ছেড়ে দিয়েছেন। তবে জেলার মালিকরা সিদ্ধান্ত নিয়ে বলেছেন, তারা গাড়ি চালাবেন না।
বাংলাদেশ জার্নাল/এএম
from BD-JOURNAL https://www.bd-journal.com/bangladesh/180345/সড়কে-বিশৃঙ্খলা-যানজটে-ভোগান্তি