বিশেষায়িত বাণিজ্যিক ব্যাংক হচ্ছে বিএইচবিএফসি

বিশেষায়িত বাণিজ্যিক ব্যাংক হচ্ছে বিএইচবিএফসি

অর্থনীতি ডেক্স : আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে বিশেষায়িত বাণিজ্যিক ব্যাংকে রূপান্তরিত হতে যাচ্ছে ‘বাংলাদেশ হাউস বিল্ডিং ফাইন্যান্স করপোরেশন’ (বিএইচবিএফসি)। এ জন্য প্রতিষ্ঠানটির আইনে সংশোধনী আনা হচ্ছে।

আগামী বছর থেকে এটি ব্যাংক হিসেবে কার্যক্রম শুরু করতে পারে। এ ছাড়া প্রতিষ্ঠানটির আর্থিক সঙ্কট কাটিয়ে উঠতে তিন কিস্তিতে ৫০০ কোটি টাকা ঋণ সহায়তাও দেবে সরকার।

সচিবালয়ে মঙ্গলবার ‘বিএইচবিএফসি’র বিষয়ে করণীয় নির্ধারণ’ সংক্রান্ত বৈঠক শেষে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত সাংবাদিকদের এ কথা জানান। বৈঠকে সংস্থার চেয়ারম্যান শেখ আমিন উদ্দিন আহমেদ, ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. মো. নূরুল আলম তালুকদারসহ পরিচালক ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠক শেষে ‘বিএইচবিএফসি’র বিষয়ে জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘বিএইচবিএফসি-কে সহজ শর্তে ও দীর্ঘ মেয়াদে ৫০০ কোটি ঋণ দেওয়া হবে। সরকারের অর্থ বিভাগ থেকে তিন কিস্তিতে এ ঋণ দেওয়া হবে। চলতি অর্থবছর থেকেই এ ঋণ দেওয়া হবে। এ জন্য বাজেটে অর্থ বরাদ্দ রাখা হয়েছে।’

‘বর্তমানে বিএইচবিএফসি ভাল করছে ও প্রতিযোগিতামূলকভাবে ঋণ দিচ্ছে’ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আগামীতে এটাকে বিশেষায়িত ব্যাংকে রূপান্তরিত করা হবে। এ জন্য আইন সংশোধন করা হবে এবং আইন সংশোধনের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। ব্যাংকে রূপান্তর করা হলে প্রতিষ্ঠানটি তখন আমানত সংগ্রহ করতে পারবে।’

‘কবে নাগাদ এটিকে ব্যাংক হিসেবে ঘোষণা করা হবে’— জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘আগামী ২০১৬ সালেই এটি ব্যাংক হিসেবে কার্যক্রম শুরু করতে পারে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বাণিজ্যিক ব্যাংকে রূপান্তর করা হলে বিএইচবিএফসির ঋণের সুদের হার আরও ১ শতাংশ বাড়বে।’

ঢাকা ও চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন এলাকায় বিএইচবিএফসি’র ঋণের সুদের হার বর্তমানে ১২ শতাংশ। এটা ১৩ শতাংশে উন্নীত করা হবে। তবে অন্যান্য এলাকার জন্য ঋণের সুদের হারের পার্থক্য ২ শতাংশ বহাল থাকবে।

এদিকে বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, বৈঠকে বিএইচবিএফসি’র কর্মকর্তারা বলেন, সংস্থার ঋণ কার্যক্রম অব্যাহত রাখার জন্য করপোরেশনকে আপাতত ৫০০ কোটি টাকার তহবিল সহায়তা প্রদান খুবই জরুরী। চলতি অর্থবছরে করপোরেশনের ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা হচ্ছে ৪০০ কোটি টাকা। এর মধ্যে চলতি মাসে ঋণ মঞ্জুরী ও বিতরণের জন্য অপেক্ষাধীন রয়েছে ২৭৮ কোটি ৫৬ লাখ টাকা। তহবিলের সংস্থান না হলে ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করা সম্ভব হবে না।

বিএইচবিএফসি’র প্রস্তাবনায় বলা হয়, ‘সহজ শর্তে ৫০০ কোটি টাকা পাওয়া গেলে এর পুরো অর্থই ঢাকা ও চট্টগ্রামের বাইরে মফস্বল এলাকায় বিতরণ করা হবে। বিতরণযোগ্য এ ঋণের ৭৫ শতাংশই হবে সহজ শর্তে এবং ২৫ শতাংশ বাজার শর্তে বিতরণ করা হবে।’

‘সরকারি উৎস ছাড়া করপোরেশন বাজার থেকে কোনোরূপ ঋণ গ্রহণ করতে পারে না’— উল্লেখ করে বৈঠকে করপোরেশনকে সাবলম্বী করার জন্য দ্রুত এর আইন (পিও-৭/১৯৭৩) সংশোধনের তাগিদও দিয়েছেন বিএইচবিএফসি’র কর্মকর্তারা।

বৈঠকে বিএইচবিএফসি’র পক্ষ থেকে জানানো হয়, করপোরেশন সরকারের কাছ থেকে এ পর্যন্ত ডিপোজিট বাবদ ১২ কোটি ৭১ লাখ টাকা এবং ৩ শতাংশ সুদে ঋণ বাবদ ৩২২ কোটি ৫০ লাখ টাকা পেয়েছে। করপোরেশন নিয়মিতভাবে সুদের কিস্তি পরিশোধ করে আসছে এবং কোনো খেলাপি নেই।