শাকিলা তুবা’র তিনটি কবিতা
শাকিলা তুবা’র তিনটি কবিতা
পুড়ে গেছে ঢাকা শহর/ ঝুলন্ত স্বর্গ ব্যাবিলনের হঠাৎ মৃত্যু
শিল্প-সাহিত্য ডেস্ক(১)
আমাদের শহর
পুড়ে গেছে ঢাকা শহর
ঝুলন্ত স্বর্গ ব্যাবিলনের হঠাৎ মৃত্যু
আহত করেনি কাউকে
দড়ি বেয়ে নিচে নেমে এসেছে
এই শহরের দুঃখ-ক্রোধ।
একের পর এক নদী পুড়েছে
পুড়েছে ধানী ক্ষেত, কিশোরীর ঘাগড়া
বাসস্টপে দাঁড়ানো বাড়ি না ফেরা
ক্লান্ত বরফের চাঁই
ঘামে ভিজিয়েছে সমস্ত রাস্তা আর দোকানপাট।
বিষন্ন মানুষে ঠাসা জনজীবন
নিয়মিত পুরো দিন হারিয়ে যায়
‘পুড়ে যাচ্ছে ঢাকা’ টক অফ দ্যা টাউন
ছেলেগুলো শিশ দেয়, মেয়েরা নাচে
জীবন্ত এই এক পোড়া রাজ্যে।
(২)
ক্ষতচিহ্ন
রাত যত বাড়ে অন্ধকারও ততই চলনশীল
একটা ছবির পেছনে আটকে গেছে সব
ছবিটা হাসিখুশী জীবনের দিকে তাকানো
অথচ পেছনে মরে যাচ্ছে কেউ
ছবির পেছনে লাশভাব;
অন্ধকার
অগণন শব্দ, কচি থেকে বুড়ো পায়ের
সবই সামনে
ছবির মানুষ তারা হাসছে
অথচ পেছনে ওরা মরে যাচ্ছে, মরে যাচ্ছে
সামনে বুক ফুলিয়ে সম্পর্কগুলো দাঁড়িয়ে
পেছনে কি অশ্লেষে মরে গেছে সব, মরে যাচ্ছে।
(৩)
আকাশ ভরা সূর্য তারা
আমাকে সাগর দেখাতে নিয়ে যাবে?
কালপুরুষ যদিও বলেছে পাহাড়ই আমাদের শেষযাত্রা
তুমিও তো পারো ভালবাসি বলতে বলতে
ঝাঁপিয়ে পড়তে লোনা জলে
কেউ ভালবাসেনি আমাকে কখনো, জানো তুমি।
ভয় হয় যদি তোমাকেও নিয়ে যায়
মায়াবতী পরী নেকড়েরা!
তখন কোথায় যাব বলো
পাতাল থেকে উঠে আসে নাকি নাগকুমারী
হতে পারে ওরা দেবকন্যাও হয়তো
পৃথিবীর সব কিছুই তো আমার চেয়ে ভালো
আলোকিত, আরো বেশী সুন্দর
ওদের অনেক আছে তুষ্ট করা সব গুণ
আমার কিচ্ছু নেই
মুঠো খুললেই উড়ে চলে যায় জোনাকির দল
এমনই নিঃস্ব
শুধু আছে ছোট্ট টিলা এক
তার ভেতর ছোট ছোট পোকা
আর দুয়েকটা সদ্যফোটা গাছ, দুই পাতা চারা
অথচ আমি দিতে চাই সমুদ্র
হতে চাই পাহাড়, পর্বত সমগ্র
নেবে আমাকে দূর থেকে আরো দূরে?
বধির হবে, অন্ধ হবে সবার জন্যে
শুধু আমার জন্যে তুমি সুবর্ণাশ্রম তারা
দূর আকাশের চক্ষুষ্মান, স্থিরকর্ণ!
যাবে পাহাড়ে? সাগরে লোনা জলে? যাবে?
হাতে হাত রেখে, চোখে চোখে
বুক থেকে বুকে উৎসারিত হবে একটি কথাই শুধু
ভালবাসি, ভালবাসি....
বাংলাদেশ জার্নাল/এসকে
from BD-JOURNAL https://www.bd-journal.com/other/literature-and-culture/178541/শাকিলা-তুবার-তিনটি-কবিতা