তিস্তার পানি আদায়ে জাতিসংঘে যাওয়ার আহ্বান ফখরুলের

তিস্তার পানি আদায়ে জাতিসংঘে যাওয়ার আহ্বান ফখরুলের

তিস্তার পানি আদায়ে জাতিসংঘে যাওয়ার আহ্বান ফখরুলের

রাজনীতি ডেস্ক :

তিস্তাসহ ৫৪টি অভিন্ন নদীর ন্যায্য হিস্যা আদায়ে সরকারকে জাতিসংঘে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

বুধবার বেলা ১১টায় জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দল আয়োজিত মানববন্ধনে তিনি এ আহ্বান জানান।

ভারতকে উদ্দেশ করে ফখরুল বলেন, আমাদেরকে পানির ন্যায্য হিস্যা দিতে হবে, আমরা কারও দয়া চাই না। আমাদের আইনসম্মত পাওনা দিতেই হবে।

তিনি বলেন, যেহেতু ভারতের সঙ্গে আমাদের কোনো চুক্তি নেই তাই তারা বর্ষার মৌসুমে তাদের বাঁধ খুলে দেয়। ফলে আমরা ক্ষতিগ্রস্থ হই। আবাদি জমি প্লাবিত হয়ে কৃষকরা চরম বিপাকে পড়েন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরের কথা উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, কিছু দিন আগে প্রধানমন্ত্রী ভারত সফরে গিয়ে অনেক সমঝোতা চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছেন। শুধু একটা বিষয়ে, যেটি আমাদের প্রাণের দাবি, যার উপর হাজার-কোটি মানুষের জীবন-জীবিকা নির্ভর করে, সেই তিস্তা নদীর পানির চুক্তি তিনি (প্রধানমন্ত্রী) করে আসতে পারেননি। শুধু তিস্তা নদীর পানি নয় ৫৪টি অভিন্ন নদীর পানির ব্যাপারেও কোনো চুক্তি করতে পারেননি।

অথচ গত কয়েক বছর ধরে তারা ক্ষমতায় আসার পরে যে বিষয়গুলো ছিল বাংলাদেশের জন্য ট্রামকার্ড, দরকষাকষির প্রধান মাধ্যম সেগুলোকে তিনি অবলিলায় ভারতের হাতে তুলে দিয়েছেন। ট্রানজিন দিয়েছেন, ভারত ব্যবসা-বাণিজ্য করছে কিন্তু আমরা এখন পর্যন্ত কিছুই পাইনি। তিনি (প্রধানমন্ত্রী) ভারত থেকে ফিরে এসে বলেছেন, পানি মাঙ্গা, ইলেকট্রিসিটি মিলা, কুছতো মিলা। আমাদের অবস্থা দাঁড়িয়েছে এখন সেই কুছ মিলার জায়গায়।

তিনি বলেন, সরকারের এই যে নতজানু মনোভাব। এই মনোভাব দিয়ে কোনা কিছু আদায় করা যায় না। এই সরকার ব্যর্থ হওয়ার একটিই কারণ তারা জনগণের দ্বারা নির্বাচিত নয়, জোর করে ক্ষমতায় বসে আছে। যারা তাদেরকে ক্ষমতায় টিকিয়ে রেখেছে তাদের কাছে তারা নিজেদের, জনগণের দাবি দাওয়াগুলো তুলে ধরতে পারছে না, দাবি আদায়ও করতে পারছে না। আমাদের নিজেদের যা প্রয়োজন তা নিজেদেরই আদায় করতে হবে।

এসময় বিএনপি মহাসচিব তিস্তা নদীসহ অভিন্ন ৫৪ নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা পেতে জাতিসংঘে এটিকে তুলে ধরতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি বলেন, জাতিসংঘকে সম্পৃক্ত করে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করুন। আমাদের দাবি প্রতিটি নদীর ন্যায্য হিস্যা আমাদের দিতে হবে। আমরা কোনো দয়া চাইছি না। আমাদের যেটা আইনগতভাবে পাওনা সেটি আমরা চাই।

হাওর অঞ্চলের মানুষের দুর্ভোগের কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, বন্যার পানিতে মানুষের সম্পদ নষ্ট হয়েছে। যেহেতু ভারতের সঙ্গে আমাদের চুক্তি নেই, যখন তাদের ওখানে বন্যা হয় তখন ভারত তাদের বাঁধগুলো খুলে দেয় আর আমরা প্লাবিত হই।

তিনি বলেন, আমরা যে আন্দোলন করছি এটি কোনো ব্যক্তির জন্য নয়, কোনো দলের জন্য নয়, এটি বাংলাদেশের মানুষের অধিকার আদায়ের আন্দোলন। এটি বাংলাদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষার আন্দোলন।

সরকারকে উদ্দেশ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আপনাদের শুভবুদ্ধির উদয় হোক। আপনারা নির্বাচন দিন। সেই নির্বাচন হতে হবে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে এবং একই সঙ্গে নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের মাধ্যমে।

জনগণকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, আসুন সব দলমত এক হয়ে জাতীয় স্বার্থে আন্দোলন করি।

মুক্তিযোদ্ধা দলের সাধারণ সম্পাদক সাদেক খানের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন মুক্তিযোদ্ধা দলের সিনিয়র সহ-সভাপতি আবুল হোসেন। এতে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলালসহ বিভিন্নস্তরের নেতারা বক্তব্য দেন।

সূত্র :  জাগোনিউজ২৪.কম।