দেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করাই আমাদের লক্ষ্য- প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

দেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করাই আমাদের লক্ষ্য- প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

দেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করাই আমাদের লক্ষ্য- প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

টাঙ্গাইলদর্পন ডেক্স :

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করাই হবে আমাদের মূল লক্ষ্য। এজন্য যা যা করা দরকার আমরা সে বিষয়ে সহযোগিতা করব।

তিনি বলেন, ইতোমধ্যে কৃষিতে ৪১ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিচ্ছি। কৃষিতে খরচ যাতে কম হয়, সেজন্য কৃষিকে আধুনিকীকরণ করে উন্নতমানের চাষাবাদ কর্মসূচি গ্রহণ করেছি। বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর ফার্মগেটে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনে ডিপ্লোমা কৃষিবিদদের মহাসম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, বিভিন্ন জেলা-উপজেলায় কৃষকদের মধ্যে কৃষিকাজের জন্য আধুনিক যন্ত্রপাতি সরবরাহ করা হচ্ছে। তাদের ট্রেনিং দেয়া হচ্ছে। কৃষির উন্নয়নের মাধ্যমে আমরা দেশকে উন্নত করতে চাই। ডিপ্লোমা কৃষিবিদদের বিভিন্ন দাবি-দাওয়ার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ডিপ্লোমা কৃষিবিদরা হলেন কৃষি উন্নয়নের অগ্রনায়ক। তারা সবসময় মাঠে থাকেন। তাদের অবদানের কারণেই দেশে আজ প্রায় চার কোটি মেট্রিক টন খাদ্যশস্য উৎপাদন হচ্ছে। এ কারণে বেতন বৃদ্ধির সময় আমাদের সরকার আপনাদের ১৪ গ্রেড থেকে ১১ গ্রেডে নিয়ে এসেছে। ফলে আপনারা আগে যে বেতন পেতেন তার চেয়ে এখন অনেক বেশি পান।

শেখ হাসিনা বলেন, সরকারি কর্মচারী-কর্মকর্তাদের কথা চিন্তা করে আমরা ১২৩ ভাগ বেতন বৃদ্ধি করেছি। পৃথিবীর কোনো দেশ এভাবে বেতন বৃদ্ধি করতে পেরেছে কিনা আমার জানা নেই। তবে আমরা পেরেছি। আমাদের লক্ষ্য আপনারা পরিবার-পরিজন নিয়ে যাতে ভাল থাকতে পারেন। কর্মক্ষেত্রে যেন নিশ্চিন্তে কাজ করতে পারেন। এছাড়া প্রতি বছরই যাতে আপনাদের বেতন বাড়ে সে ব্যবস্থা করে দিয়েছি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বীজ উৎপাদনে আমরা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে চাই। কারণ ভাল বীজ না হলে ভাল ফসল উৎপাদন সম্ভব না। এজন্য বিএডিসিকে বীজ উৎপাদনের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তারা ভাল মানের বীজ উৎপাদন করতে সক্ষম হয়েছে। তার সুফল আমরা দেখতে পাচ্ছি। আজ দেশে প্রায় চার কোটি মেট্রিকটন শস্য উৎপাদন হচ্ছে।

তিনি বলেন, বীজ উৎপাদনে বেসরকারি কোম্পানি অবশ্যই থাকবে, তবে তাদের ওপর নির্ভর করা যাবে না। কারণ ব্যবসা ও অতি লাভের কারণে তারা অনেক সময় নিন্মমানের বীজ সরবরাহ করে থাকে। এজন্য বীজ উৎপাদনে সরকারি প্রতিষ্ঠান থাকতে হবে।

শেখ হাসিনা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে আমরা লবণাক্ত সহিষ্ণু, বন্যা সহিষ্ণু ও খরা সহিষ্ণু ধান আবিষ্কার করেছি। ফলে সংশ্লিষ্ট এলাকায় ধান উৎপাদন অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। কৃষির উন্নয়নে আমরা কৃষককে ১০ টাকা দিয়ে অ্যাকাউন্ট খোলার সুযোগ দিয়েছি।

তিনি বলেন, একটি বাড়ি একটি খামারের মাধ্যমে কৃষককে সহায়তা করা হচ্ছে। মাত্র চার ভাগ সুদে ঋণ নিয়ে কৃষক মসলা জাতীয় পণ্য চাষাবাদ করার সুযোগ পাচ্ছেন। মোবাইল ফোনের মাধ্যমে কৃষির অনেক সমস্যা সমাধান করে কৃষক অধিক ফসল উৎপাদন করতে পারছেন।

শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি আমলে একটি মোবাইল ফোনের দাম ছিল এক লাখ ৩০ হাজার টাকা। আমরা সেই মোবাইল ফোন কমদামে মানুষের হাতে পৌঁছাতে সক্ষম হয়েছি। তখন শুধু মোবাইলের দামই বেশি ছিল না। কল করতেও মোটা অংকের টাকা খরচ হতো। কল করলেও ১০টাকা ধরলেও ১০টাকা খরচ হতো। এখন সে অবস্থা নেই। এখন গ্রামের একজন দরিদ্র মানুষও মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে পারছেন। মোবাইল ফোনে কৃষি বিষযক পরামর্শ নিয়ে বাড়তি ফসল উৎপাদন করতে পারছেন।

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত ও সমৃদ্ধ দেশ গড়তে চাই। এজন্য প্রতিটি সেক্টরে কাজ করতে হবে। ভিক্ষুক নয়, জাতি হিসেবে আমরা বিশ্ব দরবারে মাথা উচুঁ করে বাঁচতে চাই।