ভাসানী বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যালামনাই এসোসিয়শনের আহবায়ক কমিটি গঠন

ভাসানী বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যালামনাই এসোসিয়শনের আহবায়ক কমিটি গঠন

ছবি: আনন্দঘন মুহূর্তে মাননীয় ভিসি সহ মাভাবিপ্রবির প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা
নিজস্ব প্রতিবেদক :

মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০০৩-০৪ সেশনের শিক্ষা কার্যক্রমের পর থেকে দীর্ঘ ১ যুগ পার হয়ে গেলেও সাবেক ছাত্রছাত্রীদের একটি প্লাটফরমে নিয়ে আসা বা একত্রে ক্যাম্পাসের মঙ্গলের জন্য কিছু করার সুযোগ ছিল না, শুধু সুনির্দিষ্ট সংগঠনের অভাবে। তাই দীর্ঘদিনের দাবি ছিল অ্যালামনাই এসোসিয়েশন গঠনের যেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থীরা জুনিয়র ছাত্রছাত্রী তথা বিশ্ববিদ্যালয়ের মানোন্নয়নে নিজেদের মেধা ও যোগ্যতা দিয়ে ভূমিকা রাখতে পারেন। শুধু দেশে নয় দেশের গন্ডি পেরিয়ে বিশ্ব দরবারে ভাসানী বিশ্ববিদ্যালয়ের গৌরব, ঐতিহ্য ও সুনামকে ছড়িয়ে দেওয়ার প্রয়াসে অ্যালামনাই এসোসিয়েশন গঠনের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। সেই সব লক্ষ্যকে সামনে নিয়ে গত ১৬ ডিসেম্বর ধানমন্ডির একটি রেঁস্তোরায় শতাধিক সাবেক ছাত্র-ছাত্রীর উপস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. মো. আলাউদ্দিন কে প্রধান উপদেষ্টা করে তিন সদস্যের আহবায়ক কমিটি প্রদান করা হয়। কমিটির আহবায়ক হিসেবে মনোনয়ন দেওয়া হয় ফয়সাল হক (জসি)কে। জনাব ফয়সাল হক বিসিএস (প্রশাসন) ক্যাডারের সদস্য হিসেবে সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট পদে ২০১৪ সালে চাকুরিতে যোগদান করেন। বর্তমানে তিনি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের a2i প্রোগ্রামে সংযুক্ত আছেন। তিনি মাভাবিপ্রবির সিপিএস বিভাগের ১ম ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন।যুগ্ম আহবায়ক হিসেবে দায়িত্ব প্রদান করা হয় এফটিএনএন বিভাগের ১ম ব্যাচের শিক্ষার্থী জনাব মো. মাহবুব হাসান ও সিএসই বিভাগের ৩য় ব্যাচের শিক্ষার্থী জনাব মো. হাসান বখতিয়ারকে।

উপস্থিত সদস্যদের সর্বসম্মত সিদ্ধান্তক্রমে আহবায়ক কমিটি গঠন করা হয়। দায়িত্ব প্রাপ্ত তিনজনকে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের দায়িত্ব প্রদান করেন প্রধান উপদেষ্টা। আহবায়ক কমিটির প্রথম কার্যক্রম হিসেবে আসন্ন পহেলা বৈশাখে ক্যাম্পাসে সাবেক ছাত্রদের একটি মিলনমেলা আয়োজন এবং ঐ দিনি পূর্ণা্ঙ্গ কমিটি গঠনের উদ্দেশ্যে কাউন্সিল অুনষ্ঠানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।


উক্ত অনুষ্ঠানটি একটি মিলনমেলা হিসেবে পরিণতি পেয়েছিল, বিভিন্ন বিভাগের বিভিন্ন বর্ষের সাবেক শিক্ষার্থীরা অনুষ্ঠানটিকে বিশেষ মর্যাদা দিয়েছিল, প্রাণের স্পন্দনে মেতে উঠেছিলেন সবাই। ক্যাম্পাসে কাটানো সময়গুলোর স্মৃতিচারণ করে সকলেই আবেগতাড়িত হয়ে পড়েন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ম ব্যাচের ছাত্র মো. আরিফুর রহমানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে ৭টি বিভাগের (প্রতিষ্ঠাকালিন চালু)শিক্ষার্থীরা তাদের মনোভাব তুলে ধরেন অ্যালামনাই এসোসিয়শনের যৌক্তিকতা তুলে ধরে। প্রত্যেকেই তাঁদের বক্তব্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতি নিজেদের ভাবাবেগ এবং পরিকল্পনার কথা তুলে ধরেন। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে লাইফ সায়েন্স অনুষদের ডিন ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর প্রফেসর ড. মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় হলো নিউক্লিয়াসের মত, ছাত্ররা যেখানেই থাকুক না কেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতি ভাবাবেগ কোনদিন কমে না। বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম এবং উন্নয়নের অংশীদার হতে প্রাক্তন ছাত্রদের অ্যালামনাই এসোসিয়েশন অত্যাবশ্যক।বিজ্ঞান অুনষদের ডিন ড. খাদেমুল ইসলাম বলেন, ছাত্রদের ঐক্যবদ্ধ থাকা এবং ক্যাম্পাসের সুনাম বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দিতে অ্যালামনাই এসোসিয়শনের বিকল্প নেই। প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. আলাউদ্দিন বলেন: মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় মানবিক মানুষ হিসেবে নিজেদের গড়ে তুলতে হবে। বাঙালি জাতি গৌরবের জাতি, বীরের জাতি, ভাষার জন্য যে জাতি রক্ত দিয়েছেন, স্বাধীনতার জন্য রক্ত দিয়েছেন যে জাতি, সে জাতির সাফল্য অবধারিত। মেধা, সততা আর মুক্তবুদ্ধির চর্চা করার মাধ্যমেই উন্নয়নের স্রোতধারা অব্যাহত রাখতে হবে, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার প্রত্যয়ে সকলকে একযোগে কাজ করতে হবে। পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের শ্রী বৃ্দ্ধি করতে প্রাক্তন ছাত্রদের একত্রিত হওয়ার কোন বিকল্প নেই বলে তিনি ‍উল্লেখ করেন। পাশ করা ছাত্রদেরকে নিজের সন্তান উল্লেখ করে যে কোন সময়ে অভিভাবক হিসেবে পাশে থাকারও প্রতিশ্রুতি দেন মাননীয় উপাচার্য।


সমাপনী বক্তব্যে গঠিত কমিটির আহবায়ক ফয়সাল হক সবাইকে্ উপস্থিত হওয়ার জন্য ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। সকলকে ঐক্যবদ্ধ ভাবে ক্যাম্পাসের সার্বিক উন্নয়নের জন্য কাজ করার অনুরোধ জানান। কারণ, ক্যাম্পাসের মাধ্যমে প্রাক্তনদের পরিচয় নির্ধারিত হয়ে থাকে বলে বিবৃতি দেন। পাশাপাশি কমিটি গঠনে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল বিভাগের প্রতিনিধি অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়টি তিনি উল্লেখ করেন। পরিশেষে সকলকে ধন্যবাদ দিয়ে আলোচনা সভার সমাপ্তি টানেন সঞ্চালক।