জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফজলুর রহমান খান ফারুক আর নেই
টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি একুশে পদকপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ ফজলুর রহমান খান ফারুক আর নেই। তিনি আজ সকাল সাড়ে ৯.৪০ টার দিকে নিজ বাসভবনে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।
ফজলুর রহমান ফারুক খানের ভাগ্নে এলেন মল্লিক জানান, তিনি বার্ধক্যজনিত নানা রোগে আক্রান্ত ছিলেন। রাজধানী ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। কয়েক দিন আগে তাঁকে টাঙ্গাইল শহরের থানাপাড়া এলাকার নিজ বাসায় আনা হয়। পরে আজ সকালে তাঁর অবস্থার অবনতি হলে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। আজ বিকেলে টাঙ্গাইল গোরস্থান জামিয়া ইসলামিয়া দারুস সুন্নাহ মাদ্রাসা মাঠে জানাজা শেষে তাঁকে কেন্দ্রীয় গোরস্থানে দাফন করার কথা।
ফজলুর রহমান খান ১৯৪৪ সালের ১২ অক্টোবর
মির্জাপুর উপজেলার কহেলা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৬০ সালে ছাত্রলীগের মাধ্যমে
রাজনীতিতে যুক্ত হন। ১৯৭০ সালের নির্বাচনে গণপরিষদ সদস্য নির্বচিত হন। পরে ১৯৭৩
সালের প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি টাঙ্গাইল-৭ (মির্জাপুর) আসন থেকে আওয়ামী
লীগের প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য নির্বচিত হন। তাঁর ছেলে খান আহমেদ শুভ বর্তমানে
জেলা আওয়ামী লীগের সংগঠনিক সম্পাদক ও টাঙ্গাইল ৭ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের মিছিলে হামলা, গুলির ঘটনাসহ টাঙ্গাইল থানায় করা দুটি মামলায় তাঁকে আসামি করা হয়েছিল। টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ফজলুর রহমান ফারুকের বিরুদ্ধে মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে পুলিশ। সংস্থাটি জানায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র–জনতার আন্দোলনে গত ৪ আগস্ট টাঙ্গাইল শহরের বটতলা এলাকায় মিছিলে গুলি ও হামলার ঘটনা ঘটে। এ হামলায় আহত এক ব্যক্তি বাদী হয়ে ৩১ আগস্ট টাঙ্গাইল সদর থানায় মামলা করেন। এতে ফজলুর রহমান খানকে প্রধান আসামি করা হয়। এ ছাড়া টাঙ্গাইলে মাওলানা ভাসানীর কবরে শ্রদ্ধা জানাতে এসে ২০২১ সালের ১৭ নভেম্বর গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক হামলার শিকার হন। এ ঘটনায় গণঅধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক শাকিল উজ্জামান বাদী হয়ে গত ১ সেপ্টেম্বর টাঙ্গাইল সদর থানায় আরও একটি মামলা করেছিলেন। এ মামলায়ও ফজলুর রহমানকে আসামি করা হয়।
তিনি ১৯৭০ সালের গণ
পরিষদ সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি ৬ দফা আন্দোলন ও বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে
অংশগ্রহণসহ তৎকালীন সকল রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে সক্রিয় ভূমিকা রাখেন। ১৯৭৩ সালে
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসাবে টাঙ্গাইল-৭ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত
হন। ১৯৭৪ সালে বাকশাল গঠিত হলে টাঙ্গাইল জেলা বাকশাল এর যুগ্ম সম্পাদক নির্বাচিত
হন।
টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক
হিসেবে দায়িত্ব পালনের পর ফজলুর রহমান খান ২০১৫ সালে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হন।
২০১০ সালে জেলা পরিষদের প্রশাসকের দায়িত্ব পান। পরে দুই দুইবার বিনা
প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। তিনি মুক্তিযুদ্ধে অবদানের
জন্য ২০২১ সালে একুশে পদক লাভ করেন।