আজ কামালপুর মুক্ত দিবস

আজ কামালপুর মুক্ত দিবস

আজ কামালপুর মুক্ত দিবস

আজ ৪ ডিসেম্বর জামালপুরের কামালপুর মুক্ত দিবস

বাংলাদেশ

জামালপুর প্রতিনিধি

আজ ৪ ডিসেম্বর জামালপুরের কামালপুর মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে পাকহানাদার মুক্ত হয় মহান মুক্তিযুদ্ধের ১১ নম্বর সেক্টরের জামালপুরের কামালপুর রণাঙ্গন। কামালপুর মুক্ত হওয়ার মধ্য দিয়ে সূচিত হয় জামালপুর, ময়মনসিংহ ও টাঙ্গাইল তথা ঢাকা মুক্ত হওয়ার পথ। 

মহান মুক্তিযুদ্ধের ১১ নম্বর সেক্টরের সেক্টর কমান্ডারের দায়িত্ব পালন করেন মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম বীর সেনানী কর্নেল আবু তাহের বীর উত্তম। এই সেক্টরের সদর দপ্তর ছিল ভারতের মহেন্দ্রগঞ্জে। এই সেক্টরের অদূরেই ধানুয়া কামালপুর সীমান্তে ছিল পাকসেনাদের কংক্রিটের তৈরী বাংকারসহ দুর্ভেদ্য ও সুরক্ষিত শক্তিশালী ঘাঁটি। যুদ্ধে পারদর্শী পাকিস্তান সেনাবাহিনীর চৌকচ রেজিমেন্ট ৩১ বালুচ রেজিমেন্টের সৈন্যদের পকিস্তান সরকার নিয়োগ করেছিল কামালপুর ক্যাম্পে। এ রক্ষন ব্যুহের চারদিক পর পর কয়েকটি স্তরে মোটা গাছের গুড়ি, কংক্রিট ব্লক তারপর ৬ইঞ্চি থেকে এক ফুট ব্যবধানে ভারী লোহার বিম এবং প্রতিটি স্তরে রি-ইনর্ফোসড কংক্রিট বেরিয়ার যা যে কোন গোলার আঘাত প্রতিহত উপযোগী করে গড়ে তুলেছিল। 

বাংকারের উপরের আবরন ছিল কয়েক স্তরে লগ-বালুর বস্তা-কংক্রিটে সাঁজানো। বাংকারগুলোতে সুড়ঙ্গ পথে যাতায়াতের ব্যবস্থা ছিল। চারদিকে পাতা ছিল এন্টি ট্যাংক মাইন, বুব্যি ট্র্যাপ এবং এন্টি পারসোনাল মাইন। ক্যাম্পটি ঘেরা ছিল কাঁটাতারের বেড়া ও স্পাইকস্ দিয়ে। ঘাটির চারপাশে দেড় থেকে দুই’শ গজ এলাকা গাছ গাছালি কেটে রাখা হয়েছিল জানালেন মুক্তিযোদ্ধা বশির আহমেদ বীর প্রতীক। তিনি আরো জানান, তাদের এই রণকৌশলের যথেষ্ট কারনও ছিল। মুক্তিবাহিনী ও ভারতীয় মিত্র বাহিনীর রাজধানী ঢাকা দখলের সহজ ও একমাত্র পথ ছিল এটি। কামালপুর দখল হলেই ঢাকা দখল সহজ হয়ে যাবে।    পাকসেনাদের এই শক্তিশালী ঘাটির পতন ঘটানোর লক্ষ্যে কর্নেল আবু তাহেরের নেতৃতে ১২ জুন থেকে ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে হানাদার পাকসেনাদের ৮ দফা সম্মুখ যুদ্ধ হয়। সম্মুখ যুদ্ধে ক্যাপ্টেন সালাহ উদ্দিনসহ ১৯৪ জন মুক্তিযুদ্ধা শহীদ ও শত্রু পক্ষের একজন মেজরসহ ৪শ ৯৭ জন নিহত হয়। দুপক্ষে হতাহতের সংখ্যাও অনেক হয়। এই যুদ্ধে পাকসেনাদের একটি মর্টার শেলের আঘাতে সেক্টর কমান্ডার কর্নেল আবু তাহের গুরুতর আহত হন এবং ১টি পা হারান। 

বীর মুক্তি সেনানীরা ২৪ নভেম্বর থেকে কামালপুর পাকসেনা ক্যাম্প অবরোধ করে টানা ১০দিন সম্মুখ যুদ্ধের পর ৪ ডিসেম্বর কামালপুরকে শত্রুমুক্ত করেন। এদিন কামালপুর ক্যাম্পের গ্যারিসন কমান্ডার আহসান মালিকসহ ১৬২ পাকসেনা মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে আত্মসর্মপণ করে। 

কামালপুর মুক্ত দিবস উদযাপনে উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় মুক্তিযুদ্ধা সংসদ নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে।

বাংলাদেশ জার্নাল/এসবি 

© Bangladesh Journal


from BD-JOURNAL https://www.bd-journal.com/bangladesh/97809/আজ-কামালপুর-মুক্ত-দিবস