অফিস বন্ধের কারণ জানাল আরেক ইকমার্স 'কিউকম'
অফিস বন্ধের কারণ জানাল আরেক ইকমার্স 'কিউকম'
অনলাইন ডেস্কপাওনাদার ও গ্রাহকদের চাপ সামলাতে না পেরে ইভ্যালি ও ই-অরেঞ্জের মতো আলোচিত আরেক ই-কমার্স সাইট কিউকম তাদের কার্যালয় বন্ধ করে দিয়েছে।
বুধবার মধ্যরাতে ফেইসবুক লাইভে এসে কোম্পানির সিইও রিপন মিয়া ও তার সহযোগী সাবেক রেডিও জকি (আরজে) নিরব। এই সময়ে গ্রাহকদেরকে তাদের বাসাবাড়ির নিচে ভিড় না করার অনুরোধও করেন তারা।
করোনাভাইরাস মহামারীকালে ই-কমার্সের প্রসার ঘটার পাশাপাশি বিভিন্ন সাইট খুলে প্রলোভন দেখিয়ে গ্রাহকদের কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগও উঠেছে। আর সেই অভিযোগে ই-অরেঞ্জ এবং ইভ্যালির মালিকরা ইতোমধ্যে গ্রেপ্তার হয়েছে।
ইভ্যালির অনুকরণে যাত্রা শুরু করে কিউকমও গ্রাহকের কোটি কোটি টাকা আটক করেছে বলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভুক্তভোগীদের মন্তব্য থেকে জানা যাচ্ছে। ইভ্যালির গ্রাহকরা কত টাকা পাবেন, সেই তথ্য উদঘাটন করলেও অন্য কোনো ই-কমার্সের তথ্য এখনও সংগ্রহ শুরু করেনি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
অর্ধেক মূল্যে পণ্য দেওয়ার ঘোষণা দিয়ে মোটর সাইকেলসহ এই ধরনের সৌখিন পণ্যের অর্ডারই বেশি নিয়েছে কিউকম। কয়েক সপ্তাহ আগে কিউকমের তেজগাঁও কার্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, শত শত গ্রাহক তাদের পণ্য অথবা টাকা বুঝে পেতে ভিড় জমিয়েছেন। কিন্তু দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষার পর নতুন একটি তারিখ নিয়ে খালি হাতেই ফিরছিলেন তারা।
চারজন ভুক্তভোগীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তাদের সবাই বাজাজ কোম্পানির বিভিন্ন মূল্যের মোটর সাইকেল কিনতে টাকা জমা দিয়েছেন। নির্ধারিত মেয়াদ শেষে কাস্টমার কেয়ার থেকে ২/৩ বার তারিখ পরিবর্তনের পরও বাইক না পেয়ে তারা চলে এসেছেন অফিসে।
এই পরিস্থিতি চলার মধ্যে বুধবার কার্যালয়গুলো বন্ধ করে দিয়ে ‘হোম অফিস’ চালুর ঘোষণা দেয় কিউকম। এর কারণ ব্যাখ্যা করে রিপন মিয়া বলেন, “ওয়্যারহাউজে গিয়ে যদি পলিটিক্যাল পাওয়ার দেখায়, আমরা কই যাব? আমাদের তো একটা ব্যক্তিগত জীবন আছে। আপনারা ওয়্যার হাউজে, বাসার নিচে আসবেন, হানা দেবেন। আমার ওয়াইফকে নিয়ে ট্যাগ করেন? তাহলে আমরা কোথায় যাব?
এতদিন লাইভে আত্মবিশ্বাসী দেখা গেলেও এদিন দুজনের মুখই ছিল ফ্যাকাশে।
শাকিলা জান্নাত নামের একজন ক্রেতা লাইভের কমেন্টে বলেন, “মানুষের কষ্টের টাকা ইনভেস্ট করছে। আর আপনারা মজা করতেছেন।”
এর উত্তরে রিপন মিয়া বলেন, “আপনারা মামলা করবেন? কোর্টের বারান্দায় যাবেন। তাতে কি লাভ হবে? টাকা ফেরত পাবেন? আপনাদের টাকা ফস্টারের কাছে জমা আছে। আমরা আপনাদের জন্য অনেক চেষ্টা করে ডিসকাউন্ট এনে দিচ্ছি।”
এদিকে বিভিন্ন পেমেন্ট গেটওয়েতে নিজেদের প্রায় ৪০০ কোটি টাকা আটকা পড়ার দাবি করেছে কিউকম কর্তৃপক্ষ। এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে নিরব বলেন, “সেজন্যই আজ এই অবস্থা। নাহলে আমরা স্বাভাবিকভাবেই চলতে পারতাম। গ্রাহকের টাকা ফেরত দিতে পারতাম।”
এদিকে কেবল কোনো গ্রাহকের অভিযোগ পেলেই জমা টাকা আটকে রাখা হচ্ছে বলে বাংলাদেশে ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট বিভাগের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন। ই-অরেঞ্জ ও ইভ্যালি নিয়ে আলোচনার মধ্যে ধামাকা, আলাদীনের প্রদীপ, সিরাজগঞ্জ শপও ইতোমধ্যেই বন্ধ হয়ে গেছে। অদূর ভবিষ্যতে কি হবে তা নিয়ে গ্রাহকদের মধ্যে হতাশা তৈরি হয়েছে।
বাংলাদেশ জার্নাল / এএম
from BD-JOURNAL https://www.bd-journal.com/bangladesh/175205/অফিস-বন্ধের-কারণ-জানাল-আরেক-ইকমার্স-কিউকম