কান্নায় ভেঙে পড়ল রাকিবের শিশু বোন

কান্নায় ভেঙে পড়ল রাকিবের শিশু বোন

বিশেষ প্রতিবেদক : খুলনার আলোচিত শিশু রাকিব হত্যামামলার অন্যতম আসামি বিউটি বেগমকে খালাস দেওয়ার রায়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে তার মা-বাবা ও শিশু বোন। দুঃখে-ক্ষোভে তাঁরা আদালত চত্বরে কান্নায় ভেঙে পড়েন। আর রাকিবের মা অচেতন হয়ে পড়েন।

কমপ্রেসার মেশিনের হাওয়া পেটে ঢুকিয়ে নির্মমভাবে শিশু রাকিবকে হত্যার দায়ে গ্যারেজ মালিক মো. শরিফ ও তাঁর চাচা মিন্টু খানকে আজ রোববার মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন খুলনা মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক দিলরুবা সুলতানা। একই সঙ্গে মামলার অপর আসামি বিউটি বেগমকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়।

বিউটি বেগম খালাস পেয়ে গেছেন এ কথা শুনে রাকিবের মা লাকি বেগম আদালত প্রাঙ্গণেই অচেতন হয়ে পড়েন। সেই সঙ্গে আহাজারি করতে থাকেন রাকিবের বাবা ও বোন। এ সময় আদালত প্রাঙ্গণে টুটপাড়া এলাকাবাসী বিউটি বেগমের শাস্তি দাবি করে চিৎকার করতে থাকেন।

আশপাশের লোকজন লাকি বেগমের মুখে পানির ছিটা দিয়ে, মাথায় পানি দিয়ে তাঁর চেতনা ফিরিয়ে আনেন। চেতনা ফেরার সঙ্গে সঙ্গে কান্না আর চিৎকার শুরু করেন তিনি।

আহাজারি করতে করতে লাকি বলেন, ‘ওই মহিলা (বিউটি বেগম)  কেন ছাড় পাইল। ওই মহিলারে কেন জামিন দেল? ওই মহিলাই তো মেন (প্রধান) আসামি। ওই মহিলাই তো আমার ছেলেডারে নির্যাতন করিছে। ... যেদিন ও আমার ছেলেরে মারিছে তার আগের দিন সে আমারে হুমকি দিয়ে আইছে। ওই মহিলাকে কে ছেড়ে দেল?...ও তো ছাড় পাবে কিন্তু আমি তো আমার কোলের বাচ্চা ফিরে পাব না। তাহলে সরকার আমার কী করল?’

রাকিবের বাবা মো. নূরুল আলম রায় ঘোষণার পর নিজের প্রতিক্রিয়ায় অভিযোগ করে বলেন, আসামি বিউটি বেগমের পরকীয়ার ঘটনা দেখে ফেলায় তাঁর ছেলে রাকিবকে হত্যা করা হয়। আর সেই বিউটি বেগমের খালাস তাঁরা মেনে নিতে পারছেন না। তিনি বিউটি বেগমেরও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।

কাঁদতে কাঁদতে নূরুল আলম বলেন, ‘আমার সন্তান কেড়ে নেসে, যার সন্তান আছে সেই বোঝে সন্তান কী। আমি কী বলব। আমার বলার মতো কিছু নেই। দেখেন আমার বুকের মধ্যে কী আছে?’

এ সময় সেখানে উপস্থিত সবাই বিউটি বেগমের উপযুক্ত শাস্তি দাবি করেন।

এদিকে রায় ঘোষণার পর তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখায় রাকিবের একমাত্র ছোট বোন রিমি (৭)। বিউটি বেগম খালাস পেয়ে গেছেন এই খবর শোনার সঙ্গে সঙ্গে সে চিৎকার দিয়ে কাঁদতে শুরু করে। বিউটি বেগমের ফাঁসি চাই বলে বারবার চিৎকার করতে থাকে। এই রায় মানে না বলে কান্নায় ভেঙে পড়ে রিমি। এ সময় আশপাশে উপস্থিত এলাকাবাসী ও তার স্বজনরা রিমিকে ধরে রাখেন।