৪০ লাখ চাকরিপ্রার্থীর অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ

৪০ লাখ চাকরিপ্রার্থীর অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ

৪০ লাখ চাকরিপ্রার্থীর অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ

করোনার কারণে নিয়োগ পরীক্ষা বন্ধ থাকায় প্রতীক্ষায় আছেন ৪০ লাখ চাকরিপ্রার্থী।

বাংলাদেশ

জার্নাল ডেস্ক

করোনার কারণে নিয়োগ পরীক্ষা বন্ধ থাকায় প্রতীক্ষায় আছেন ৪০ লাখ চাকরিপ্রার্থী। এদিকে  অল্পসংখ্যক পদের জন্য জারি করা নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি-গুলোতে সম্প্রতি পরীক্ষা শুরু হয়েছে। তবে  স্বাস্থ্যবিধি মেনে বিপুলসংখ্যক পদের নিয়োগ পরীক্ষা নিয়ে দেখা দিয়েছে শঙ্কা। 

যেমন ৪১তম বিসিএস, রাষ্ট্রায়ত্ত বিভিন্ন ব্যাংক, খাদ্য, সমাজসেবা, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধি-দপ্তরসহ আরও কয়েকটি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের প্রতিটি পরীক্ষায় রয়েছেন লাখ লাখ চাকরিপ্রার্থী। স্বাস্থ্যবিধি মেনে এসব পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন সংশ্নিষ্টরা। ফলে এসব চাকরির পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা করেনি বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠান।

ফলে প্রতিনিয়তই সরকারি শূন্য পদের সংখ্যা বাড়ছে, অন্যদিকে বেকারত্বের অভিশাপ নিয়ে দিন কাটাচ্ছেন লাখ লাখ চাকরিপ্রার্থী। বিশেষ করে যাদের চাকরির বয়স শেষ পর্যায়ে, নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি না থাকায় তাদের দিন কাটছে হতাশা ও দুশ্চিন্তায়। প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির চাকরিতে সরকারি কর্মকমিশনের (পিএসসি) মাধ্যমে নিয়োগ দেওয়া হয়। তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির পদগুলোতে নিয়োগের দায়িত্ব সংশ্নিষ্ট সরকারি দপ্তরের। 

রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা নিয়োগের দায়িত্ব ব্যাংকার্স সিলেকশন কমিটির (বিএসসি)। নিয়োগ বিধিমালা চূড়ান্ত না হওয়া এবং মামলা জটিলতাসহ নানা কারণে সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, বিভাগ, অধিদপ্তর ও সংস্থায় শূন্য পদের ছড়াছড়ি। কোনো কোনো প্রতিষ্ঠানে অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে যে, স্বাভাবিক কাজকর্মও ব্যাহত হচ্ছে।

জানা গেছে, সরকার অনুমোদিত ১৮ লাখ পদের মধ্যে কয়েক মাস আগেও প্রায় চার লাখ পদই শূন্য ছিল। করোনা পরিস্থিতির কারণে এ সংখ্যা আরও বেড়েছে বলে জানিয়েছেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সংশ্নিষ্ট কর্মকর্তারা। এর মধ্যে গত মার্চ থেকে জুলাই পর্যন্ত সরকারি চাকরির বিজ্ঞপ্তি ছিল প্রায় শূন্য পর্যায়ে। 

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বলেন, প্রতিনিয়ত সরকারি পদ সৃষ্টি হয়। সৃষ্টি হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই নিয়োগ সম্পন্ন হয় না। চাকরির পদ শূন্য হলে সেখানে নিয়োগ দিতে কিছু সময় লাগে। করোনার কারণেও অনেক নিয়োগ আটকে গেছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে সব শূন্যপদ দ্রুত পূরণের উদ্যোগ নেওয়া হবে। 

প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রতিটি নিয়োগ প্রক্রিয়ায় যে সময় লাগে তা আরও কমিয়ে আনার পরিকল্পনা রয়েছে। করোনার সময় ডাক্তার, নার্সসহ মেডিকেল টেকনোলজিস্টদের নিয়োগ ইতিহাসের সবচেয়ে দ্রুতগতিতে হয়েছে। আগামী দিনে এ থেকে শিক্ষা নিয়ে কাজ করব আমরা।

পিএসসির সংশ্নিষ্ট কর্মকর্তারা বলেন, এই প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ছোটখাটো নিয়োগ পরীক্ষা শুরু হলেও তারা এখনও বিসিএসের মতো বৃহৎ পরীক্ষা নেওয়ার কথা ভাবছেন না। কারণ, এ জন্য বিপুলসংখ্যক কেন্দ্রসহ যে প্রস্তুতি দরকার, তা নেই। গত জানুয়ারিতে ৪১তম বিসিএসে চার লাখ ৭৫ হাজার পরীক্ষার্থী আবেদন করলেও এ পরীক্ষা শিগগিরই নেওয়ার সুযোগ নেই। ৪১তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা এ বছরের এপ্রিলে হওয়ার কথা ছিল। এ ছাড়া ৪০তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষার ফল আটকে আছে করোনার কারণে।

এদিকে খাদ্য অধিদপ্তরের এক হাজার ১৬৬টি পদের বিপরীতে প্রায় ১৪ লাখ চাকরিপ্রার্থীর পরীক্ষা আটকে আছে। এই নিয়োগ পরীক্ষাটিও লকডাউনের ঠিক আগে গত ২০ মার্চ নেওয়ার কথা ছিল।

সমাজসেবা অধিদপ্তরের ৪৬৩টি সমাজকর্মী (ইউনিয়ন) পদের বিপরীতে নিয়োগ প্রক্রিয়া স্থগিত হয়ে গেছে। এ পদে চাকরিপ্রার্থী ছয় লাখ ৬২ হাজার। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের ১৪১টি পদে এমসিকিউ পরীক্ষার পর দুই লাখের বেশি প্রার্থী লিখিত পরীক্ষার অপেক্ষায় বসে আছেন। এভাবে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও অধিদপ্তরের অনেক পদে পরীক্ষা দেওয়ার অপেক্ষায় রয়েছেন কয়েক লাখ শিক্ষার্থী। তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির এসব পদের পরীক্ষা শিগগির শুরু করার জন্য বিভিন্ন পদ্ধতি খুঁজছেন সংশ্নিষ্টরা।

বিসিএসের বাইরে সবচেয়ে বড় নিয়োগ হয় রাষ্ট্রায়ত্ত বিভিন্ন ব্যাংকে। বিভিন্ন ব্যাংকের চার হাজার ৭৫০টি পদে নিয়োগের জন্য আবেদন করে পরীক্ষার অপেক্ষায় আছেন ছয় লাখের বেশি প্রার্থী। এভাবে প্রায় ৪০ লাখ শিক্ষার্থী নিয়োগ পরীক্ষার অপেক্ষায় দুশ্চিন্তায় দিন কাটাচ্ছেন। সূত্র : সমকাল

বাংলাদেশ জার্নাল/এমএম

© Bangladesh Journal


from BD-JOURNAL https://www.bd-journal.com/bangladesh/134707/৪০-লাখ-চাকরিপ্রার্থীর-অনিশ্চিত-ভবিষ্যৎ