৬ষ্ঠতম কাউন্সিলের উদ্বোধন করলেন খালেদা জিয়া

৬ষ্ঠতম কাউন্সিলের উদ্বোধন করলেন খালেদা জিয়া

৬ষ্ঠতম কাউন্সিলের উদ্বোধন করলেন খালেদা জিয়া

রাজনীতি ডেক্স : বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদি দল (বিএনপি) জাতীয় ষষ্ঠ কাউন্সিল আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্ভোধন করেছে দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। আজ শনিবার বেলা পৌনে ১১টায় রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে বেলুন ও শান্তির প্রতীক পায়রা উড়িয়ে দলের ৬ষ্ঠ এ কাউন্সিল উদ্বোধন করেন তিনি।

এর আধা ঘণ্টা আগে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের গেটে পৌঁছালেও নেতা-কর্মীদের ভিড়ের কারণে মঞ্চে উঠতে দেরি হয়। কাউন্সিলে নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্য রাখবেন দলীয় প্রধান। এর আগে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বক্তব্য রাখবেন তারেক রহমান।

‘দুর্নীতি দুঃশাসন হবেই শেষ, গণতন্ত্রের বাংলাদেশ’-এই স্লোগানকে সামনে রেখে দলের এ কাউন্সিল উদ্বোধন করেন বিএনপি চেয়ারপারসন। জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া এবং দলীয় পতাকা উত্তোলন করেন দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

এ সময় জাতীয়তাবাদী সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংস্থার নেতা-কর্মীরা জাতীয় সংগীত পরিবেশন করেন। সম্মেলনে উপস্থিত সবাই জাতীয় সংগীতে কণ্ঠ মেলান। জাতীয় সঙ্গীতের পর পরিবেশন করা হয় বিএনপির দলীয় সঙ্গীত। এরপর ষষ্ঠ কাউন্সিলের থিমসং পরিবেশিত হয়। সকাল ১০টা ২৮ মিনিটের দিকে তিনি ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে এসে পৌঁছান বেগম জিয়া। গেটে তাকে স্বাগত জানান দলীয় নেতাকর্মীরা। এসময় স্লোগানে স্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে পুরো কাউন্সিলস্থল।

এর আগে ৯টা ৫০ মিনিটে রাজধানীর গুলশান ২ নম্বরে তার বাসভবন ফিরোজা থেকে নিজস্ব নিরাপত্তা (সিএসএফ) বলয়ে রওনা দেন তিনি। অবশ্য সকাল ১০টায় জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে কাউন্সিলের কার্যক্রম শুরু করার কথা ছিল বিএনপি চেয়ারপারসনের।

এদিকে কাউন্সিলস্থলে জড়ো হয়েছেন সারা দেশ থেকে আসা দলের নেতাকর্মীরা। ভোর থেকেই আসতে শুরু করেন তারা। আমন্ত্রিতরা মঞ্চের সামনে নিজ নিজ সংরক্ষিত আসনে বসছেন।

বিএনপির ৬ষ্ঠ কাউন্সিলকে কেন্দ্র করে ইতোমধ্যে দলের চেয়ারপারসন পদে বেগম খালেদা জিয়া ও সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান পদে তারেক রহমান আগামী তিন বছরের জন্য বিনা প্রতিন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।

ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের মূল ফটকের সামনে দীর্ঘ লাইনে আমন্ত্রিতদের অপেক্ষা করতে দেখা যায়। নির্দিষ্ট কার্ড থাকা সত্ত্বেও ভেতরে প্রবেশে তাদের দারুণ বেগ পেতে হচ্ছে। ধাক্কাধাক্কি করে তাদের প্রবেশ করতে হচ্ছে।  স্বেচ্ছাসেবীদের তাদের নিজ নিজ দায়িত্ব পালনে ব্যস্ত সময় কাটাতে দেখা যায়।

বিএনপি নেতাদের মধ্যে উপস্থিত আছেন আ স ম হানান শাহ, ড. ওসমান ফারুক, রুহুল আলম চৌধুরী, চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফ, আলতাফ হোসেন চৌধুরী, অ্যাডভোকেট তৈমুর আলম খন্দকার, আবদুল লতিফ জনি, শামীমুর রহমান শামীম, কাজী আসাদুজ্জামান, মাসুদ আহমেদ তালুকদার, জেবা খান, শামা ওবায়েদ প্রমুখ।

ছাত্রনেতাদের মধ্যে উপস্থিত আছেন- সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, আবদুল কাদের ভুইয়া জুয়েল, হাবিবুর রশিদ হাবিব, বিএম নাজিম মাহমুদ, রাজিব আহসান, আলমগীর হাসান সোহান, সাদিউল কবির নীরব, বায়েজিদ আরেফিন প্রমুখ।

বিএনপি নেতাকর্মীদের আশা, কাউন্সিল থেকে জাতীয় ঐক্যের ডাক আসবে। এছাড়া দলটি এ জাতীয় কাউন্সিলের মধ্য দিয়ে নতুন উদ্যমে পথচলা শুরু করবে।

এবারের কাউন্সিলের স্লোগান হচ্ছে- ‘দুর্নীতি দুঃশাসন হবেই শেষ, গণতন্ত্রের বাংলাদেশ।’ তবে বিএনপির অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনগুলোও (জাতীয়তাবাদী যুবদল, ছাত্রদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, মহিলা দল, কৃষক দল, মুক্তিযোদ্ধা দল, শ্রমিক দল, ওলামা দল, তাঁতী দল, মৎস্যজীবী দল, জাতীয়তাবাদী সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংস্থা-জাসাস) আলাদা আলাদা স্লোগান ঠিক করেছে। নিজ নিজ সংগঠনের পক্ষে পোস্টার, ব্যানার ও ফেস্টুন তৈরি করেছে তারা। কাউন্সিলের প্রতিপাদ্য হচ্ছে- ‘মুক্ত করবই গণতন্ত্র’।

২০০৯ সালের ৮ ডিসেম্বর রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বিএনপির সর্বশেষ পঞ্চম জাতীয় কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়েছিল। পরের বছর জানুয়ারিতে গঠন করা হয় ৩৮৬ সদস্যের জাতীয় নির্বাহী কমিটি।

১৯৭৮ সালের ১ সেপ্টেম্বর বিএনপি প্রতিষ্ঠার পর প্রথম কাউন্সিল হয়। দ্বিতীয় কাউন্সিল হয় ১৯৮২ সালের ফেব্রুয়ারিতে। আর এর আট বছর পর ১৯৮৯ সালের ৮ ও ৯ মার্চ অনুষ্ঠিত হয় দলটির তৃতীয় কাউন্সিল। পরবর্তীতে ১৯৯৩ সালের ১, ২ ও ৩ সেপ্টেম্বর চতুর্থ কাউন্সিল করে বিএনপি।