পারলোনা বাংলাদেশ : তীরে এসে ডুবলো তরী

পারলোনা বাংলাদেশ : তীরে এসে ডুবলো তরী

স্পোর্টস ডেক্স :  শেষ পর্যন্ত পেরে উঠলো না বাংলাদেশের যুবারা। যেন তীরে এসে তরী ডুবালো মেহেদী হাসান মিরাজের দলটি। ব্যাটিং মোটামুটি সাধারণ মানের হলেও বোলিং ও ফিল্ডিংয়ের কারণেই এবারের টুর্ণামেন্টের দ্বিতীয় সেমিফাইনালে হেরে ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে হেরে গেছে স্বাগতিক বাংলাদেশে। ফলে স্বপ্নের বিশ্বজয় অধরাই থেকে গেলো বাংলাদেশের। টস জিতে ব্যাট করতে নেমে অধিনায়ক মিরাজের ৬০ আর সাইফউদ্দিনে ৩৬ রানের দুটি কার্যকর ইনিংসে বাংলাদেশও তাই লড়াইয়ের পুঁজি পেয়েছিল। অনূর্ধ্ব-১৯ বা যুব বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে শেষ বলে অলআউট হওয়ার আগে ২২৬ রান তুলেছিল বাংলাদেশ। ২২৭ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নামার পর শিমরন হেটমার ও সমর স্প্রিঞ্জারের দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ের কাছে যেন অসহায় আত্মসমর্পন করলো টাইগার বোলাররা। ফলাফল- ৩ উইকেটের নিশ্চিত হার। স্বপ্নভঙ্গ বাংলাদেশের আর আগামী ১৩ ফেব্রুয়ারি রবিবার ভারতের সাথে ফাইনালে পৌঁছে গেলো ওয়েস্ট ইন্ডিজের যুব দলটি।

আইসিসি অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়ে স্বপ্নের ফাইনালে পৌঁছাতে টস জিতে আগে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন টাইগারদের দলপতি মেহেদি হাসান মিরাজ। মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে যুবাদের হয়ে ব্যাটিং উদ্বোধন করতে নামেন ২৬ ম্যাচ খেলা পিনাক ঘোষ ও ৩৩ ম্যাচ খেলা সাইফ হাসান। ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুতেই বেশ বড় ধাক্কা খায় স্বাগতিক বাংলাদেশ। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারের শেষ বলে পিনাক ঘোষ কোনো রান করার আগেই বিদায় নেন। কেমার হোল্ডারের লাফিয়ে উঠা বলে বাউন্ডারি লাইনে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ১০ মোকাবেলা করা পিনাক। দলীয় ১০ রানের মাথায় প্রথম উইকেটের পতন ঘটে।

দলীয় ১০ রানের মাথায় টাইগার যুবাদের ওপেনার পিনাক ঘোষ ফিরে গেলে ব্যাট হাতে নামেন ৪২ ম্যাচ খেলা জয়রাজ শেখ। ইনিংসের সপ্তম ওভারের প্রথম বলে বিদায় নেন সাইফ হাসান। জোসেফের বলে স্কয়ার লেগে গোলির হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরার আগে সাইফ ১৬ বলে করেন ১০ রান। ২ ওপেনারকে হারিয়ে খেলতে থাকা বাংলাদেশ ইনিংসের ১৩তম ওভারে তৃতীয় উইকেট হারায়। রায়ান জনের বলে বিদায় নেন নাজমুল হোসেন শান্ত। মিডউইকেটে ক্যাচ দিয়ে ফেরার আগে তার ব্যাট থেকে আসে ১১ রান। ২৪ বল মোকাবেলা করে একটি বাউন্ডারি পান শান্ত। এর আগে বিদায় নেন পিনাক ঘোষ ও সাইফ হাসান। দলীয় ২৭ রানের মাথায় দুই ওপেনারকে হারায় স্বাগতিকরা।
দলীয় ৫৮ রানে টপঅর্ডারের তিন ব্যাটসম্যানকে হারিয়ে বেশ ভালোই খেলছিল টাইগার যুবারা। উইকেটে সেট ব্যাটসম্যান জয়রাজ শেখ ও জাকির হাসান ৩০ রানের জুটিও গড়েন।

তবে ইনিংসের ২২তম ওভারে স্প্রিংগারের ভেতরে আসা একটি বলে ইনসাইডএজ হয়ে বিদায় নেন জয়রাজ। আউট হওয়ার আগে ৫৪ বলে ৫টি চারের সাহায্যে ৩৫ রান করেন তিনি।

উইকেটে অপরাজিত থেকে দলের রানের চাকা ঘোরানোর দায়িত্ব পালন করতে থাকা দলপতি মেহেদি হাসান মিরাজ ও জাকির হাসানের জুটি ভাঙে ইনিংসের ২৮তম ওভারে। কেমার হোল্ডারের বলে বোল্ড হয়ে ফেরেন উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান জাকির হাসান। বিদায়ের আগে ৪৪ বলে ২৪ রান করেন তিনি। মেহেদির সঙ্গে স্কোরবোর্ডে আরও ২৫ রান যোগ করেন জাকির। দলীয় ১১৩ রানের মাথায় যুবাদের পঞ্চম উইকেটের পতন ঘটে। ইনিংসের ৪৩তম ওভারে নিজের ৬৩তম বলে অর্ধশতকের দেখা পান মেহেদি হাসান মিরাজ। আইসিসির মেগা ইভেন্টে এটি তার তৃতীয় হাফসেঞ্চুরি।

দলীয় ১১৩ রানের মাথায় পিনাক ঘোষ, সাইফ হাসান, জয়রাজ শেখ, নাজমুল হোসেন শান্তর পর জাকির হাসান বিদায় নিলে যুবাদের দলপতি মেহেদি হাসান মিরাজের সঙ্গে উইকেটে জুটি গড়েন অলরাউন্ডার মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন। এ জুটি থেকে আরও ৮৩ রান আসে। ৪৬তম ওভারে মিরাজ অর্ধশতক হাঁকিয়ে বিদায় নেন। পরের বলেই বিদায় নেন সাইফুদ্দিন। সেই ওভারের তৃতীয় বলে মিরাজকে ফেরান কেমো পল।

ফ্রিউয়ের তালুবন্দি হওয়ার আগে টাইগার দলপতি করেন ৬০ রান। তার ৭৪ বলের ইনিংসে ছিল ৭টি বাউন্ডারি। পরের বলেই বোল্ড হন ৩৬ রান করা সাইফুদ্দিন। ৫৫ বল মোকাবেলা করে তিনি এ ইনিংসটি সাজান। ৬ বলে মাত্র ৩ রান করে বোল্ড হন সাঈদ সরকার। কেমো পল ফেরান তাকেও। শেষ দিকে মোসাব্বেক হোসেন ১৪ রানে বিদায় নিলেও ১০ রানে অপরাজিত থাকেন মেহেদি হাসান রানা।