কথিত ‘বন্দুকযুদ্ধে’ একরাতে নিহত ৩

কথিত ‘বন্দুকযুদ্ধে’ একরাতে নিহত ৩

টাঙ্গাইলদর্পণডটকম ডেক্স : রাজধানী ঢাকাসহ তিন জেলায় একরাতে র‌্যাব ও পুলিশের সঙ্গে কথিত ‘বন্দুকযুদ্ধে’ তিন ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। রবিবার দিবাগত রাতে পৃথক ঘটনায় নিহতরা হলেন- ঢাকার উত্তরখানে রাজিব (৩৫), গাজীপুরে রফিকুল ইসলাম (৪০) ও ঝিনাইদহে কামাল হোসেন (৪৫)।

এদের মধ্যে রাজধানী ঢাকার উত্তরখানে পুলিশের সঙ্গে আর গাজীপুর ও ঝিনাইদহে নিহতের ঘটনা ঘটেছে র‌্যাবের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে। র‌্যাব-পুলিশের দাবি, নিহতরা সন্ত্রাসী। ঘটনার সময় আগ্নেয়াস্ত্র ও গুলি উদ্ধার করার হয়েছে।

রাজধানীর উত্তরখানে পুলিশের সঙ্গে কথিত ‘বন্দুকযুদ্ধে’ রাজিব (৩৫) নামের এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন।

রবিবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে এই বন্দুকযুদ্ধ হয়। পুলিশের দাবি, নিহত রাজিব ডাকাত দলের সদস্য।

কোতোয়ালি থানার ওসি আবুল হাসান বলেন, নিহত রাজিব হত্যাসহ বিভিন্ন মামলার আসামি। কিছুদিন আগে তাকে আটক করা হয়। পরে তার স্বীকারোক্তিতে অন্য আসামিদের ধরতে রাতে অভিযান চালানো হয়।

এ সময় অন্য সন্ত্রাসীরা তাকে ছাড়িয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। তখন উভয়ের মধ্যে বন্দুকযুদ্ধ হয়। এতে রাজিব গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান।

এ সময় ঘটনাস্থল থেকে চার রাউন্ড গুলি ও একটি পিস্তল উদ্ধার করা হয়। লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসাপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে বলেও জানান ওসি।

গাজীপুর প্রতিনিধি জানান, জেলার ভাওয়াল জাতীয় উদ্যান এলাকায় র‌্যাবের সঙ্গে কথিত ‘বন্দুকযুদ্ধে’ রফিকুল ইসলাম (৪০) নামে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন।

রবিবার রাতে ভাওয়াল জাতীয় উদ্যানের কুমারখাদা এলাকায় এ বন্দুকযুদ্ধ হয়। নিহত রফিকুল ওই এলাকায় চিহ্নিত সন্ত্রাসী বলে দাবি করেছে র‌্যাব।

র‌্যাবের সালনা ক্যাম্পের কমান্ডার জিয়াউর রহমান বলেন, রাতে র‌্যাবের টহল টিমের উপর একদল সন্ত্রাসী অতর্কিত হামলা চালায়। র‌্যাব পাল্টা গুলি ছোড়ে। এ সময় রফিকুল গুলিবিদ্ধ হন।

এ ঘটনায় দুই র‌্যাব সদস্য আহত হয়েছেন। ঘটনাস্থল থেকে একটি বিদেশি পিস্তল, ম্যাগজিন ও গুলি উদ্ধার হয়েছে।

নিহত রফিকুলের বিরুদ্ধে অস্ত্র ও চাঁদাবাজির কয়েকটি মামলা রয়েছে বলেও জানান র‌্যাব কর্মকর্তা জিয়াউর রহমান।

রফিকুলের লাশ রবিবার রাতেই গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায় হোতাপাড়া ফাঁড়ির পুলিশ।

ওই হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা ডা. আব্দুস সালাম সরকার বলেন, রাত আড়াইটার দিকে গুলিবিদ্ধ লাশটি জরুরি বিভাগে আনা হয়। তার পেটের বামপাশে গুলির আঘাত রয়েছে।

মা-মেয়েকে পুড়িয়ে হত্যার আসামি নিহত

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি জানান, জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার ফারাসপুরে ঘুমন্ত মা-মেয়েকে পেট্রোল ঢেলে পুড়িয়ে হত্যা মামলার প্রধান আসামি কামাল হোসেন (৪৫) র‌্যাবের সঙ্গে কথিত ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হয়েছেন।

রবিবার দিবাগত রাত তিনটার দিকে উপজেলার বারোবাজার এলাকার কড়ইতলায় এই বন্দুকযুদ্ধ হয়।

র‌্যাব-৬ ঝিনাইদহ ক্যাম্পের কমান্ডার মেজর সুরুজ মিয়া বলেন, রাতে র‌্যাবের একটি টহলদল ঝিনাইদহ-যশোর সড়কের জেলার কালীগঞ্জের কড়ইতলা এলাকায় একটি মোটর সাইকেলের গতিরোধ করে।

এ সময় মোটরসাইকেলে থাকা তিন সন্ত্রাসী র‌্যাবকে লক্ষ্য করে গুলি ছুড়তে থাকে। র‌্যাবও পাল্টা গুলি চালালে উভয়ের মধ্যে বন্দুকযুদ্ধ শুরু হয়। কিছুক্ষণ পর দুইজন মোটরসাইকেল নিয়ে পালিয়ে গেলেও অপর সন্ত্রাসীকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পাওয়া যায়।

ঘটনাস্থল থেকে একটি বিদেশি পিস্তল ও এক রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়। পরে তাকে উদ্ধার করে কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক কামাল হোসেনকে মৃত ঘোষণা করেন।

কালীগঞ্জ থানার ওসি আনোয়ার হোসেন বলেন, রাতে উপজেলার বারোবাজার এলাকার কড়ইতলায় র‌্যাবের সঙ্গে সন্ত্রাসীদের বন্দুকযুদ্ধ হয়। এতে কামাল মারা যান।

কামালের পরিচয় সম্পর্কে তিনি জানান, নিহত কামালের বাড়ি যশোরের লেবুতলায়। গত ২০ অক্টোবর কালীগঞ্জের ফারাসপুরে মা তাছলিমা খাতুন (৪৫) ও মেয়ে তাছমিয়া আক্তারকে (১৮ মাস) পেট্রোল ঢেলে পুড়িয়ে হত্যা মামলার প্রধান আসামি তিনি।

ওই ঘটনায় মামলা করার পর থেকেই পুলিশ তাকে খুঁজছিল। কামালের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ঝিনাইদহ সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় একটি মামলা করা হবে বলেও জানান ওসি।