টাঙ্গাইলের শাল চাদর জেলার গন্ডি পেরিয়ে বিক্রি হচ্ছে সারাদেশে

টাঙ্গাইলের শাল চাদর জেলার গন্ডি পেরিয়ে বিক্রি হচ্ছে সারাদেশে

বিভাস কৃষ্ণ চৌধুরী :  টাঙ্গাইলের তৈরিকৃত শাল জেলার গন্ডি পেরিয়ে এবার বিক্রি হচ্ছে সারাদেশে। অত্যাধুনিক ডিজাইন ও দক্ষ কারিগর দিয়ে এ শাল তৈরি করায় ক্রেতাদের কাছে ব্যাপক ভাবে চাহিদা বৃদ্ধি পেয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলার শাল উৎপাদন কারি তাঁতিরা। এবার শীতের সাথে পাল­া দিয়ে বিক্রি হচ্ছে নানা ডিজাইনের শাল। সরজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, জেলার দেলদুয়ার উপজেলায় শীতকে কেন্দ্র করে তাঁতিরা তৈরি করছেন আধুনিক ডিজাইনের শাল (চাদর)। সাধারণ ক্রেতা ও মহাজনদের চাহিদা পূরণ করতে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন এখানকার শাল শ্রমিকরা। রুচিশীল ও অত্যাধুনিক ডিজাইনের শাল তৈরিকারক হিসেব এ উপজেলার তাঁতিদের যথেষ্ট সুনাম রয়েছে। মানসম্মত হওয়ায় এ উপজেলার উৎপাদিত শাল বিক্রি হচ্ছে সারাদেশে। তাছাড়া নানান রঙের সুতোয় বোনা শাল বিক্রি করে বেকারত্বের অভিশাপ থেকে মুক্তি পেয়েছে এখানকার অনেক যুবক। উপজেলার আবাদপুর ও এলাসিন, লাউহাটী গ্রামের প্রায় কয়েকশ পরিবার শাল তৈরির কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করছেন। টাঙ্গাইল সদর উপজেলার করটিয়া ইউনিয়নের করটিয়া হাট থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে পাইকারি ক্রেতাদের মাধ্যমে ছরিয়ে পরছে এই শাল।

তাঁতিদের সাথে কথা বলে জানা যায়, ৩শ’ থেকে ৫শ’ আবার কোন শাল ১ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতিটি তাঁতে দিনে ৬-৭ টি শাল তৈরি করা যায়। শাড়ী ও শাল তৈরির প্রক্রিয়া প্রায় একই রকম। ডিজাইনের উপর ভিওি করে ৫৫ থেকে ৮০ টাকা মজুরি পেয়ে থাকে একজন তাঁত মালিক। সেখান থেকে মজুরি হিসেবে ৪০ থেকে ৫০ টাকা দিতে হয় শ্রমিককে। আর তাঁতির প্রতিটি শালে লাভ হয় ২৫ থেকে ৩০ টাকা। এসব তথ্য জানিয়েছেন আবাদপূর গ্রামের তাঁত মালিক মুন্নাফ মিয়া। তিনি জানান, সব খরচ বাদ দিয়েও প্রতি মাসে তার ২১ হাজার টাকা লাভ হয়। এবং বছরে তার প্রায় ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা আয় হয়।

দু’সুতি পাইর, কিরকিরি, নয়নতারা বহুরুপি সহ হরেক রকম ডিজাইনের নকশা করা শাল তৈরি করে যাচ্ছে এখানকার তাঁতিরা। শুধু তাই নয় অর্ডার অনুযায়ী এসব শাল তৈরিতে পুরুষের পাশাপাশি এলাকার দুস্থ মহিলারাও চড়কায় সুতা ছিটায় উঠানোর কাজ করে অতিরিক্ত টাকা যোগ করছে পরিবারের জন্য।

রহমত নামের একজন তাঁতি জানান, মহাজনদের চাহিদা অনুযায়ী শাল তৈরি করে যাচ্ছেন তারা। প্রতি সপ্তাহে হাজার হাজার পিস শাল সারাদেশে রপ্তানি করা হচ্ছে। ইকবাল ভুইয়া ,জাহাঙ্গির মোল­া. সফর আলী সহ অনেক বাড়িতেই শ্রমিকরা শাল তৈরিতে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন।

ইমরান নামের একজন মহাজন জানান, ক্রেতাদের শালের প্রতি দৃষ্টিনন্দন করতে নানান রঙের সুতার কারুকার্যে বাহারী ডিজাইনের শাল তৈরি করার জন্য তাঁতিদের আগে থেকেই তাগিদ দেওয়া হয়েছে। দেলদুয়ারের তৈরিকৃত শাল সবার মন কারবে বলেও তিনি জানান। সরকারের পৃষ্টপোষকতা পেলে শাল রপ্তানি করে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা আয় করা সম্ভব বলেও তিনি জানিয়েছেন।

Iklan Atas Artikel

Iklan Tengah Artikel 1

Iklan Tengah Artikel 2

Iklan Bawah Artikel