নয়াদিল্লিতে কালামের মরদেহ গ্রহণ করবেন মোদি

নয়াদিল্লিতে কালামের মরদেহ গ্রহণ করবেন মোদি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ভারতের সাবেক রাষ্ট্রপতি ও খ্যাতিমান পরমাণুবিজ্ঞানী আবুল পাকির জয়নাল আবেদিন আবদুল কালামের মরদেহ আসামের গুয়াহাটি থেকে রাজধানী নয়াদিল্লি নেওয়া হচ্ছে। মঙ্গলবার তিনজন শীর্ষ সরকারি কর্মকর্তাকে নিয়ে বিমানবন্দরে তার মরদেহ গ্রহণ করবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।

গতকাল সোমবার ভারতের মেঘালয় রাজ্যের শিলং শহরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ইন্তেকাল করেন আবদুল কালাম। তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৪ বছর। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি ছিলেন অবিবাহিত। খুব সহজ সরল অনাড়ম্বর জীবনযাপন করতেন আবদুল কালাম।

গতকাল সন্ধ্যায় শিলংয়ে ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব ম্যানেজমেন্টে বি-স্কুলের শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে ‘লিভেবেল প্ল্যানেট আর্থ’ শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে বক্তৃতা দেওয়ার সময় হঠাৎ পড়ে যান আবদুল কালাম।

সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে নেওয়া হয় হাসপাতালে। সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়। আবদুল কালামের মৃত্যুতে ভারতজুড়ে শোক বিরাজ করছে। ঘোষণা করা হয়েছে সাত দিনের রাষ্ট্রীয় শোক। মঙ্গলবার এ বিষয়ে নয়াদিল্লিতে মন্ত্রিসভার জরুরি বৈঠক আহ্বান করা হয়েছে। সেখানে তাঁর দাফনসহ পরবর্তী প্রক্রিয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

এদিকে, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং টুইট করে জানিয়েছেন, বিমানবন্দর থেকে আবদুল কালামের মরদেহ দিল্লিতে তার বাসভবনের সামনে বিকেল তিনটায় সর্বসাধারণের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য রাখা হবে।

তামিলনাড়ুর রামেশ্বরমে ১৯৩১ সালের ১৫ অক্টোবর জন্ম আবদুল কালামের। ছোট্ট শহরে এক মৎস্যজীবী পরিবারে খুব দারিদ্র্যের মধ্যে জন্ম নিলেও তাঁর স্বপ্ন ছিল অনেক বড়। আর এই স্বপ্নের অনেকটাই পূরণ করে দেখিয়েও গেছেন তিনি।

২০০২ থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত ভারতের ১১তম রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করেন আবদুল কালাম। তিনি হয়ে ওঠেন ‘জনতার রাষ্ট্রপতি’। তিনি ছিলেন ভারতের তৃতীয় মুসলিম রাষ্ট্রপতি। দেশটির সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা ‘ভারতরত্ন’ ছাড়াও ‘পদ্মভূষণ’ ও ‘পদ্মবিভূষণ’ খেতাবেও ভূষিত হন আবদুল কালাম।

বিমান প্রকৌশলে পড়াশোনা করে ভারতের প্রথম মহাকাশযান তৈরিতে মুখ্য ভূমিকা রাখেন আবদুল কালাম। ওই মহাকাশযান দিয়েই ১৯৮০ সালে দেশটি প্রথম ক্ষেপণাস্ত্র রোহিনী উৎক্ষেপণ করে। ১৯৯৮ সালে ভারতের পোখরান-২ পারমাণবিক অস্ত্রের পরীক্ষার পেছনেও প্রধান ভূমিকা রেখেছিলেন তিনি।

১৯৭৪ সালে মূল পরীক্ষা চালানোর পর দীর্ঘ ২৪ বছরে ভারতের এটাই ছিল প্রথম সফল পারমাণবিক পরীক্ষা। দেশটিকে পরমাণু শক্তিধর দেশে পরিণত করার জন্য যিনি নিরলস চেষ্টা চালিয়ে গেছেন, পরে সেই তিনিই পরমাণু অস্ত্রমুক্ত বিশ্ব গড়ার প্রচারে সরব ছিলেন।

সূত্র: এনডিটিভি