-->
ওয়েবসাইট উন্নয়নের কাজ চলিতেছে, সাময়িক অসুবিধার জন্য আন্তরিকভাবে দুঃখিত...
বর্জ্য অপসারণে অব্যবস্থাপনার কবলে সাভার

বর্জ্য অপসারণে অব্যবস্থাপনার কবলে সাভার

বর্জ্য অপসারণে অব্যবস্থাপনার কবলে সাভার

বাংলাদেশ

সাব্বির হোসেন, সাভার প্রতিনিধি

রাজধানীর সন্নিকটে ঢাকা জেলার সাভার পৌরসভায় বর্জ্য অপসারণে অব্যবস্থাপনার কারণে দুর্ভোগ পোহাচ্ছে এলাকাবাসী। নির্দিষ্ট জায়গায় ময়লা ফেলতে না পেরে মহাসড়কের পাশে ভাগার তৈরী করেছে পরিচ্ছন্ন কর্মীরা। এ থেকে প্রতিনিয়ত দুর্গন্ধে রাস্তা চলাচলে সমস্যা হচ্ছে পথচারীদের। ছাড়াচ্ছে বিভিন্ন রোগ-জীবাণু। নিজস্ব ডাম্পিং ব্যবস্থা না থাকায় বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিয়ে বিপাকে রয়েছে পৌর কর্তৃপক্ষ। তবে, এ অবস্থার অবসানে প্রকল্প গ্রহণ করার কথা বলেছেন মেয়র হাজী আব্দুল গণি। 

অপরদিকে, পৌরসভার বাইরে গাবতলী থেকে নবীনগর ও নবীনগর থেকে চন্দ্রা মহাসড়কের পাশে অপরিকল্পিতভাবে প্রায় শতাধিক ময়লার ভাগার গড়ে উঠেছে। এতে করে ভাগারের পাশ্ববর্তী এলাকার মানুষের বসবাস ও চলাচলে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হচ্ছে। 

জানা গেছে, সাভার পৌরসভায় প্রতিদিন প্রায় দুইশ মেট্রিক টন ময়লা আবর্জনা তৈরি হয়। যা বাড়ি বাড়ি গিয়ে সংগ্রহ করার জন্য রয়েছে নির্ধারিত পরিচ্ছন্ন কর্মী। এরা পায়ে চালিত ভ্যান গাড়িতে করে ময়লা সংগ্রহ করে পৌরসভার ওয়ার্ডের কোন না কোন স্থানে জমা করে।

সেখান থেকে পৌরসভার গাড়ি এসে ময়লা ফেলতে নিয়ে যায় মহাসড়কের পাশে অথবা ব্যক্তি মালিকানা জায়গায়। এছাড়াও গার্মেন্টস কারখানার বর্জ্য, ট্যানারী, হাসপাতাল, শিল্প কারখানার বর্জ্যে সাভার, আশুলিয়ার পরিবেশ দুষিত হয়ে পরেছে বলে অভিযোগ সচেতন নাগরিকদের। 

দেখা গেছে, ঢাকা আরিচা মহাসড়কের পাশে কর্ণপাড়া, উলাইল, ডিপজল ফুডের সামনে, সাভার বাজার বাসস্ট্যান্ডের রাজ্জাকের কাঁচা বাজারের সামনে, রাজ্জাক প্লাজার সামনে, সিটি সেন্টারের সামনে নতুন ওভার ব্রীজের নিচে মহাসড়কের ওপর, বিরুলিয়া রোডের আইচানোয়াদ্দা ব্রিজের গোড়ায়, রাজাশন এলাকায়, ব্যাংক টাউন ব্রিজের গোড়ায়, গেন্ডা, পাকিজা, শিমুলতলা, রেডিও কলোনি, সিএনবি, শ্রীপুর এলাকায়, আইচা নোয়াদ্দা  রাজাশনে, আশুলিয়ার কয়েকটি পয়েন্টে মহাসড়কের ওপর পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের সংগ্রহ করা বর্জ্য ফেলা হয়। এসব বর্জ্য পরে গাড়ি করে অন্যত্র সড়িয়ে ফেলা হয়। 

সূত্র ও এলাকাবাসী জানায়, সাভারে শিল্প কারখানা ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থাকায় এখানে লক্ষ লক্ষ লোকের বসবাস। শুধুমাত্র সাভার পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডে আছে প্রায় ৮ লক্ষাধিক মানুষ। বর্জ্য অব্যবস্থাপনার কারণে পৌরসভার মানুষদের পোহাতে হয় চরম দুর্ভোগ। পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা প্রতিদিন আবর্জনা তুলে না নেয়ায় এ অবস্থার সৃষ্টি হচ্ছে। বাসা বাড়িতে বা ভবনের নিচে কয়েকদিন ময়লা জমে থাকায় তা থেকে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। 

সাভার পৌরসভার ১ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর রমজান আহমেদ জানান, বর্তমানে পরিকল্পনা করে বাসা-বাড়ির বর্জ্য সংগ্রহ করে তা অপসারণ করা হচ্ছে। আমরা আরো সেবা দিতে পরিকল্পনা গ্রহণ করেছি। এ নিয়ে যতটুকু সমস্যা রয়েছে তা আগামীতে থাকবেনা। 

সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সায়েমুল হুদা বলেন, বর্জ্য থেকে বিভিন্ন ধরনের রোগ ছড়াতে পারে। বর্জ্যের দূষণ থেকে পেটের পীড়া, চর্মরোগ, ডায়রিয়া, হেপাটাইটিস, ব্রঙ্কাইটিস, শ্বাসকষ্ট, আলসার, গ্যাস্ট্রিক এমনকি লিভার ও কিডনি নষ্ট হতে পারে। সাভার ও আশুলিয়ায় প্রাইভেট হাসপাতালের বর্জ্য অপসারণে সতর্কতা ও নির্দেশনা জরুরী। 

সাভার পৌরসভার মেয়র হাজী আব্দুল গণি বলেন, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিয়ে কিছু সমস্যা রয়ে যায়। নোটিশ দেয়ার পরেও অনেক শিল্প কারখানার মালিক বর্জ্য ফেলায় নিয়ম মানছেন না। সাধারণ জনগণকেও ময়লা আবর্জনা ও বর্জ্য ফেলতে সতর্ক হতে হবে। তারাও যত্রতত্র ময়লা ফেলে পৌরসভার ড্রেন বন্ধ করে ফেলছে। তারপরেও এ ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সেবা দিয়ে আসছি। আমাদের নিজস্ব কোন জায়গা না থাকায় বিচ্ছিন্নভাবে অন্য জায়গায় বর্জ্য ফেলতে হচ্ছে। এখানে জনসংখ্যার ঘনত্বও বেশী। তাই এ সমস্যা সমাধানে সরকারি ও বেসরকারিভাবে সহযোগীতা নিয়ে নিজস্ব ডাম্পিং ষ্টেশন করে সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের প্রকল্প এগিয়ে চলছে। এ প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে সাভার ও পাশ্ববর্তী এলাকার মানুষ উপকৃত হবে। তখন আমরা শতভাগ বর্জ্য অপসারণ করতে সক্ষম হবো।

বাংলাদেশ জার্নাল/এএম

© Bangladesh Journal


from BD-JOURNAL https://www.bd-journal.com/bangladesh/183297/বর্জ্য-অপসারণে-অব্যবস্থাপনার-কবলে-সাভার