গ্যাস ট্রান্সমিশন কোম্পানি লি. সখীপুরে ধান্ধাবাজির সেই ঘরগুলো উচ্ছেদ

গ্যাস ট্রান্সমিশন কোম্পানি লি. সখীপুরে ধান্ধাবাজির সেই ঘরগুলো উচ্ছেদ

জুয়েল রানা, সখীপুর প্রতিনিধি :  টাঙ্গাইলের সখীপুরে বেশি টাকা পাওয়ার লোভে তিতাস গ্যাস পাইপলাইনের পাশে ফসলি জমিতে অবৈধভাবে গড়ে ওঠা সেই ঘরগুলোকে উচ্ছেদ করা হয়েছে। হাইকোর্টের নির্দেশে তিন দিনব্যাপি অভিযান চালিয়ে গতকাল বুধবার বিকেলে উচ্ছেদ কার্যক্রম শেষ করেছেন টাঙ্গাইল জেলা প্রশাসন। টাঙ্গাইলের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তারিকুল আলমের নেতৃত্বে পুলিশ ও জিটিসিএল যৌথভাবে এ অভিযান পরিচালনা করেন। অভিযানে ৪০ জন শ্রমিক ও একটি বুলড্রেজার মেশিন ব্যবহার করা হয়। উচ্ছেদ অভিযানে উপস্থিত ছিলেন, সখীপুরের ইউএনও এস এম রফিকুল ইসলাম, সহকারী কমিশনার (ভূমি) আরিফা সিদ্দিকা, জেলা প্রশাসক কাার্যালয়ের সার্ভেয়ার মতিয়ার রহমান।



শ্রীপুরের ধনুয়া থেকে টাঙ্গাইলের কালিহাতীর এলেঙ্গা পর্যন্ত  ৫২ কিলোমিটার তিতাস গ্যাস পাইপ লাইনের পাশ দিয়ে জিটিসিএল (গ্যাস ট্রান্সমিশন কোম্পানি লি.) গ্যাস লাইন স্থাপনের একটি প্রকল্প পাস হওয়ার খবর পেয়ে ওই লাইনের নকশা অনুযায়ী ক্ষতিপূরণ পাওয়ার লোভে একটি কুচক্রীমহল কমদামের টিন দিয়ে জানালা-দরজাবিহীন অস্থায়ী ঘর নির্মাণ করেন। গত এপ্রিল-মে মাসে সখীপুর উপজেলার কালমেঘা, তালেপাবাদ কালমেঘা, কালিদাস, গজারিয়া ও সিলিমপুর গ্রামের ফসলি জমিতে হঠাৎ করে অবৈধভাবে শত শত স্থাপনা গড়ে তোলেন। ওইসব প্রতিটি স্থাপনার দৈর্ঘ কমপক্ষে ৫০০ ফিট ও প্রস্থ ১০০ ফিট।



খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ঢাকা উত্তরার হাজি মোস্তফা নামের এক ব্যক্তির পরিকষ্পনা ও নির্দেশে তিতাস গ্যাস পাইপলাইনের পাশ দিয়ে জিটিসিএল গ্যাস পাইপলাইনের প্রস্তুতকৃত নকশা অনুযায়ী ওই প্রস্তুতকৃত নকশার জমির ওপর দিয়ে অবৈধভাবে শত শত স্থাপনা নির্মাণ করা হয়। জমি অধিগ্রহণের সময় ওইসব স্থাপনার ক্ষতিপূরণ তুলতে দালালচক্রের হোতা হাজি মোস্তফার নেতৃত্বে জানালা-দরজাবিহীন কমদামি টিন দিয়ে ঘরগুলো নির্মাণ করা হয়। ওই ঘরগুলো নির্মাণের অর্থদাতা হাজি মোস্তফা কামাল।



জানতে চাইলে হাজি মোস্তফা কামাল বলেন, ‘আমরা টাকা দিয়ে মালিকদের কাছ থেকে জমি লিজ নিয়ে সেখানে ঘর তুলেছি। আমরা সরকারের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে রিট আবেদন করেছি। আমরা আদালতকে জানিয়েছি, আমাদের জমির ঘর সরকার ভাঙতে পারে না। অবশ্যই আমাদেরকে ঘরের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।’



 অভিযানে নেতৃত্বদানকারী টাঙ্গাইলের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. তারিকুল আলম জানান, ‘কোনো বাধা-বিপত্তি ছাড়াই পুলিশ ও জিটিসিএলের যৌথ অভিযানের মাধ্যমে গত তিন দিনে সখীপুরের অবৈধ সব স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে।’



টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক মো. মাহবুব হোসেন জানান, ‘সরকারি টাকা অবৈধ বরাদ্দ নেওয়ার জন্য স্থাপনাগুলো নির্মাণ করেছিল। শুধু অবৈধ ঘরগুলো নয়, কুচক্রীমহলের স্বপ্নও উচ্ছেদ হয়েছে। এ অভিযান চলমান থাকবে।’