সারা দেশে পরিবহন ধর্মঘটের দ্বিতীয় দিনে সাধারণ মানুষ ক্ষুব্ধ, অসহায়

সারা দেশে পরিবহন ধর্মঘটের দ্বিতীয় দিনে সাধারণ মানুষ ক্ষুব্ধ, অসহায়


সারা দেশে পরিবহন ধর্মঘটের দ্বিতীয় দিনে সাধারণ মানুষ ক্ষুব্ধ, অসহায়

টাঙ্গাইল দর্পন ডেক্স :

সারা দেশে পরিবহন ধর্মঘটের দ্বিতীয় দিনে দূরপাল্লার যানবাহনের পাশাপাশি ঢাকায় নগর পরিবহন বন্ধ রাখায় সাধারণ মানুষের ভোগান্তি চরমে পৌঁছেছে।

ধর্মঘটের প্রথম দিন ঢাকার রাস্তায় কিছু বাস চললেও বুধবার তাও মিলছে না। অনেকটা ফাঁকা রাস্তায় রিকশার পাশাপাশি পিকআপ অটোরিকশা ও কিছু টেম্পেো চলতে দেখা গেছে।

অফিসযাত্রীদের পাশাপাশি শিক্ষার্থী ও নানা প্রয়োজনে রাস্তায় নামা মানুষকে দীর্ঘ দূরত্ব পেরিয়ে গন্তব‌্যে পৌঁছাতে ব‌্যাপক দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। যাত্রাবাড়ী এলাকায় প্রাইভেট কার চলাচলেও বাধা দেওয়া হয়েছে বলে কয়েকজন জানিয়েছেন। 

সারা দেশে পরিবহন ধর্মঘটের দ্বিতীয় দিনে সাধারণ মানুষ ক্ষুব্ধ, অসহায়
সাধারণ মানুষকে জিম্মি করে পরিবহন শ্রমিকদের দাবি পূরণের এই চেষ্টা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন রাস্তায় নাকাল হওয়া পথচারীরা। তারা বলেছেন, এই ধর্মঘটীদের সঙ্গে কোনো ধরনের আপসে আসা সরকারের উচিৎ হবে না।

সকালে ঢাকার কল‌্যাণপুরে বিআরটিসির ডিপো থেকে কয়েকটি বাস বের হতে দেখা গেলও অন‌্য কোনো বাস না থাকায় রাস্তার দুই পাশে ছিল মানুষের মিছিল। অল্প কিছু লেগুনা চলাচল করলেও সেগুলোতে বাদুরঝোলা হয়ে মানুষকে গন্তব‌্যে পৌঁছানোর চেষ্টা করতে দেখা গেছে।

ব‌্যাংক কর্মকর্তা কাজী রফিকুল আলম দারুস সালাম থেকে বিমানবন্দর সড়কে তার শাখায় যাওয়ার জন‌্য কল‌্যাণপুর থেকে মহাখালীগামী একটি রিকশা ভ‌্যানে চড়েন। মহাখালী পৌঁছে ‘অন‌্য কোনোভাবে’ বিমানবন্দর এলাকায় পৌঁছানোর চেষ্টা করবেন  বলে জানালেন।
তিনি বলেন, “বসরা তো আর বুঝবে না। সময়মত না পৌঁছাইলে বকা শোনা লাগবে। গতকালও অনেক কষ্ট করে বাসায় ফিরছি।”

ধর্মঘটে নাকাল এই যাত্রী বলেন, “সরকারের উচিৎ কঠোর ব‌্যবস্থা নেওয়া। বিচারক যে ব‌্যবস্থা নিয়েছে সেটা তো লিগ‌্যাল। এদের সাথে সমঝোতা করলে আরেক গ্রুপ আবার আরেকটা ইলিগ‌্যাল সুবিধা চাইবে। আর আমাদের দেশে চালকরা তো বেপরোয়া। বিচার না হলে এভাবে দুর্ঘটনা ঘটতেই থাকবে।”

বাস না পেয়ে ভ‌্যানেই মহাখালীর দিকে রওনা হওয়া আলী হোসেন কাজ করেন একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে।

তিনি বলেন, “একবার ছাড় দেওয়া হলে এরা বার বার এটা করতে থাকবে। এরা যা খুশি তাই করবে- এটা হতে পারে না। এভাবে চলতে পারে না। সরকারের উচিৎ দৃষ্টান্তমূলক ব‌্যবস্থা নেওয়া।”

একটি আন্তর্জাতিক প্রযুক্তি নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের কর্মী সোহাগ সরকার বেশ কিছু সময় চেষ্টা করেও কোনো বাহন ধরতে ব‌্যর্থ হন।

ক্ষোভের সঙ্গে তিনি বলেন, “সরকারের কঠোর হওয়া দরকার, যাতে ভবিষ‌্যতে এ রকম মানুষকে বিপদে ফেলে দাবি আদায়ের চেষ্টা করতে না পারে।”

অন‌্যদিন মূল সড়কে আসার সুযোগ না পেলেও বাস না চলায় কল‌্যাণপুর থেকে মহাখালী পর্যন্ত রিকশা ভ‌্যানে যাত্রী পরিবহন করছিলেন মোহাম্মদ লিংকন। প্রতিবারে আটজনকে পৌঁছে দিয়ে তার আয় হচ্ছে মোট ৪০০ টাকা করে।
এই ভ‌্যানচালক বলেন, “ভাড়া বেশি পাইছি, কিন্তু ভ‌্যান টানতে কষ্টও তো কম না, মানুষ তো তাও পৌঁছাইতে পারতেছে।”

সকালে মালীবাগ থেকে রিকশায় মহাখালী এসে এনজিওকর্মী আবদুল্লাহ সরকার ভাড়া দিয়েছেন ১৬০ টাকা।

তিনি বলেন, “মানুষের বিপদ বুঝে রিকশা, অটোরিকশা চালকরা ইচ্ছেমত ভাড়া আদায় করছে।”

তথ্যসূত্র : বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম।