হাটের সরকারি জমি দখলের অভিযোগ দুই আওয়ামী লীগ নেতার বিরুদ্ধে
হাটের সরকারি জমি দখলের অভিযোগ দুই আওয়ামী লীগ নেতার বিরুদ্ধে
বাংলাদেশ
ঠাকুরগাও প্রতিনিধিপ্রশাসনের পক্ষ থেক তদারকি না থাকায় ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ পৌর শহরের চৌরাস্তা হাটে দখল হয়ে যাচ্ছে কোটি কোটি টাকার সরকারি জমি। হাটের মুল্যবান জমি দখল করে বহুতল ভবন নির্মান করার অভিযোগ উঠেছে দুই আওয়ামীলীগ নেতার বিরুদ্ধে। তবে অভিযোগ স্বীকার করে তারা বলছেন, দীর্ঘ দিন ধরে দখলে রয়েছেন তারা। এখন পাকা বাড়ি ঘর করছেন।
ভুমি অফিস সূত্র জানা যায়, ১৯৮৪-৮৫ এবং ১৯৯৭-৯৮ অর্থ বছর দুটি মিস কেসের মাধ্যমে চৌরাস্তা হাটের সম্পত্তি পরিফেরিভুক্ত করে ভূমি অফিস। এ অবস্থায় পরে কর্তৃপক্ষ বাজারের অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদের জন্য ২০০৯ সালে এলজিআরডি মন্ত্রণালয়ে পত্র প্রেরণ কর। এর প্রেক্ষিতে মন্ত্রনালয় পরে-২/বিবিধ-স্খায়ী কমিটি-৭/২০০৯/১৩২৯ তাং ২০/১০/০৯ স্বারকে ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসককে অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের নির্দেশ দেন। মন্ত্রালয়ের নির্দেশে বাস্তবায়নের জন্য পীরগঞ্জ পৌর কর্তৃপক্ষ ২৪/১১/০৯ ইং তারিখ ৭৬৩ নং স্মারক এবং ৩১/০৭/১৩ তারিখ ২০১৩/৪৮৬ নং স্মারক জেলা প্রশাসক বরাবরে আবেদন করেন। কি অজ্ঞাত কারণে সে সময় জেলা প্রসাশনের পক্ষ থেকে কোন পদক্ষেপ গ্রহন করা হয়নি তা জানা নেই।
এই সুযোগে পরে শহরের প্রানকেদ্র রঘুনাথপুর মৌজায় (ঢাকাইয়াপট্টি) পরিফেরি ভুক্ত চৌরাস্তা হাটের উত্তর পূর্বাংশ অবৈধভাবে পাকা স্থাপনার কাজ শুরু করেছেন উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও সাবেক এমপি ইমদাদুল হক এবং সাধারণ সম্পাদক রেজওয়ানুল হক বিপ্লব সহ কতিপয় কিছু ব্যক্তি।
শত কোটি টাকা মুল্যের হাটের জমিতে তারা নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করেই ভিত্তি স্থাপন সহ আরসিসি পিলার নির্মানের কাজ করেছেন। বিপ্লব নিজের বাড়ির জন্য বহুতল ভবন এবং ইমদাদুল হক জমি দখল নিত তার লোকজন দিয়ে সীমানা প্রাচীরর কাজ করেছেন উক্ত জমির উপর।
স্থানীয়রা এতে হতবাক হলেও প্রভাবশালী ঐ দুই নেতার ভয়ে মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছেন না। উপজেলা প্রশাসনেও দেখে না দেখার ভান করেছেন।
বিষয়টি জেলা প্রশাসনের নজর আসলে দখল ঠেকাতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বুধবার বিকাল (১৩ অক্টোবর) উপজেলা নির্বাহী অফিসার রেজাউল করিমকে নির্দেশনা দেন জেলা প্রশাসক মাববুবুর রহমান।
নিদের্শনা পর উপজেলা ভূমি অফিসারের লোকজন ঘটনাস্থলে এসে কাজ বন্ধ না করে দখলদারদের লোকজনের সাথ কথা বলে চলে যান। পরে জেলা প্রশাসক মাহাবুবুর রহমান সাংবাদিকদের জানান, পীরগঞ্জের উপজেলা নির্বাহী অফিসার তাকে জানিয়েছেন, নির্মান কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
অথচ বৃহস্পতিবার দেখা যায় যথারীতি কাজ চলছে। অভিযাগ উঠেছে, হাটের ওই সরকারী জমি দখলদারদের পাইয়ে দিতে নেপথ্যে কাজ করেছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার। আকার ইঙ্গিতে বিভিন্ন ভাবে দিক নির্দেশনা দিচ্ছেন তিনি।
এ প্রসঙ্গে উপজলা নির্বাহী অফিসার রেজাউল করিম জানান, তার বিরুদ্ধে উঠা অভিযোগ ঠিক নয়। কাজ বন্ধ করা হয়েছে। আবার কাজ চালুর বিষয়টি তিনি জানেন না। এখনই ঘটনাস্থলে যাবেন বলে জানান তিনি।
স্থাপনা নির্মান প্রসঙ্গে উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও সাবেক এমপি ইমদাদুল হক বলেন, বাজারটা মারায়ারীর সম্পত্তি। অনেকেই দখল করে আছেন। বড় বড় বিল্ডিং করেছেন। তিনি কোন জমি দখল করেছেন না। তার জানা মতে এমদাদুল ও বাবুল সেখানে জমি কিনে নিয়ে এখন প্রাচীর করেছেন।
এ বিষয়ে এমদাদুল হক বলেন, সাবেক এমপি প্রাচীরের কাজ করেছেন। তিনি শুধু দেখাশুনার দায়িত্ব আছন।
উপজেলা আওয়ামীলীগর সাধারণ সম্পাদক রেজওয়ানুল হক বিপ্লব বলন, সেখানে বিশ বছর ধরে আধা পাকা বাড়ি করে আছেন তিনি। এখন ভেঙ্গে পাকা বাড়ি নির্মান করেছেন। হাটের পরিফেরি থেকে জায়গাটা অবমুক্তির জন্য আবেদন করা হয়েছে।
এদিকে পৌরসভা দপ্তর খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ১৯৯০ সাল পর্যন্ত পৌরসভা থেকে বার্ষিক ইজারা প্রদান করা হয় বাজারটি। এর পর আর তা সম্ভব হয়নি। ভুমি অফিসের লোকজনের সহায়তায় সেখান রাতা রাতি অবৈধ ভাবে আধা পাকা বাসা বাড়ি, পাকা ভবন ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নির্মাণ করে কতিপয় ব্যক্তি। হাটের জায়গায় ব্যক্তি মালিকানায় অবৈধ বিল্ডিং নির্মান ও বাসা বাড়ি গড়ে উঠায় পরে কতৃপক্ষ তা বাজার হিসেবে ইজারা দিতে চাইলেও প্রভাবশালী দখলদারদের ভয়ে কেউ লিজ নিতে রাজি হয়নি।
পীরগঞ্জ পৌরসভার মেয়র বীরমুক্তিযাদ্ধা ইকরামুল হক বলন, পরিফেরিভুক্ত জমিতে ঘর নির্মানের পারমিশন পৌরসভা দিতে পারে না। কাজ বন্ধ করার জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে বলছি।
বাংলাদেশ জার্নাল/এএম
from BD-JOURNAL https://www.bd-journal.com/bangladesh/177988/হাটের-সরকারি-জমি-দখলের-অভিযোগ-দুই-আওয়ামী-লীগ-নেতার-বিরুদ্ধে