ভারত-পাকিস্তানকে অবশ্যই আলোচনা করতে হবে : গাভাস্কার

ভারত-পাকিস্তানকে অবশ্যই আলোচনা করতে হবে : গাভাস্কার

স্পোর্টস ডেস্ক :  ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে নিয়মিত ক্রিকেট ম্যাচ পুনরুজ্জীবিত করার পথ খুঁজে বের করতে নয়াদিল্লি এবং ইসলামাবাদকে অবশ্যই আলোচনা শুরু করতে বলে মনে করেন সাবেক ব্যাটিং গ্রেট সুনিল গাভাস্কার। শারজাহতে পাকিস্তান-ইংল্যান্ডের মধ্যে চলমান সিরিজের তৃতীয় ও শেষ টেস্ট চলাকালে বার্তা সংস্থা এএফপিকে তিনি এ কথা বলেন।

নিজের সুনিপুন ব্যাটিং শৈলির জন্য সীমান্তের দুই পাড়েই জনপ্রিয় গাভাস্কার বলেন, দুই দেশের মধ্যকার বিদ্যমান অবিশ্বাস দূর করতে হবে। আমি মনে করি যে কোন সমস্যা সমাধান করতেই মানুষের আলোচনা করা দরকার। আপনি যদি একে অপরের সঙ্গে আলোচনা না করেন তবে কোন সমস্যারই সমাধান হবে না। অতএব আলোচনাই প্রথম পদক্ষেপ।

নিজের বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারে ভারতের হয়ে ১২৫ টেস্টে ১০ হাজার ১২২ রান করা গাভাস্কার আরও বলেন, চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত সব সময়ই সরকারের কাছ থেকে এসেছে। সরকারের মনোভাব পরিবর্তনের ক্ষমতা কোন খেলারই আছে বলে আমি মনে করি না। কিন্তু যখন দুইটি দেশ একে অপরের মোকাবেলা করে তখন তাদের সমর্থকরা আসে এবং ম্যাচ দেখে, তারা সবাই পরস্পরের সঙ্গে মিশে যায় এবং বোঝাপড়ার উন্নতি হয়।

তিনি আরও বলেন, যা সরকারগুলোকে একটা ইঙ্গিত দেয়। তবে আমি রাজনীতিবিদ নই এবং একজন সাবেক খেলোয়াড় হিসেবে বলছি, আলোচনা না করলে আপনি কোন সমস্যার সমাধান করতে পারবেন না। আমি মনে করি না সাবেক খেলোয়ড়দের কথা কোন কাজে আসবে। অনেক কিছু চিন্তা-ভাবনা করেই সরকার সিদ্ধান্ত নেয় এবং আমি মনে করি না সাবেক কোন খেলোয়াড়ের কথাতে অবস্থার পরিবর্তন হবে।

কেবলমাত্র এ অঞ্চল নয়, পুরো বিশ্বের জন্যই ভারত এবং পাকিস্তানের একে অপরের খেলাটা গুরুত্বপূর্ণ বলে স্বীকার করেন গাভাস্কার।

আগামী বছর ফেব্রুয়ারি মাসে বাংলাদেশে অনুষ্ঠিতব্য এশিয়া কাপের দিকে ইঙ্গিত করে গাভাস্কার বলেন, ‘আমি মনে করি সার্কভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে খেলা হলে উপমহাদেশের ক্রিকেট আরও শক্তিশালী হবে। ভারত যদি শ্রীলংকা অথবা বাংলাদেশের বিপক্ষে না খেলে তখন তাদের ক্রিকেটও ক্ষতিগ্রস্ত হবে। কিন্তু যখন তারা একে অপরের বিরুদ্ধে খেলবে তখন উপমহাদেশের ক্রিকেটই শক্তিশালী হবে এবং যে কারণে এশিয়া কাপ একটি গুরুত্বপূণ ইভেন্ট।

গাভাস্কার বলেন, ভারত না খেলায় পাকিস্তান অনেক বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে একইভাবে নিরাপত্তা শঙ্কার কারণে নিজ মাঠে খেলতে না পারায়ও তারা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। পাকিস্তানের পরাজয়টা অনেক বড়। নিজ মাঠে নিজ দেশের খেলোয়াড়দের খেলা দেখতে পাচ্ছে না পাকিস্তানের তরুণরা। নিজ মাঠে উপস্থিত থেকে সামনা-সামনি ইউনিস খান, মিসবাহ উল হক এবং শহিদ আফ্রিদির খেলা দেখে তাদের উৎসাহ যোগাতে পারছে না ছোট ছেলে-মেয়েরা। এমন উৎসাহ তারা মিস করছে এবং এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। পাকিস্তান যেটা খুব বেশি মিস করছে।

সংযুক্ত আরব আমিরাতে আগামী ডিসেম্বর-জানুয়ারিতে প্রস্তাবিত সিরিজের বিষয়ে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিসিআই) কাছে লেখা চিঠির জবাবের অপেক্ষায় আছে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি)। গত বছর পিসিবি এবং বিসিসিআইর মধ্যে স্বাক্ষরিত সমঝোতা চুক্তির ছয়টি সিরিজের মধ্যে এটি একটি এবং সব কিছুই নির্ভর করছে দেশ দুটির সরকারের অনুমতির উপর।

কিন্তু উভয় দেশের মধ্যে বর্তমান রাজনৈতিক উত্তেজনা এবং গত আগস্টে দেশ দুটির নিরাপত্তা উপদেষ্টাদের বৈঠক বাতিল হয়ে যাওয়ার পর প্রস্তাবিত এ সিরিজ হওয়ার বিষয়ে যথেষ্ট সন্দেহ সৃষ্টি হয়েছে। বিসিসিআই গত সপ্তাহে জানিয়েছিল, তারা সরকারের অনুমতি চেয়েছে এবং আশা করছে আগামী ১০ দিনের মধ্যে চূড়ান্ত কোন জবাব দিতে পারবে।

সিরিজটি অনুষ্ঠিত হলে তা হবে ২০০৭ সালের পর দেশ দুটির মধ্যে প্রথম দ্বিপাক্ষিক সিরিজ। ২০০৮ সালে মুম্বাই হামলার পর প্রতিদ্বন্দ্বী দেশটির সঙ্গে অধিকাংশ ক্রিকেটীয় সম্পর্ক বাতিল করে ভারত। কারণ পাকিস্তাইন জঙ্গিদের পরিকল্পনায় এ হামলা হয়েছিল বলে প্রথম থেকেই দাবি করে আসছে ভারত সরকার। যদিও ২০১২ সালের শেষ দিকে সিমিত ওভারের সিরিজ খেলতে ভারত সফর করে পাকিস্তান ক্রিকেট দল।