সখীপুরে এক বছরে বিবাহ বিচ্ছেদ ৫৩০

সখীপুরে এক বছরে বিবাহ বিচ্ছেদ ৫৩০

সখীপুরে এক বছরে বিবাহ বিচ্ছেদ ৫৩০

জুয়েল রানা, সখীপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি : 

টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলার গত এক বছরে ৭৬৫টি বিবাহ হলেও ৫৩০টি বিচ্ছেদের ঘটনাও ঘটেছে। এর আগে ২০১৪ সালে ৪২৫টি ও ২০১৫ সালে ৫৮৩টি বিবাহবিচ্ছেদের ঘটনা ঘটেছে। বাল্যবিবাহ, বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক, স্বামীর মাদকাসক্তি, শুশুর-শাশুড়ির নির্যাতন, দীর্ঘদিন স্বামীর প্রবাসে থাকা, যৌতুকের জন্য চাপ, স্বামীর নির্যাতন এসব কারণেই বিবাহবিচ্ছেদের ঘটনা ঘটছে বলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানিয়েছেন।

সখীপুরের ৪টি পৌরসভা, আটটি ইউনিয়নসহ উপজেলার মোট ১২টি কাজি অফিস সূত্রে জানা যায়, ২০১৬ সালে পৌরসভার ৪টি কার্যালয়ে ১৯৬টি বিবাহ হলেও বিচ্ছেদ ঘটেছে ১২২টি, উপজেলার কাঁকড়াজান ইউনিয়নে বিয়ে হয়েছে ৭০টি বিচ্ছেদ ঘটেছে ৮০টি, কালিয়া ইউনিয়নে বিয়ে ১৫৮টি বিচ্ছেদ ১১৬টি, বহুরিয়া ইউনিয়নে বিয়ে ২৪টি বিচ্ছেদ ২৮টি, হাতীবান্ধা ইউনিয়নে বিয়ে ১২৬টি বিচ্ছেদ ৪১টি, যাদবপুর ইউনিয়নে বিয়ে ৬৬টি বিচ্ছেদ ৫২টি, গজারিয়া ইউনিয়নে বিয়ে ৪৯ বিচ্ছেদ ৩৬, বহেড়াতৈল ইউনিয়নে বিয়ে ৪২টি বিচ্ছেদ ৩১টি এবং দাড়িয়াপুর ইউনিয়নে বিয়ে ৩৪টি বিচ্ছেদ ২৪টির ঘটনা ঘটেছে।

উপজেলার ১২টি কাজি অফিসে ৫৩০টি তালাকের মধ্যে শুধু কনের পক্ষ থেকে তালাকের সংখ্যা ২৭৩, বর ও কনের মধ্যে সমঝোতার মাধ্যমে তালকের সংখ্যা ২৫০। কালিয়া ইউনিয়ন নিকাহ ও তালাক রেজিস্ট্রার ( কাজি ) মাহাবুব সাদিক বলেন, কনের পক্ষের তালাককে ডি-তালাক, ছেলের পক্ষের তালাককে বি-তালাক ও ছেলে-মেয়ে উভয় পক্ষের সমঝোতার তালাককে সি তালাক বলা হয়।

সামাজিক, শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন যখন সীমা অতিক্রম করে তখন বাধ্য হয়েই নারীদের তালাকের আশ্রয় নিতে হয়,এমন কথা প্রকাশ করেন নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন নারী। সখীপুর উপজেলা কাজি সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও সখীপুর পৌরসভার কাজি শফিউল ইসলাম বাদল বলেন, বাল্যবিবাহ, পরকীয়াঘটিত নানা জটিলতা নিয়ে প্রথমে দুই পবিবারের মধ্যে ফাটল ধরে, পরে তা বিচ্ছেদে রুপ নেয়।

এ ব্যাপারে উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা ফিরোজা আক্তার বলেন, আগে নারীর ক্ষমতায়ন ছিল না। পুরুষের অত্যাচার সহ্য করে নিরবে সংসার করেছে। এখন মেয়েরা সচেতন, শিক্ষিত। অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হওয়ায় মেয়েদের মর্যাদা বৃদ্ধি পেয়েছে। এর ফলে মেয়েরা আগের মতো নিপীরন-নির্যাতন সহ্য করতে চায় না।