রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রভাষক গ্রেফতার
মঙ্গলবার, ১৬ ফেব্রুয়ারী, ২০১৬
আন্তর্জাতিক ডেক্স : ভারতের পুলিশ আজ রাষ্ট্রদ্রোহ ও অন্যান্য অভিযোগে দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন সাবেক প্রভাষক এস এ আর গিলানীকে গ্রেফতার করেছে। নয়াদিল্লির ডিসিপি যতীন নারওয়াল জানান, ‘আজ ভোর তিনটার দিকে গিলানীকে আইপিসির ১২৪ এ(রাষ্ট্রদ্রোহ), ১২০ (অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র) ও ১৪৯ (বেআইনি সমাবেশ) সংক্রান্ত ধারায় পার্লামেন্ট সড়কস্থ পুলিশ স্টেশনে গ্রেফতার করা হয়।’
গিলানীকে সোমবার রাতে থানায় তলব করে আটক এবং বেশ কয়েক ঘণ্টা ধরে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় এবং পরে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের পর তাকে শারীরিক পরীক্ষার জন্য আরএমএল হাসপাতালে নেয়া হয়।
গিলানীর বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি ‘ভারত-বিরোধী শ্লোগান’ দেয়া হয়েছিল এমন একটি অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
বলা হচ্ছে, ফেব্রুয়ারির ১০ তারিখ দিল্লি প্রেস ক্লাবে এক অনুষ্ঠানে কাশ্মিরী বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা আফজাল গুরুর নামে ‘প্রশংসাসূচক শ্লোগান’ দেয়া হয়। সে সময় গিলানী, অন্য আরো তিন বক্তার সঙ্গে মঞ্চে উপবিষ্ট ছিলেন।
গত ১০ ফেব্রুয়ারি প্রেসক্লাবে আফজাল গুরুরর সমর্থনে অনুষ্ঠিত প্রোগ্রামের ভিডিও ক্লিপ দেখে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়েছে।
রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র ইউনিয়নের প্রেসিডেন্ট কানহাইয়া কুমারকে গ্রেফতার নিয়ে সৃষ্ট বিতর্কের মধ্যেই এসএআর গিলানিকে গ্রেফতার করা হলো।
১০ ফেব্রুারি দিল্লি প্রেসক্লাবে একদল যুবক আফজাল গুরুর সমর্থনে অুষ্ঠানে ভারত বিরোধী স্লোগান দেয়ার ঘটনায় গিলানিসহ অজ্ঞাতনামাদের মামলা দায়ের করা হয়েছে।
পুলিশ বলছে, গিলানি ওই অনুষ্ঠানের মূল আয়োজক। একজন উর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তা বলেছেন, ‘গিলানির ই-মেইল থেকে অনুষ্ঠানস্থলটি বুকিং দেয়ার অনুরোধ আসে। অনুষ্ঠানটিকে পাবলিক মিটিং বলা হলেও এটি মোটেও সেরকম ছিল না’।
দিল্লিতে ভারতের পার্লামেন্ট ভবনে ২০০১ সালের হামলায় সংশ্লিষ্টতার দায়ে ২০১৩ সালের ৯ই ফেব্রুয়ারি আফজাল গুরুর ফাঁসি হয়।
ভারতের খ্যাতিমান লেখিকা অরুন্ধতী রায়সহ বহু মানবাধিকারকর্মী আফজাল গুরুর বিচারে গুরুতর ত্রুটির কথা তুলে ধরে প্রহসনের বিচারে তাকে ফাঁসি দেয়া হয়েছে বলে মন্তব্য করেছিলেন। গিলানিও ওই ঘটনায় সংশ্লিষ্টতার দায়ে অভিযুক্ত হয়েছিলেন। তবে পরে তিনি সুপ্রিম কোর্ট থেকে খালাস এবং তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকরি ফিরে পান।
আফজাল গুরুর ফাঁসির বার্ষিকী ঘিরে কিছুদিন ধরেই দিল্লির জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ে উত্তেজনা চলছে।
এ ব্যাপারে একজন ছাত্রনেতাকে পুলিশ আটক করার পর গত বেশ কিছুদিন ধরেই প্রতিবাদ বিক্ষোভ চলছে।
সমালোচকরা বলছেন, এই বিক্ষোভকারীদের কর্মকা- ‘ভারত-বিরোধী’ তবে অন্যরা বলছেন, তাদের আটক করাটা মতপ্রকাশের স্বাধীনতার ওপর আঘাত।-বাসস।