ফুলের রাজধানী গদখালী

ফুলের রাজধানী গদখালী

ফুলের রাজধানী গদখালী

সাকিরুল কবীর রিটন

যশোর শহর থেকে যশোর-বেনাপোল রোড ধরে শতবর্ষী শত শত রেইনট্রির ছায়া মাড়িয়ে ১৯ কিলোমিটার গেলে গদখালী বাজার। সেখান থেকে পূর্ব দিকে কিছু দূরে রাস্তার দুই পাশে ফুলের মাঠ। সঙ্গে শীতকালে সরিয়া ফুলের নয়নাভিরাম দৃশ্য। যা দেখে মুগ্ধ নয়নে তাকিয়ে থাকতে হয়।

দেশে ফুলের রাজধানী হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে যশোরের ঝিকরগাছার গদখালী এলাকা। দেশের ফুলের চাহিদার ৭০ শতাংশই যোগান দেয় এই এলাকা চাষিরা। তারা ফুল চাষ করে ভালো লাভ করেন।

শীতের মৌসুমে ফুলের রাজ্যে কিছুক্ষণের জন্য হারিয়ে যেতে বহু মানুষ সেখানে ভিড় করেন। গদখালীর ফুলের মাঠে রয়েছে বিদেশি জাতের জারবেরা, রথস্টিক, ক্যালোন্ডোলা, লিলিয়াম, গ্লাডিউলাস, রডস্টিক ফুল।

বছরের বিশেষ দিবসে ফুলের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় এখানকার ফুল চাষির ব্যস্ততাও বেড়ে যায়। গদখালীকে কেন্দ্র করে পার্শ্ববর্তী পানিসারা, মঠবাড়ী, সৈয়েদপাড়া, টাওরা, বেনেয়ালী গ্রামেরও ফুল চাষ হয়। ফুল চাষির সংখ্যাও বাড়ছে। এ এলাকায় প্রায় ৬ হাজার ফুল চাষি রয়েছেন। তারা বিদেশি জাতের পাশাপাশি গোলাপ, রজনীগন্ধা, গাঁদা, চন্দ্রমল্লিকা, জিপসি ইত্যাদি ফুল চাষ করে থাকে। তবে চাহিদা বেশি হওয়ায় গোলাপ, রজনীগন্ধা, জারবেরা ফুল বেশি চাষ হয়।

 

 

রোববার ও বৃহস্পতিবার গাদখালী বাজারে ফুলের হাট বসে। দূর-দূরান্ত থেকে বেপারিরা এসে এখান থেকে ফুল কিনে নিয়ে যায়। সাধারণত ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, সিলেট, বরিশাল, রংপুর, খুলনার বেপারিরা ফুল কিনতে আসেন।

ফেব্রুয়ারি এলে নাওয়া-খাওয়ার সময় থাকে না ফুল চাষিদের। সামনে বসন্তবরণ, বিশ্ব ভালোবাসা দিবস, আন্তর্জাতিক মার্তৃভাষা দিবস ঘিরে ব্যস্ত সময় কাটছে তাদের। এ দিবসগুলো ঘিরে এবার ৮০ কোটি টাকার ফুল বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা তাদের।

বাংলাদেশ ফ্লাওয়ার সোসাইটির সভাপতি আব্দুর রহিম জানান, দেশে ২৫ জেলার ৬ হেক্টর জমিতে ফুল চাষ হয়; যার মধ্যে গদখালীতে দেড় হাজার হেক্টরে চাষ হয়। গদখালী এলাকার ৬ হাজার চাষি ফুল চাষে লাভবান হচ্ছেন।

আব্দুর রহিম জানান, ১৯৮২ সালে শেল আলী এক শতক জমিতে পরীক্ষামূলক ফুল চাষ করেন। এখন সেখানে দেড় হাজার হেক্টর জমিতে ফুল চাষ হয়।

নানা প্রতিকূলতার মধ্যেও গদখালীর চাষিরা বছরে ৩০০ কোটি টাকার ফুল বিক্রি করছে বলে জানান তিনি।

 

ঢাকা/বকুল



from Risingbd Bangla News https://ift.tt/35SC3Rn