কার্তিকের বৃষ্টিঝড়ে মাটিতে মিশে গেছে কৃষকের স্বপ্ন

কার্তিকের বৃষ্টিঝড়ে মাটিতে মিশে গেছে কৃষকের স্বপ্ন

কার্তিকের বৃষ্টিঝড়ে মাটিতে মিশে গেছে কৃষকের স্বপ্ন

বাংলাদেশ

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি

উত্তরের অবহেলিত জনপদ ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলা । ভারী কোন শিল্প কারখানা না থাকায় কৃষি কাজই কৃষকের একমাত্র আশা ভরসা।

দুই দিনের বৃষ্টিপাত ও দমকা বাতাসে  উপজেলার শতশত বিঘা আমন খেত মাটির সাথে নুয়ে পড়েছে। বিভিন্ন এলাকায় আমন চাষিদের পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে আগাম শীতকালীন সবজি ও আলু চাষিরা।

সোমবার (১৮ অক্টোবর) বিকেল থেকে শুরু হওয়া এই ঝড়ো বৃষ্টি ও দমকা বাতাসে ঘরবাড়ি ও গাছপালার ক্ষয়ক্ষতি না হলেও রাণীশংকৈল উপজেলার প্রায় সহস্র হেক্টর জমির আমন খেত মাটিতে নু‌য়ে গেছে।

পনেরো দিনের মধ্যেই যে ধান কৃষকের গোলায় উঠত হঠাৎ এই বৃষ্টিতেই কৃষকের বুক ভরা স্বপ্ন এক নিমেশেই ভঙ্গ হয়ে গেছে।

সেই সাথে আগাম জাতের ধান কেটে জমিতে খর শুকানো ও ধান মাড়াই নিয়ে বিপাকে পড়ছে অনেক কৃষক।এতে এবার আমন মৌসুমে বড় ধরনের লোকসানের মুখে পড়বেন বলে জানিয়েছেন কৃষকরা।

উপজেলার ভরনিয়া রাতোর কাশিপুর লেহেম্বা হোসেনগাঁও সহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, আধা পাকা ধানের গাছ ও সবজি খেত পানিতে ডুবে আছে। অনেক কৃষক তাঁদের ফসল বাঁচাতে খেতে জমে থাকা পানির কারণে ধানের শীষ পচে নষ্ট হওয়ার আশঙ্কায় গোছা বেঁধে ধানগাছ তুলে দেওয়ার চেষ্টা করছেন। আগাম জাতের আবার কেটে রাখায় ধান নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনাও রয়েছে।

এবার উপজেলায় ২১ হাজার ৪৫৫ হেক্টর জমিতে আমন আবাদ হয়েছে।

ভরনিয়া মন্ডলপাড়া এলাকার কৃষক মন্জুর হোসেন  বলেন, আর মাত্র দশ থেকে পনেরো দিন পরই খেতের ধান পাকতে শুরু হতো। কিন্তু হঠাত এই বৃষ্টি ও দমকা বাতাসে আমাদের খেতের ৬০-৮০ শতাংশ জমির আমন ধানের গাছ মাটিতে হেলে পড়েছে।কয়েকদিন পরে নুয়ে যাওয়া ধান গাছ গুলোতে পোকার আক্রমণ শুরু হবে। পরে ধানের পরিবর্তে শুধু সুষ্ক ছিটা পাওয়া যাবে। এই ক্ষতি পুষিয়ে উঠা সম্ভব না।

বাজেবকসা এলাকার কৃষক সুমন বলেন, তিন বিঘা জমিতে আগাম ধানীগোল জাতের ধান লাগিয়েছি। মাঠে ধান কটে রাখছি। দু একদিন পর ঘরে তুলবো দুএকদিন পর ঘরে তুলব ভেবে কিন্তু এমন অসময়ের বৃষ্টিতে পাকা ধান ক্ষেতে পানি জমে গেছে এতে ধান নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা করছি।। এতে ধান তুলতে পারলেও সেসব ধানের গুণগত মান নষ্ট হয়ে যাবে।

কৃষি কর্মকর্তা সঞ্জয় দেবনাথ জানান, প্রাথমিকভাবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এখন পর্যন্ত নির্ধারণ করা হয়নি। এই নিয়ে কাজ চলছে। তবে পাকা ধানের তেমন ক্ষতি হবে না। বৃষ্টি কমলে কৃষকরা ফসল কেটে ঘরে তুলতে পারবেন। অন্যদিকে যে সব জমির ধানে সবে মাত্র শিষ এসেছে বা বের হয়নি ঐ জমির ধানের কিছুটা ক্ষতি হতে পারে।

এর পাশাপাশি আলু খেতেও পানি জমে থাকায় আলু চাষিরা সামান্য ক্ষয়- ক্ষতির মুখে পড়তে পারেন।

বাংলাদেশ জার্নাল/এএম

© Bangladesh Journal


from BD-JOURNAL https://www.bd-journal.com/bangladesh/178551/কার্তিকের-বৃষ্টিঝড়ে-মাটিতে-মিশে-গেছে-কৃষকের-স্বপ্ন