পাকিস্তান-শ্রীলঙ্কার বন্ধুত্ব জোরদার, উদ্বেগে ভারত
পাকিস্তান-শ্রীলঙ্কার বন্ধুত্ব জোরদার, উদ্বেগে ভারত
আর এ খবর প্রকাশ্যে আসতেই অস্বস্তিতে পড়েছে নয়াদিল্লি
আন্তর্জাতিক
প্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তানের সঙ্গে শ্রীলঙ্কার সম্পর্ক জোরদারের খবর প্রকাশ্যে আসতেই কপালে ভাঁজ পড়ছে ভারতের। কেননা শুরু থেকেই কলম্বোকে নিজেদের কব্জায় রাখতে কম চেষ্টা করেনি দিল্লী। শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হওয়ার পর সবার আগে ভারত ছুটে এসেছিলেন গোটাবায়া রাজাপাকসে।
সম্প্রতি ভারত সফরকালে দেশটির প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপক্ষে ও তার শীর্ষ প্রতিনিধিরা সন্ত্রাস দমনের প্রশ্নে সহযোগিতার কথা বললেন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠকের পরে বিষয়টিতে বাড়তি গুরুত্ব দিয়ে ভারত-শ্রীলঙ্কা যৌথ বিবৃতিতে রাখাও হয়েছে। কিন্তু সম্প্রতি যে তথ্য প্রকাশ্যে এসেছে, তাতে সন্ত্রাস মোকাবিলায় শ্রীলঙ্কার আন্তরিকতা নিয়েই প্রশ্ন উঠেছে ভারতের কূটনৈতিক শিবিরে।
এক ঘনিষ্ঠ সূত্রের বরাত দিয়ে আনন্দবাজার জানাচ্ছে, ভারত সফরে আসার দিনকয়েক আগে কলম্বোতে পাকিস্তানের বিমান বাহিনীর প্রধান মুজাহিদ আনোয়ার খানের সঙ্গে বৈঠক করেন শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসে। ওই বৈঠকে শ্রীলঙ্কার বিমান বাহিনীকে সহায়তা করার প্রস্তাব দিয়েছেন মুজাহিদ। কারিগরি প্রশিক্ষণ ও পেশাদারি সহায়তা তারা করতে প্রস্তুত বলে কলম্বোকে জানিয়েছে ইসলামাবাদ।
সূত্রের খবর, ওই বৈঠকে রাজাপাকসে মুক্তকণ্ঠে জানিয়েছেন, সমস্ত রকম প্রয়োজনে পাকিস্তানের কাছ থেকে তারা সহায়তা পেয়েছেন। বিমান সেনাদের প্রশিক্ষণের ক্ষেত্রে ইসলামাবাদের সঙ্গে সহযোগিতা প্রয়োজন রয়েছে বলেও উল্লেখ করেছেন শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী।
আর এ খবর প্রকাশ্যে আসতেই অস্বস্তিতে পড়েছে নয়াদিল্লি। কেননা তারা ইসলামাবাদের বিরুদ্ধে বরাবরই আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদে মদদ দেয়ার কথা প্রচার করে থাকে। পাকিস্তানের জঙ্গি কার্যকলাপের অজুহাত তুলে বছরের পর বছর সার্ক সম্মেলন (যার অন্যতম সদস্য শ্রীলঙ্কাও) বন্ধ রেখেছে ভারত। সম্প্রতি রাজাপাকসের সঙ্গে বৈঠকে সন্ত্রাসে মদত দেওয়ার ব্যাপারে পাকিস্তানের ভূমিকার কথাও বলেছেন ভারতীয় নেতৃত্ব। কিন্তু এতসব চেষ্টার পরেও ইসলামাবাদের সঙ্গে কলম্বোর দূরত্ব তৈরি করতে পারেনি ভারত। সম্প্রতি পাকিস্তানের বিমান বাহিনীর প্রধানের কলম্বো সফর সেই ইঙ্গিতই দিচ্ছে।
কূটনৈতিক পর্যবেক্ষকদের বরাত দিয়ে আনন্দবাজার আরও জানাচ্ছে, শ্রীলঙ্কার বর্তমান প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপাকসে এবং তার বড় ভাই প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসের সঙ্গে পাকিস্তানের সম্পর্ক বহু দিনের। সত্তরের দশকের গোড়ায় যখন পাকিস্তানের সঙ্গে শ্রীলঙ্কা গভীর যোগাযোগ বজায় রাখছে, তখন তরুণ সেনা অফিসার হিসেবে প্রশিক্ষণের জন্য গোটাবায়াকে পাঠানো হয় পাকিস্তানে। এলটিটিই-র সঙ্গে যুদ্ধে যখন মাহিন্দা শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট, তখন পাক সামরিক বাহিনী শ্রীলঙ্কা সেনাবাহিনীর পাশে এসে দাঁড়িয়েছিল। দু’দেশের গোয়েন্দা বাহিনী ঘনিষ্ঠ সমন্বয় রেখে কাজ করেছে ওই সময়ে। অন্যদিকে তখন শ্রীলঙ্কার তামিল বিদ্রোহীদের অব্যাহত মদদ দিয়ে গেছে বলে ভারতের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে। এ অবস্থায় রাজাপাকসে ভাইয়েরা ক্ষমতায় আাসর পর যে ইসলামাবাদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক স্থাপন করবে সেটাই তো স্বাভাবিক।
এমএ/
from BD-JOURNAL https://www.bd-journal.com/international/107184/পাকিস্তান-শ্রীলঙ্কার-বন্ধুত্ব-জোরদার-উদ্বেগে-ভারত