১০২৯ বিয়ের ঘটক তাপস শেখ!

১০২৯ বিয়ের ঘটক তাপস শেখ!

১০২৯ বিয়ের ঘটক তাপস শেখ!

কুষ্টিয়া সংবাদদাতা

কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার তাপস শেখ। বয়স ৫০ পেরোয়নি। তিনি গ্রামে ঘুরে ঘুরে বিয়ের পাত্র/পাত্রী সন্ধান করেন। মিল-মিশ হলে জোড়া মিলিয়ে দেন। 

১৯৯১ সাল থেকে দীর্ঘ ২৮ বছরে তিনি ১০২৯টি জোড়া মিলিয়ে দিয়েছেন। নিজের শিক্ষাগত যোগ্যতা তেমন না থাকলেও অসংখ্য চিকিৎসক, প্রকৌশলী, বিসিএস ক্যাডার পাত্র-পাত্রীর পরিণয় ঘটিয়েছেন তিনি; যাদের বেশিভাগ মুসলমান। সনাতন ধর্মালম্বী ৩০টিরও বেশি বিয়ে ঘটিয়েছেন।

তাপস শেখ কুষ্টিয়ার মিরপুর পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ডের খন্দকবাড়ীয়া কুঠিপাড়া মহল্লার মৃত মসলেম শেখের ছেলে। স্থানীয় মুক্তার শেখের হাত ধরে তার ঘটকালী পেশায় আসা।

তাপস শেখ বলেন, তখন তিনি (তাপস) ইটভাটার সর্দারগিরি করতেন। সেই সময় পরিচয় হয় পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মচারী মুক্তার শেখের সঙ্গে। তিনি বিয়ের ঘটকালী করতেন।

‘‘তার সঙ্গে মাঝে-মধ্যে যেতাম। বিয়ের ঘটকালী মহান কাজ; পরে নিজেই শুরু করলাম।”

তিনি আরো বলেন, “আমি ১৯৯১ সাল থেকে শুরু করে আজ অবধি ১০২৯টি বিয়ে দিয়েছি। এমনও রয়েছে, একজনের বিয়ে করিয়েছি, আবার তার ছেলেকেও বিয়ে করিয়েছি। আবার একজনের একাধিক বিয়েও করিয়েছি।’’

দুইপক্ষের পছন্দ-অপছন্দ, শিক্ষা, রুচি, আর্থ-সামাজিক অবস্থান মিলিয়ে বিয়ে ঘটানো দুঃসাধ্য কাজ। এ কাজে তাপস শেখ যেমন বাহবা পান, তেমনি বিড়ম্বনাও পোহাতে হয়। তিনি বলেন, ভালো বিয়ে দিলে যতটা না বাহবা পান, একটু কমতি ঘটলেই উঠতে-বসতে কথা শোনা লাগে। অনেক সময় বিয়ে বাড়িতেও নানান সমস্যা দেখা যায়।

সর্বশেষ তিনি মিরপুর পৌর এলাকার এক ঠিকাদারের ছেলের বিয়ে দিয়েছেন। এখনো ২৫টি ছেলে এবং ৩০টি মেয়ের বিয়ে দেয়ার প্রস্তুতি চলছে।

মানুষের জন্ম, মৃত্যু, বিয়ে- এই তিনটি বিষয় বিধাতার হাতে উল্লেখ করে তাপস শেখ বলেন, “যার সঙ্গে বিয়ে হবে সেটা সৃষ্টিকর্তা ঠিক করে দেন। আমরা একটা উসিলা মাত্র। আমি চেষ্টা করি জোড়া মিলিয়ে দিতে। এ কাজের পারিশ্রামিক বলতে খুশি হয়ে দুইপক্ষ যা দেয়। এ কাজটি আমার নেশায় পরিণত হয়েছে।”

দুই ছেলে ও স্ত্রীকে নিয়ে তাপস শেখের সংসার। বড় ছেলে বেসরকারি কোম্পানিতে কর্মরত; আর ছোট ছেলে লেখাপড়া ছেড়ে দিয়ে দিনমজুরের কাজ করেন।

মিরপুর পৌরসভার খন্দকবাড়ীয়া এলাকার বাসিন্দা হুমায়ূন কবীর জানান, এলাকায় বহু পারিবারিক বিয়ে ঘটিয়েছেন তাপস শেখ। তাকে এলাকায় এখন ঘটক তাপস নামে চেনে।

 

কাঞ্চন কুমার/বকুল



from Risingbd Bangla News https://ift.tt/3a69GSH