ঢাকাই সিনেমা: আশায় শুরু, হতাশায় শেষ

ঢাকাই সিনেমা: আশায় শুরু, হতাশায় শেষ

ঢাকাই সিনেমা: আশায় শুরু, হতাশায় শেষ

বিশ সাল যেন বিষেই কাটলো। ঢাকাই সিনেমার জন্য ২০২০ সালটা ছিলো বেশ আশা জাগানিয়া।

বিনোদন প্রতিবেদক

বিশ সাল যেন বিষেই কাটলো। ঢাকাই সিনেমার জন্য ২০২০ সালটা ছিলো বেশ আশা জাগানিয়া। উনিশের শেষের দিকে এসে জমে উঠেছিলো চলচ্চিত্র পাড়া। বিশে মুক্তির অপেক্ষায় ছিলো বহু সিনেমা, যেগুলো দিয়ে নতুন দিকে মোড় নিতে পারতো সিনেমা ইন্ডাস্ট্রি; এমনটাই মনে করেছিলেন চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্টরা। কিন্তু মাঝপথে মহামারী করোনার হানা যেন সবকিছুই থমকে দিয়েছে। শোবিজ সংশ্লিষ্টদের সকল আশায় পানি ঢেলে দিলো।

চলতি বছরে মুক্তি পেয়েছে মাত্র ১৬টি সিনেমা। জরিপ বলছে, স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে এ যাবত সবচেয়ে কম সংখ্যক চলচ্চিত্র মুক্তি পেয়েছে এই বছরে। তবে সেই ছবিগুলোও যে খুব মানসম্পন্ন তেমনটাও নয়। মানহীনের সংখ্যাটাই ছিলো বেশি। যার কারণে এ বছর এসব ছবিতে বিরক্ত হয়েছে দর্শকরা। 

বছরটা শুরু হয়েছিল ‘জয় নগরের জমিদার’ ছবি মুক্তির মধ্য দিয়ে। এম সাখাওয়াত হোসেন পরিচালিত এই ছবিটি মুক্তি পায় ১০ জানুয়ারি। ফারজানা ছবি, মডেল রাসেল, আরমান পারভেজ মুরাদ প্রমুখ অভিনয় করা ছবিটি মুক্তির প্রথম সপ্তাহেই ব্যবসায়িকভাবে হোঁচট খায়।

এরপর ৭ ফেব্রুয়ারি মুক্তি পায় ফাখরুল আরেফীন খান পরিচালিত সিনেমা ‘গণ্ডি’। এই ছবিতে প্রথমবার জুটি বেঁধে অভিনয় করেছেন ‘ফেলুদা’ খ্যাত কলকাতার সব্যসাচী চক্রবর্তী ও বাংলাদেশের কিংবদন্তী অভিনেত্রী সুবর্ণা মুস্তাফা। অল্পসংখ্যক সিনেমা হলে মুক্তি দেয়া হলেও বেশ প্রশংসিত হয় সিনেমাটি।

দুই মাসে মুক্তি পাওয়া দুই সিনেমা ব্যবসায়িকভাবে সফল না হলেও কিছুটা আশার আলো জ্বালিয়েছিলো শাকিব খানের ‘বীর’ সিনেমা। শাকিব খান প্রযোজিত এ ছবির পরিচালক ছিলেন কাজী হায়াৎ। দেশের বিভিন্ন সিনেমা হলে  ছবিটি দেখতে ভিড় করে দর্শকরা, এমন সংবাদও দেখা গেছে সংবাপত্রেরর পাতায়। এদিকে সবকিছু মিলিয়ে ছবিটি ব্যবসা সফল বলেই দাবি করেছে শাকিব খানের প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান এসকে ফিল্মস।

তাহের শিপনের পরিচালনায় ইমপ্রেস টেলিফিল্মের ছবি ‘হলুদ বনি’ ও শাকিব খান অভিনীত শামীম আহমেদ রনি পরিচালিত ছবি ‘শাহেনশাহ’ এবং মাসুমা রহমান তানি পরিচালিত ‘চল যাই’ ছবি মুক্তি পায় ৬ মার্চ। মুক্তি পাওয়া এই তিনটি ছবিও দর্শক টানতে ব্যর্থ হয়। এরপর একই মাসে মুক্তি পায় নিরব-প্রিয়াঙ্কা অভিনীত ‘হৃদয় জুড়ে’ ছবিটি। রফিক শিকদারের পরিচালিত এই ছবিটি কিছুটা দর্শক সাড়া পেলেও ব্যবসায়িকভাবে সফল হয়নি। 

এরপর মার্চের মাঝামাঝিতে দেশে করোনার হানায় ১৮ মার্চ থেকে বন্ধ হয়ে যায় সব হল। প্রায় ৮ মাস বন্ধ থাকে দেশের সব সিনেমা হল। এরমধ্যেই ৩ আগস্ট একটি বেসরকারি টেলিভিশনে মুক্তি পায় শাহরিয়ার নাজিম জয় পরিচালিত ‘আমার মা’ ছবিটি। যেখানে অভিনয় করে ডিএ তায়েব ও ববি। এরপর সিনেমা হল খুললে মুক্তি পায় মুকুল নেত্রবাদীর সিনেমা ‘সাহসী হিরো আলম’। নানা কর্মকাণ্ডে বিতর্ক তৈরি করা সোশ্যাল মিডিয়ার ভাইরাল থাকা আলমের এ ছবিটি মুক্তির প্রথম সপ্তাহেই মুখ থুবড়ে পড়ে ও হল থেকে নেমে যায়।

এরপর ২৩ অক্টোবর মুক্তি পেয়েছে বছরের আলোচিত ছবি ‘ঊনপঞ্চাশ বাতাস’। এই ছবিটি মুক্তির পর দর্শকদের উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে। হয়েছে প্রশংসিতও। তিন মাস পেরিয়ে এখনও দেশের বেশ কিছু প্রেক্ষাগৃহে চলছে ছবিটি। 

গেল ১১ ডিসেম্বর মুক্তি পেয়েছে ‘বিশ্বসুন্দরী’ ও ‘রূপসা নদীর বাঁকে’ সিনেমা দুটি। ‘রূপসা নদীর বাঁকে’ সিনেমাটি খুব বেশি দর্শক না পেলেও বছর শেষে দর্শক পেয়েছেন  ‘বিশ্বসুন্দরী’ সিনেমাটি। সিয়াম আহমেদ ও পরীমনি অভিনীত এই ছবিটি দেখতে দর্শকদের ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। বেশ ভালো সারা পায় ছবিটি।

এরপর ১৬ ডিসেম্বর ওটিটি প্লাটফর্মে মুক্তি পায় শাকিব খান অভিনীত সিনেমা নবাব এলএল.বি। অ্যাপে মুক্তি পেলেও বেশ সমালোচনার মুখে পড়ে ছবিটি। এরপর বছরের একেবারেই শেষপ্রান্তে এসে ২৫ ডিসেম্বর মুক্তি পায় ‘গোর’ ও ‘আমি তোমার রাজা তুমি আমার রানি’ সিনেমা দুটি।  মুক্তি পেলেও দর্শক টানতে পারেনি সেভাবে। 

বিষাদের মতোই কেটেছে বিশ সাল। তবে আসছে নতুন বছরে বাড়তে পারে ছবি মুক্তির সংখ্যা। করোনার প্রকোপ কিছুটা অনুকূলে এলেই ছবি মুক্তির হিড়িক নামতে পারে বলে মনে করছেন চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্টরা।

বাংলাদেশ জার্নাল/আইএন

© Bangladesh Journal


from BD-JOURNAL https://www.bd-journal.com/entertainment/144576/ঢাকাই-সিনেমা-আশায়-শুরু-হতাশায়-শেষ