ব্যাংক লেনদেনের মাধ্যমে এগিয়ে যাচ্ছে গ্রামীণ অর্থনীতি
সোমবার, ১০ সেপ্টেম্বর, ২০১৮
টাঙ্গাইলদর্পণ নিউজ ডেস্ক: প্রাচীনকাল থেকেই মানুষ নিরাপত্তার জন্য ব্যাংকের মাধ্যমে লেনদেন করে
আসছে। যদিও তখন ব্যাংকের কার্যাবলী আধুনিক ব্যাংকিংয়ের মতো ছিল না। কিন্তু
ব্যাংকের আবির্ভাব সেই প্রাচীনকাল থেকেই। এখন পর্যন্ত বিশ্বের সব দেশে
আর্থিক প্রতিষ্ঠানের জন্য ব্যাংককে বিশ্বাসের সাথে ব্যবহার করা হয়। দিনদিন
এই ব্যাংকিং খাত দেশের স্বচ্ছল মানুষজনের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে ।
তথ্য প্রযুক্তির অবদানে বর্তমানে আর্থিক লেনদেনেও এসেছে পরিবর্তন। আগে
ব্যাংকের মাধ্যমে টাকা পাঠানোর জন্য বেশ কিছুদিন অপেক্ষা করা লাগতো। থাকতো
নিরাপত্তা ঝুঁকিও। কিন্তু বর্তমানে মানুষজন ঝুঁকিমুক্ত। দেশে দিনদিন
আর্থিকভাবে স্বচ্ছল মানুষজনের পরিমাণ বাড়ছে, সেই সাথে বাড়ছে এজেন্টদের
মাধ্যমে মোবাইল ব্যাংকিং। বর্তমানে শহরের চেয়ে গ্রামাঞ্চলে ব্যাংকের
মাধ্যমে লেনদেন বেশি হচ্ছে। গ্রামে যারা ব্যাংকের মাধ্যমে লেনদেন করা আগে
কখনও চিন্তা করেনি তারা নিজেরাও এখন ব্যাংকের মাধ্যমে লেনদেন করছে। শুধু
তা-ই নয়, শহরের চেয়ে গ্রামের মানুষ ব্যাংক হিসাবও বেশি খুলছে। শহরের তুলনায়
গ্রামে সাড়ে ছয় গুণ বেশি ব্যাংক হিসাব খোলা হয়েছে। যেখানে ব্যাংক পৌঁছায়নি
সেখানে পৌঁছেছে এজেন্টদের মাধ্যমে মোবাইল ব্যাংকিং।
বাংলাদেশ ব্যাংকের এক প্রতিবেদনে উল্লেখ আছে- এ বছরের জুন মাস পর্যন্ত
১৭ ব্যাংকের মাধ্যমে হিসাব খুলেছেন ১৭ লাখ ৭৭ হাজার ৪০০ জন। এর মধ্যে
গ্রামের মানুষের সংখ্যা ১৫ লাখ ৪০ হাজার ৩৭৭ জন। গত বছরের জুন মাস পর্যন্ত
শহরে দুই লাখ ৩৭ হাজার ২৩ জন ব্যাংক হিসাব খুলেছে। বর্তমানে শহরের তুলনায়
গ্রামাঞ্চলে খোলা ব্যাংক হিসাবের সংখ্যা বেড়েছে প্রায় সাড়ে ছয় গুণ। দেশে
প্রথম এজেন্ট ব্যাংকিং চালু করে ব্যাংক এশিয়া। কিন্তু বর্তমানে এজেন্ট
ব্যাংকিংয়ের ক্ষেত্রে এগিয়ে আছে ডাচ বাংলা ব্যাংক।
বাংলাদেশ ব্যাংকের এক পরিসংখ্যানে জানা যায়, তিন হাজার ৫৮৮ এজেন্টের
আওতায় পাঁচ হাজার ৩৫১টি আউটলেটের মাধ্যমে সারাদেশে এজেন্ট ব্যাংকিং সেবা
দেওয়া হচ্ছে। এর মধ্যে ব্যাংক এশিয়া, মধুমতি ব্যাংক ও এনআরবি কমার্শিয়াল
ব্যাংক ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারের মাধ্যমে এজেন্ট ব্যাংকিং কার্যক্রম
পরিচালনা করছে। ব্যাংক এশিয়ার দুই হাজার ২৪২টি আউটলেটের মধ্যে ইউনিয়ন
ডিজিটাল সেন্টারের সংখ্যা এক হাজার ৮২৮টি। এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে
গ্রাহক তার চলতি হিসাবে সর্বোচ্চ চারবার ২৪ লাখ টাকা নগদ জমা এবং
সর্বোচ্চ দুটি লেনদেনে ১০ লাখ টাকা উত্তোলন করতে পারেন। সঞ্চয়ী হিসাবে
সর্বোচ্চ দুবার আট লাখ টাকা নগদ জমা এবং সর্বোচ্চ তিন লাখ টাকা করে দুটি
লেনদেনে ছয় লাখ টাকা তুলতে পারেন। তবে রেমিট্যান্সের ক্ষেত্রে উত্তোলনসীমা
প্রযোজ্য হয় না। দিনে দুবার জমা ও উত্তোলন করা যায়। বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে এ
পর্যন্ত ২০টি বাণিজ্যিক ব্যাংককে এজেন্ট ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনার
লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ১৭টি ব্যাংক মাঠ পর্যায়ে এজেন্ট ব্যাংকিং
কার্যক্রম পরিচালনা করছে।
বর্তমান সরকারের সহযোগিতায় গ্রামীণ অর্থিনীতিতে আজ আধুনিকতার ছোঁয়া
লেগেছে। প্রত্যন্ত অঞ্চলের জনগণ আজ পাচ্ছে ডিজিটাল যুগের এজেন্ট
ব্যাংকিংয়ের সুবিধা। ব্যয় সাশ্রয়ী, নিরাপদ ও আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর হওয়ায়
প্রতিনিয়ত এর প্রসার ঘটছে। ফলে গ্রাম বাংলার অর্থিনীতিতেও আজ লেগেছে দিন
বদলের ছোঁয়া। এই দিন বদলের স্বপ্ন দেখেছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ
মুজিবর রহমান। সেই স্বপ্নের হাত ধরে এগোচ্ছে দেশ।
Source : http://www.banglaramra.com