এখনো জমে ওঠেনি আতর-টুপির বাজার

এখনো জমে ওঠেনি আতর-টুপির বাজার

রমজান যত শেষের দিকে যাচ্ছে উল্টো দিকে ঠিক তেমনি ঘনিয়ে আসছে খুশির দিন ঈদ-উল-ফিতর। ঈদ আনন্দকে বহুগুণ বাড়িয়ে নিতে ইতোমধ্যেই নতুন জামা-কাপড় কেনার হিড়িক পড়েছে মার্কেটগুলোতে। কিন্তু এখনো জমে ওঠেনি ঈদের গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ আতর, টুপি, জায়নামাজ, তসবিহ`র বাজার। রাজধানীর বায়তুল মোকাররম মসজিদ মার্কেট, মৌচাক, গুলিস্থান ঘুরে এমন চিত্রই দেখা গেছে।

বিক্রেতারা বলছেন, সারাবছর কম বেশি বিক্রি হলেও রমজানের শুরু থেকেই আতর, টুপি, তসবিহ, জায়নামাজ ও সুরমা বিক্রি বেড়ে যায়। কিন্তু এবার ভিন্ন চিত্র, ১৭ রমজানের পরও ক্রেতা নেই বাজারে। বিক্রেতা না থাকায় অলস সময় পার করছেন বিক্রেতারা। তবে বিশ রমজানের পর ক্রেতা সমাগম বাড়তে পারে বলে আশা করছেন তারা।

সরেজমিনে দেখা গেছে, বায়তুল মোকাররম মসজিদ মার্কেটে বাহারি রঙের তসবিহ, টুপি, জায়নামজের পসরা সাজিয়ে বসেছেন বিক্রেতারা। ধনী বা গরীব সবার জন্য রয়েছে ভিন্ন ভিন্ন দামের পণ্য। যার নামেও রয়েছে বৈচিত্র্য। আগর, হাটকরা উদ, মেশক আম্বার, রোজ আইটেম, জান্নাতুল ফেরদৌস ইত্যাদি বিভিন্ন নামের আরত বিক্রি করছেন ২০ থেকে ৩২ হাজার টাকায়।

বায়তুল মোকাররম মসজিদ মার্কেটের বরকতি আতর হাউজের মালিক আব্দুর গাফ্ফার জাগো নিউজকে বলেন, এখনো পুরোপরি আতর টুপির বাজার জমে উঠেনি। ২০ রমজানের পর পুরোধমে জমে উঠবে। প্রতিবছরের মত এবারো আমরা দেশি আতরের পাশাপাশি বিদেশি আতর টুপি ও তসবিহ এনেছি।

তিনি আরো বলেন, ৫০ টাকা থেকে শুরু করে ৩২ হাজার টাকা পর্যন্ত ছোট বড় শিশিতে আতর বিক্রি করছি। দেশি বিদেশি টুপি রয়েছে ৫০ থেকে আড়াই হাজার টাকায়। ১০০ থেকে ছয় হাজার টাকায় পাওয়া যাচ্ছে জায়নামাজ। তসবিহ বিক্রি করছি ৫০ টাকা থেকে ছয় হাজার টাকায়।

আল-রিহাব আতর অ্যান্ড ক্যাপ হাউজের বিক্রেতা ফয়সাল জানান, গত কয়েক বছরের তুলনায় এবার আতর-টুপির বিক্রি কম। এখন পর্যন্ত তেমন ক্রেতা নেই বাজারে। আগামীতে বিক্রি কেমন হবে বুঝতেছিনা। তবে ঈদের সপ্তাহ খানেক আগে বেচাবিক্রি বাড়বে বলে আশা করছি।



টুপি:
বায়তুল মোকাররমে দেশে বানানো টুপির পাশাপাশি পাওয়া যাবে- চীন, ভারত, পাকিস্তান ও দুবাইয়ের টুপি। সবচেয়ে বেশি দামে টুপি বিক্রি করছে মালয়েশিয়ার তৈরি বেলবেট মাহতির টুপি, যার দাম ২ হাজার ৫০০ টাকা। এছাড়াও রয়েছে ইন্ডিয়ান বুরি টুপি, দাম- দেড় হাজার টাকা, সৌদির বুগিস টুপি, দাম- ৫০০ থেকে দেড় হাজার টাকা। পাকিস্তানি টুপি ২০০ টাকা থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকা। এর মধ্যে পাথরের কাজ করা পাকিস্তানি টুপি ১ হাজার টাকায় বিক্রি করছে।

বাজারে ভালোমানের একেকটি গোল টুপি ১০০ থেকে ২৫০ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে, এছাড়া একটু উন্নত টুপি ২৫০ থেকে ৬০০ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে।

আতর:
দেশের বাজারের বেশির ভাগ আতরই মধ্যপ্রাচ্য থেকে আমদানি করা হয়। নানা ব্র্যান্ডের আতর পাওয়া যাচ্ছে বাজারে। যেমন- হাটকরা উদ, স্টাইল উদ, হোয়াট উদ, আগর, আম্বার, রোজ আইটেম, দরবার, জান্নাতুল ফেরদৌস ইত্যাদি।

বাজারে থাকা শতাধিক রকমের আতরের ছোট বড় বোতলের দাম পড়বে ৫০ থেকে শুরু করে ৩২ হাজার টাকা। এর মধ্যে দুবাই তৈরি হাটকরা উদ ২০ মিলিগ্রাম আতর পরবে ২৫ হাজার টাকা। এক তোলা স্টাইল উদ ৪ হাজার টাকা, হোয়াট উদ ৬ হাজার টাকা। সবচেয়ে বেশি আগর, এক তোলা ৩২ হাজার টাকা। এছাড়াও দরবার ও জান্নাতুল ফেরদৌস আতর এক তোলা ৪০০ টাকায় বিক্রি করছে।

আগর কাঠ ১০০ গ্রাম প্রকার বেধে বিক্রি করছে ১ হাজার থেকে ১০ হাজার টাকায়। আতর রাখার বিভিন্ন বোতল বা আতরদানী বিক্রি করছে ২৫০ থেকে ১ হাজার টাকায়।

তসবিহ:
নানা রকমের তসবিহ আছে বাজারে। কাঠের তৈরি, পাথরের তৈরি ও ক্রিস্টালের তৈরি তসবিহও রয়েছে এ বাজারে। দাম পড়বে ৫০ থেকে শুরু করে ৬ হাজার টাকা পর্যন্ত। ইউজার পাথরের তৈরি তসবিহ দাম ৬ হাজার টাকা।

এছাড়াও রয়েছে ক্রিস্টাল ১০০ থেকে ২০০ টাকা, চন্দন দেড় হাজার টাকা, জয়তুন ১ হাজার ২০০ টাকা, টাইগর তসবিহ ২ হাজার টাকা, কাঠের তৈরি তসবিহ ৫০ থেকে দেড় হাজার টাকা পাওয়া যাচ্ছে।

জায়নামাজ:
বিভিন্ন মান ও প্রকার বেধে জায়নামাজ পাওয়া যাবে ১০০ থেকে শুরু করে ৬ হাজার টাকার মধ্যে। সিঙ্গেল ও ডাবল এই দুই প্রকারে জায়নামাজ পাওয়া যাবে। দেশে তৈরি জায়নামাজের পাশাপাশি বাজারে রয়েছে চীন, ভারত, পাকিস্তান, বেলজিয়াম, তুরস্ক ও সৌদি আরবের জায়নামাজও। মান ও কাপড় ভেদে কমবেশি হয় জায়নামাজের দাম। সব চেয়ে বেশি দামি তুরস্কের আইডিন কোম্পানির জায়নামাজ। দাম ৬ হাজার টাকা।