পিএসসি পরীক্ষার প্রশ্নফাঁস ঠেকাতে নানা উদ্যোগ

পিএসসি পরীক্ষার প্রশ্নফাঁস ঠেকাতে নানা উদ্যোগ

নিউজ ডেক্স : আগামী ২২ নভেম্বর থেকে শুরু হতে যাওয়া প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী (পিএসসি) পরীক্ষার প্রশ্নফাঁস ঠেকাতে নানা উদ্যোগ নিয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রণালয়। এর অংশ হিসেবে সারা দেশকে আটটি ভাগে ভাগ করে পৃথক আট সেটপ্রশ্নে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। এসব প্রশ্ন কঠোর নিরাপত্তায় এখন বিজি প্রেসে ছাপার কাজ চলছে। একই সঙ্গে পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে শেষ করার জন্য চলছে শেষ মুহূর্তের বিশেষ প্রস্তুতি। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, প্রতিবছর এক সেটপ্রশ্নে সারা দেশে পরীক্ষা নেয়া হতো। এবার প্রশ্নফাঁস ঠেকাতে দেশের ৬৪টি জেলাকে আটটি ভাগে ভাগ করে আট সেট প্রশ্নে পরীক্ষা নেয়া হবে। একটি সেটের সঙ্গে অপর সেটের প্রশ্নের মিল থাকবে না। এতে করে একটি সেটের প্রশ্ন ফাঁস হলেও সারা দেশের পরীক্ষা বাতিল করা হবে না।

সূত্রটি আরো জানায়, অতিগোপনে এরই মধ্যে প্রশ্নপ্রণয়ন শেষে বিজি প্রেসে ছাপার কাজ চলছে। ছাপা কাজে জড়িতরা যাতে প্রশ্নফাঁস করতে না পারে সেজন্য বিশেষ নিরাপত্তা বলায় গড়ে তোলা হয়েছে। গোয়েন্দা সংস্থার তৎপরতাও বাড়ানো হয়েছে। বসানো হয়েছে গোপন ক্যামেরা। প্রশ্নফাঁস ঠেকাতে একটি মনিটরিং টিমও কাজ করছে। এছাড়া এরই মধ্যে পরীক্ষা সমাগ্রী পাঠানো শুরু হয়েছে। সারা দেশের সুষ্ঠুভাবে পরীক্ষা শেষ করতে বেশ কয়েকটি মনিটরিং টিম গঠনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।

সূত্রমতে, ২০০৯ সাল থেকে চালু হওয়ার পর থেকেই পিএসসি পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগ ওঠে। গত বছর তা মারাত্মক আকার ধারণ করে।পরীক্ষার আগের রাতে ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সাজেশন আকারে প্রশ্ন ছড়িয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা। অনেক শিক্ষক, অভিভাবক ও কোচিং সেন্টারের মালিকরা তা সংগ্রহ করে শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দেন। পরীক্ষা শেষে প্রকাশিত সাজেশনের সঙ্গে প্রায় ৭০ থেকে ৮০ ভাগ মিলে যায়। এ নিয়ে সারা দেশে ব্যাপক সমালোচনার ঝড় ওঠে।বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ অধ্যাপক মো. জাফর ইকবাল একাধিক কলাম লিখেন। পিএসসি পরীক্ষা তুলে দেয়ারও দাবি জানান অনেকে। এরপরই প্রশ্ন ফাঁস ঠেকাতে উপায় খোঁজে প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রণালয়।

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ড. জ্ঞানেন্দ্র নাথ বিশ্বাস জানান, এবার প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা জেলা ভিত্তিক আট সেটপ্রশ্নে নেয়া হবে। প্রশ্নফাঁস ঠেকাতে বিশেষ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি। 

প্রসঙ্গত, সম্প্রতি এডুকেশন ওয়াচের প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে কেন্দ্রীয়ভাবে এ পরীক্ষা না নিয়ে উপজেলা ভিত্তিক নেয়ার সুপারিশ করে। তবে নানা সমস্যার কারণে তা সম্ভব হচ্ছে না। তবে সরকার এ পরীক্ষা বাতিলের চিন্তাভাবনা করছে বলে জানা গেছে।