গোপালগঞ্জে ১১ বছর পর জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন

গোপালগঞ্জে ১১ বছর পর জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন

টাঙ্গাইলদর্পণডটকম ডেক্স : গোপালগঞ্জে দীর্ঘ ১১ বছর পর জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। আগামী ১১ নভেম্বর শেখ ফজলুর হক মনি স্মৃতি মিলনায়তনে এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।

সম্মেলনে প্রধান অতিথি থাকবেন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এলজিআরডি মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম। বিশেষ অতিথি থাকবেন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সভাপতি মণ্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম, আর্ন্তজাতিক বিষয়ক সম্পাদক লে.কর্নেল (অব.) মুহাম্মদ ফারুক খান, সংরক্ষিত মহিলা আসনের সাংসদ অ্যাড. উম্মে রাজিয়া কাজল এবং প্রধানমন্ত্রীর নির্বাচনী এলাকার উন্নয়ন প্রতিনিধি ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক শেখ মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ।

সন্মেলনকে কেন্দ্র করে নেতা কর্মীদের মধ্যে উৎসাহ উদ্দীপনা দেখা দিয়েছে। এ জেলা আওয়ামী লীগের দুর্ভেদ্য ঘাঁটি হওয়ায় দলে গ্রুপিং-লবিং বিদ্যামান।

বিগত ২০০৪ সালে সন্মেলনে সভাপতি হয়েছিলেন মোহাম্মদ আলী খান আবু মিয়া এবং সাধারণ সম্পাদক হয়েছিলেন চৌধুরী এমদাদুল হক। ২০১১ সালে মোহাম্মদ আলী খান অবু মিয়ার মৃত্যুর পর সিনিয়র সহ-সভাপতি রাজা মিয়া বাটু ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব পান। সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী এমদাদুল হক জেলা পরিষদের প্রশাসক নিযুক্ত হন। ফলে দলে নেতৃত্বের স্থবিরতা দেখা দেয়। এবারের  সন্মেলনে এ দুটি পদ পাওয়ার জন্য নেতাদের মধ্যে শুরু হয়েছে রশি টানাটানি।

সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদ পেতে নেতারা জোর লবিং ও গ্রুপিং শুরু করেছেন। এ দুই পদে সম্ভাব্য প্রার্থীরা কাউন্সিলর ও ডেলিগেটদের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়িয়ে দিয়েছেন। দলের স্থানীয় নেতা ও হাই কমান্ডের সঙ্গে শুরু করেছেন তদবির। তবে সব কিছুই নির্ভর করছে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সভাপতি মণ্ডলীর সদস্য গোপালগঞ্জ-২ আসন থেকে বার বার নির্বাচিত এমপি শেখ ফজলুল করিম সেলিমের উপর। সকলেই তাকিয়ে আছেন তার আশীর্বাদ ও দোয়া পাওয়ার জন্য।

সন্মেলনকে ঘিরে ইতোমধ্যে পাঁচটি উপজেলা ও তিনটি পৌরসভা কমিটির বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। তৈরি করা হয়েছে কাউন্সিলর ও ডেলিগেটদের তালিকা।

এবারের সম্মেলনে সভাপতি পদে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রাজা মিয়া বাটু, সিনিয়র  সহ-সভাপতি শেখ রুহুল আমিন, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও বিচারপতি সামশুল হুদা মানিক, সহ-সভাপতি সিকদার নুর মোহাম্মদ দুলু, সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদের প্রশাসক চৌধুরী এমদাদুল হকের নাম শোনা যাচ্ছে। এর অনেকে পদটি পাওয়ার জন্য দৌঁড় ঝাপ শুরু করেছেন।

এছাড়া সাধারণ সম্পাদক পদে সদর উপজেলা চেয়ারম্যান শেখ লুৎফার রহমান বাচ্চু, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব আলী খান, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ মোহাম্দ ইউসুফ আলী, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক এস এম আক্কাস আলী সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাড.এস এম মুনির হিটলার, সালাহউদ্দিন পান্না, আইন বিষয়ক সম্পাদক অ্যাড. কাজী মেজবাহ উদ্দিন খোকন, প্রচার ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক বদরুল আলম বদর,  ত্রাণ বিষয়ক সম্পাদক মুশফিকুর রহমান লিটনসহ অনেকের নাম উঠে এসেছে।

তবে যারা ত্যাগী ও তৃণমূলমুখী তাদের মধ্য থেকেই একজন এ পদটি পাবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। যারা  দলের দুর্দিনে জণগনের পাশে ছিলেন তারা কেউ এ পদটি পেয়ে যাক এটাই চান নেতা কর্মীরা। আর যেসব নেতা এলাকা ছেড়ে ঢাকামুখী হয়েছেন তারা কেউ গুরুতপূর্ণ পদে আসুক তৃণমূল পর্য়ায়ের নেতা কর্মীরা তা চান না বলে অনেকেই অভিমত ব্যক্ত করেছেন।

সম্মেলনকে সামনে রেখে শুক্রবার মুকসুদপুর উপজেলা এবং ৭, ৮, ৯ ও ১০ নভেম্বর পর্যায়ক্রমে কাশিয়ানী, কোটালীপাড়া, টুঙ্গিপাড়া ও গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা ও শহর শাখার সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। এ সম্মেলনকে ঘিরে সমগ্র জেলায় আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের মধ্যে সৃষ্টি হয়েছে প্রাণচাঞ্চল্য ও উৎসবের আমেজ।

সবাই প্রতীক্ষায় আছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিজ জেলা গোপালগঞ্জে কারা হচ্ছেন, কে কে হচ্ছেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। কারা হচ্ছেন দলের আগামী দিনের কাণ্ডারি।