১৯ দিন পর শতভাগ যাত্রী নিয়ে ছাড়ছে ট্রেন
১৯ দিন পর শতভাগ যাত্রী নিয়ে ছাড়ছে ট্রেন
মহামারি করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে ১৯ দিনের কঠোর বিধিনিষেধ শেষে সারাদেশে ফের ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে। বুধবার (১১ আগস্ট) সকাল থেকে শতভাগ যাত্রী নিয়ে গন্তব্যের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাচ্ছে ট্রেন।
বাংলাদেশ
নিজস্ব প্রতিবেদকমহামারি করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে ১৯ দিনের কঠোর বিধিনিষেধ শেষে সারাদেশে ফের ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে। বুধবার (১১ আগস্ট) সকাল থেকে শতভাগ যাত্রী নিয়ে গন্তব্যের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাচ্ছে ট্রেন।
কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে দেখা গেছে, ভোর পৌনে ৫টায় ময়মনসিংহের উদ্দেশে ছেড়ে যায় বলাকা কমিউটার। এর পর ভোর ৫টায় তুরাগ কমিউটার এবং ৫টা ৪০ মিনিটে জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ বাজারের উদ্দেশে ছেড়ে যায় দেওয়ানগঞ্জ কমিউটার ট্রেন। প্রথম আন্তঃনগর ট্রেন হিসেবে সকাল ৬টা ২০ মিনিটে সিলেটের উদ্দেশে পারাবত এক্সপ্রেস ছেড়ে যায়। আরও যেসব ট্রেন ছেড়ে গেছে সেগুলো হল- সোনার বাংলা এক্সপ্রেস, তিস্তা এক্সপ্রেস এবং মহানগর প্রভাতি।
এ বিষয়ে কমলাপুর রেল স্টেশনের স্টেশন মাস্টার রফিকুল ইসলাম বলেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে শতভাগ যাত্রী নিয়ে সীমিত পরিসরে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে। ঢাকা থেকে ২৫ জোড়া আন্তঃনগর এবং ১২ জোড়া মেইল-কমিউটার ট্রেন চলাচল করছে। আর সারাদেশ থেকে ৩৮ জোড়া আন্তঃনগর এবং ২০ জোড়া মেইল-কমিউটার ট্রেন চলাচল করছে।
তিনি আরও বলেন, স্টেশন ধোয়া-মোছার কাজ শেষ হয়েছে এবং জীবাণুনাশক দিয়ে ট্রেনের ভেতরে এবং বাইরে পরিষ্কার করা হয়েছে। আমরা শতভাগ স্বাস্থ্যবিধি মেনে ট্রেন পরিচালনা করবো।
সময় মতো ট্রেন চলায় খুশি যাত্রীরাও। আমির নামে তিস্তা এক্সপ্রেসের এক যাত্রী বলেন, আজ সব কিছুই অনেক গোছাল। প্রতিটি যাত্রীর হাত হেক্সিসল দিয়ে জীবাণুমুক্ত করছে কর্মীরা। সবচেয়ে খুশির খবর, ট্রেন ছাড়ছে সময়মতো এ ধারা অব্যাহত রাখতে হবে।
রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, বুধবার সকাল থেকে ৩৮ জোড়া আন্তঃনগর ট্রেন এবং ২০ জোড়া কমিউটার ট্রেন চলাচল করবে। সবগুলোতেই আগের ভাড়াই নেয়া হচ্ছে।
যেসব আন্তঃনগর ট্রেন চলছে
সুবর্ণ এক্সপ্রেস, মহানগর গোধূলি তূর্ণা, মহানগর প্রভাতী/তূর্ণা, তিস্তা এক্সপ্রেস, যমুনা এক্সপ্রেস, কিশোরগঞ্জ এক্সপ্রেস, মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস, উপকুল এক্সপ্রেস, পারাবত এক্সপ্রেস, জয়ন্তিকা/উপবন এক্সপ্রেস, মেঘনা এক্সপ্রেস, অগ্নিবীনা এক্সপ্রেস, জয়ন্তিকা/উপবন এক্সপ্রেস, পাহাড়িকা/উদয়ন এক্সপ্রেস, সোনার বাংলা এক্সপ্রেস, বিজয় এক্সপ্রেস, পাহাড়িকা/উদয়ন এক্সপ্রেস, হাওর এক্সপ্রেস, একতা এক্সপ্রেস, দ্রুতযান এক্সপ্রেস, বনলতা এক্সপ্রেস, পদ্মা এক্সপ্রেস, সুন্দরবন এক্সপ্রেস, চিত্রা এক্সপ্রেস, রংপুর এক্সপ্রেস, লালমনি এক্সপ্রেস, নীলসাগর এক্সপ্রেস, রূপসা এক্সপ্রেস, মধুমতি এক্সপ্রেস, তিতুমির এক্সপ্রেস, সাগরদাড়ী এক্সপ্রেস, ঢালারচর এক্সপ্রেস, টুঙ্গীপাড়া এক্সপ্রেস, বরেন্দ্র এক্সপ্রেস, সীমান্ত এক্সপ্রেস, কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেস, বাংলাবান্ধা এক্সপ্রেস এবং পঞ্চগড় এক্সপ্রেস।
যেসব মেইল, লোকাল ও কমিউটার ট্রেন চলছে
ঢাকা/চট্টগ্রাম, কর্ণফুলী কমিউটার, সাগরিকা কমিউটার, বলাকা কমিউটার, জামালপুর কমিউটার, সুরমা মেইল, তিতাস কমিউটার, দেওয়ানগঞ্জ কমিউটার, ময়মনসিংহ এক্সপ্রেস, মহুয়া কমিউটার, ঢাকা কমিউটার, রকেট মেইল, মহানন্দা এক্সপ্রেস, পদ্মরাগ কমিউটার, উত্তরা এক্সপ্রেস, রাজবাড়ী এক্সপ্রেস, বিরল কমিউটার, বগুড়া কমিউটার এবং কলেজ ট্রেন।
রেলওয়ের যাত্রীদের জন্য বিশেষ নির্দেশনা
কোনো প্রকার ভাড়া বৃদ্ধি করা হবে না। সব অগ্রীম টিকিট যাত্রার ৫ (পাঁচ) দিন আগে ক্রয় করতে পারবেন। অনলাইনে ক্রয়কৃত টিকিট ফেরত দেয়া যাবে না। কমিউটার ট্রেনের টিকিট যথারীতি নির্দিষ্ট বক্স কাউন্টার থেকে দেয়া হবে। আসনবিহীন টিকিট বিক্রয় বন্ধ থাকবে। ট্রেনে ভ্রমণ ইচ্ছুক যাত্রীদের নিজ নিজ টিকিট নিশ্চিত করেই কেবল ট্রেনে ভ্রমণের জন্য অনুরোধ করা হলো। টিকিটবিহীন কোনো যাত্রী স্টেশনে প্রবেশ বা ট্রেনে ভ্রমণ করতে পারবেন না। মাস্ক ব্যতীত কোনো যাত্রীতে স্টেশনে প্রবেশ বা ট্রেনে ভ্রমণ করতে দেয়া হবে না।
প্রসঙ্গত, করোনার প্রাদুর্ভাবের শুরুতে গত বছরের ২৫ মার্চ প্রথম যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল বন্ধের ঘোষণা দেয় সরকার। দুই মাসের বেশি সময় পর গত বছরের ৩১ মে আট জোড়া আন্তঃনগর ট্রেন চালু করা হয়। করোনার দ্বিতীয় ঢেউ ঠেকাতে চলতি বছরের ৫ এপ্রিল থেকে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল বন্ধ করা হয়। ৭ সপ্তাহ বন্ধ থাকার পর ২৪ মে থেকে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল শুরু হয়। এর পর আবারও ২৩ জুন থেকে বন্ধ ছিলো ট্রেন চলাচল। পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে ১৫ থেকে ২২ জুলাই পর্যন্ত যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল করে। পরে ২৩ জুলাই থেকে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
বাংলাদেশ জার্নাল/ওয়াইএ
from BD-JOURNAL https://www.bd-journal.com/bangladesh/170099/১৯-দিন-পর-শতভাগ-যাত্রী-নিয়ে-ছাড়ছে-ট্রেন