তিন এশীয়কে হটিয়ে প্রথমবারের মতো শিরোপা জয় করলো ওয়েস্ট ইন্ডিজ

তিন এশীয়কে হটিয়ে প্রথমবারের মতো শিরোপা জয় করলো ওয়েস্ট ইন্ডিজ

স্পোর্টস ডেক্স : দুর্দান্ত প্রতাপ দেখিয়ে আইসিসি অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ ক্রিকেটের শেষ চারে জায়গা করে নিয়েছিল- ভারত, বাংলাদেশ ও শ্রীলংকা। চতুর্থ কোয়ার্টার ফাইনালে পাকিস্তান বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ ম্যাচে ফেভারিট ছিলো এশিয়ার আরেক পরাশক্তি পাকিস্তানও। ফলে সবাই ধরে নিয়েছিল হয়তো এবারের যুব বিশ্বকাপের সেমি-ফাইনাল হতে যাচ্ছে অল এশীয় দল নিয়ে। কিন্তু সেটি হতে দেয়নি ক্যারিবীয়রা। শুরুতে হোচট খেয়ে মিশন শুরু করা ক্যারিবীয় যুবারা পাকিস্তানকে হটিয়ে শেষ চারে জায়গা করে নেবার পর স্বাগতিক বাংলাদেশকে বিতাড়িত করে নাম লেখায় ফাইনালে। গতকাল মিরপুরের শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ফাইনালে তারা শক্তিশালী ভারতকে ৫ উইকেটে হারিয়ে প্রথমবারের মতো শিরোপা জয় করে নিয়েছে।

সাহসী ব্যাটিংয়ের মাধ্যমে ক্যারিবীয় দলের জয় এনে দিয়েছেন কার্টি ও কেমু পল। ষষ্ঠ উইকেটে তাদের ৬৯ রানের জুটিই ইন্ডিজদের পাইয়ে দেয় যুব বিশ্বকাপের শিরোপা স্বাদ। ১২৫ বলে ২টি চারে অপরাজিত ৫২ রান করা কার্টি ম্যাচ সেরার পুরস্কার লাভ করেন। অপরাজিত ৪০ রান করেন পল।

এর আগে প্রথমে ব্যাট করে ক্যারিবিয়ানদের বোলিং তোপে পড়ে ৪৫.১ ওভারে ১৪৫ রানে গুটিয়ে যায় ভারতীয় যুবাদের ইনিংস। টস হেরে প্রথমে ব্যাটিং পাওয়া ভারতের শক্তিশালী ব্যাটিং লাইনকে শুরুতেই দুমড়ে-মুচড়ে দেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের পেসাররা। বল হাতে গতির ঝড় তোলা আলজারি জোসেফ ও হোল্ডার কাঁপিয়ে দিয়েছেন ভারতের টপঅর্ডার। দলের মাত্র তিন ব্যাটসম্যান দুঅঙ্কের ঘর স্পর্শ করতে পেরেছিলেন।

ইনিংসের শুরুতে মাত্র ৫০ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে সংকটের মধ্যে পড়ে যায় ভারত। ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে এসে বিপর্যয় সামাল দেন সরফরাজ খান ও মহিপাল লমরর। ৩৭ রানের জুটি গড়েন তারা। তবে দলের পক্ষে বলার মতো প্রতিরোধ গড়েছেন শুধু সরফরাজ। একপ্রান্ত আগলে খেলা সরফরাজের হাফ সেঞ্চুরিতেই একশো পার হয় ভারতের স্কোর। মায়াঙ্ক ডাগারের সঙ্গে ৭ম উইকেট জুটিতেও ২৯ রান যোগ করেন তিনি। শেষ পর্যন্ত অষ্টম ব্যাটসম্যান হিসেবে ক্রিজ ছাড়েন তিনি। রায়ান জনের বলে আউট হওয়ার আগে সরফরাজ ৮৯ বলে ৫টি চার, একটি ছয় সাজিয়ে ৫১ রান সংগ্রহ করেন। লমরর ১৯ ও শেষ দিকে ২১ রানের ইনিংস খেলেন রাহুল বাথাম। ওয়েস্ট ইন্ডিজের জোসেফ ও জন ৩টি করে উইকেট নেন। কেমু পল দখল করেন ২ উইকেট।

জবাবে মামুলি মনে হলেও ১৪৬ রানের টার্গেট পুরণ করতে বেশ সংগ্রামই করতে হয়েছে ক্যারিবীয়দের। লক্ষ্যে অবিচল থেকে সংযমি ব্যাটিংয়ের কল্যানেই শেষ পর্যন্ত শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট পড়ে মাঠ ছাড়তে পেরেছে তারা। শুরুতে দ্রুত রান তোলার চেস্টা করতে গিয়ে দলটি ইনিংসের তৃতীয় ওভারেই হারায় গিডরন পোপের (৩) উইকেট। অপর ওপেনার ইমলাক (১৫) ফিরেন ৮ম ওভারে। অধিনায়ক হেটমায়ার ও কার্টি তৃতীয় উইকেট জুটিতে ৩৯ রান যোগ করে জয়টাকে কিছুটা নাগালের মধ্যে আনলেও দলীয় ৬৭ রানে তুলে মারতে গিয়ে মায়াঙ্ক ডাগারের বলে ক্যাচ দিয়ে ফিরেন হেটমায়ার (২৩)। এরপর পরপর দু’ওভারে স্প্রিংগার (৩), গুলিকে (৩) সাজঘরে পাঠিয়ে ম্যাচটা জমিয়ে দেন ভারতীয় স্পিনার ডাগার।

মাত্র ৭৭ রানে ৫ উইকেট হারালেও শেষ পর্যন্ত ধৈর্য্য ধারনের মাধ্যমে দারুণভাবে লড়াইয়ে ফিরে ক্যারিবীয়রা। ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে ভারতকে হাতাশা উপহার দেন কার্টি ও কেমু পল। কোনো ঝুঁকি না নিয়ে তারা সতর্কতার সঙ্গে এগিয়ে নেন দলকে। এরই ধারাবাহিকতায় ৪৯তম ওভারে ১২২ বলে হাফ সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন কার্টি। শেষ পর্যন্ত ৬৯ রানের অপরাজিত জুটি গড়ে দলের জয় নিশ্চিত করে মাঠ ছাড়েন তারা। ভারতের পক্ষে ডাগার নেন ৩ উইকেট।

সূত্র : বাসস।