আসামির সঙ্গে জজের ফোনালাপ খালাস দুই আসামিকে নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ

আসামির সঙ্গে জজের ফোনালাপ খালাস দুই আসামিকে নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ

চাঁদপুরের মতলব উত্তর থানার চাঞ্চল্যকর লিয়াকত হত্যা মামলার ১ নম্বর ও ৫ নম্বর আসামিকে অভিযোগপত্র থেকে অব্যাহতি দেওয়াকে বেআইনি ও অবৈধ ঘোষণা করেছেন হাইকোর্ট। আসামি মঈন উদ্দিন হোসেন টুনু ও মোহাম্মদ এহসানের নাম অভিযোগপত্রে অন্তর্ভুক্তের পাশাপাশি তাদের এক মাসের মধ্যে নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

বিচারপতি কামরুল ইসলাম সিদ্দিকী ও বিচারপতি গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুরের হাইকোর্ট বেঞ্চ বৃহস্পতিবার এ আদেশ দেন। লিয়াকত হত্যা মামলার বাদী মো. তৌফিক আজিম মিশুর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে শুনানি শেষে এ আদেশ দেন হাইকোর্ট।

আবেদনে অভিযোগ করা হয়, দায়রা জজ মো. মফিজুল ইসলাম মামলার ১ ও ৫ নম্বর আসামির সঙ্গে মোবাইলে কথা বলে সমঝোতার ভিত্তিতে তাদের অব্যাহতি দিয়েছেন। গত ৮ এপ্রিল চার্জ শুনানির সময় ওই দুই আসামিকে অব্যাহতি প্রদান করেন দায়রা জজ মো. মফিজুল ইসলাম।

বাদীপক্ষে শুনানি করেন এম. আমিন উদ্দিন ও মোহাম্মদ শফিকুর রহমান। অন্যদিকে বিবাদীপক্ষে শুনানি করেন আব্দুল বাসেত মজুমদার, ব্যারিস্টার ফজলে নুর তাপস ও মেহেদী হাসান।

মামলার সূত্র থেকে জানা যায়, ২০১২ সালের ১০ মে রাত সাড়ে নয়টায় লিয়াকত উল্লাহ সরকারকে আসামিরা প্রকাশ্যে অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেন । ঘটনার পরদিন ১১ মে লিয়াকতের ভাতিজা তৌফিক আজিম মিশু বাদী হয়ে অব্যাহতিপ্রাপ্ত দুই আসামিসহ মোট ১৬ জনের বিরুদ্ধে জেলার মতলব উত্তর থানায় মামলা করেন। এরপর তদন্ত শেষে ২০১৩ সালের ৬ মার্চ আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করে পুলিশ।

অভিযোগে বলা হয়েছে, চাঁদপুর দায়রা জজ মো. মফিজুল ইসলাম লিয়াকত হত্যা মামলায় অব্যাহতিপ্রাপ্ত পাঁচ নম্বর আসামি এহসানের সঙ্গে মোবাইল ফোনে একাধিকবার কথোপকথন করেছেন। দুই আসামিকে অব্যাহতি দেওয়ার আগের দিন অর্থাৎ ৭ এপ্রিল আসামি এহসানের সঙ্গে চারবার ফোনালাপ করেছেন জেলা দায়রা জজ মো. মফিজুল ইসলাম।

অব্যাহতির আগের দিন রাত ১০টা ২০ মিনিট, ১০টা ৩২ মিনিট এবং ১০টা ৩৭ মিনিটেও কথা হয় বিচারক-আসামির মধ্যে।

এ ছাড়া মামলা চলাকালে ১৭ মার্চ থেকে ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত আসামি এহসানের সঙ্গে বিচারক মো. মফিজুল ইসলামের ২২ বার ফোনালাপ হয়। এর মধ্যে বিচারক মো. মফিজুল ইসলাম ৯ বার নিজ মোবাইল নম্বর থেকে আসামি এহসানকে ফোন করেছেন। আর আসামি বিচারককে ১৩ বার ফোন করেছেন।

আসামি এহসান ও বিচারক মো. মফিজুল ইসলামের ফোন নম্বরগুলো তাদের নিজের নামেই রেজিস্ট্রেশন করা রয়েছে।