পদ্মা সেতু প্রকল্পে ‘সচিব সভা’

পদ্মা সেতু প্রকল্পে ‘সচিব সভা’

টাঙ্গাইলদর্পণডটকম : পদ্মা সেতু প্রকল্পকে ঘিরে মাওয়া এলাকায় আগামীকাল শনিবার বসছে ‘সচিব সভা’। এই সভায় প্রায় ৭২ সচিবের অংশ নেওয়ার কথা রয়েছে। এরই মধ্য সচিব সভার সব প্রস্তুতিই সম্পন্ন হয়েছে। সভাকে ঘিরে নেওয়া হয়েছে বিশেষ নিরাপত্তা। প্রথা ভেঙে রাজধানীর বাইরে এই সভার আয়োজন ভিন্ন মাত্রা যুক্ত করতে যাচ্ছে। শুধু সভাই নয়, সচিবরা পদ্মা সেতু প্রকল্প এলাকাও ঘুরে দেখবেন।

সেতু বিভাগের সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম জানান, সচিব সভাটি পদ্মা সেতু প্রকল্প এলাকায় হওয়ায় স্বাভাবিকভাবেই সেতু বিভাগ আনন্দিত। সেতু বিভাগ এ ব্যাপারে যথাযথ ব্যবস্থা নিচ্ছে। সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, সভাটি শুধু ইতিহাস নয়, পদ্মা সেতুর অগ্রগতির ক্ষেত্রেও এর ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।

সচিব সভাস্থল মাওয়ার পার্শ্ববর্তী শ্রীনগর উপজেলার দোগাছির পদ্মা সেতুর সার্ভিস এরিয়া-১ ঘুরে এসে মুন্সীগঞ্জের জেলা প্রশাসক মো. সাইফুল হাসান বাদল জানান, প্রাচীন জনপদ বিক্রমপুর তথা মুন্সীগঞ্জে এই আয়োজন নিয়ে বিশেষ পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। রাজধানীর বাইরে এই সচিব সভাটি দেশের অগ্রগতিকে আরো এগিয়ে নিতে ভূমিকা রাখবে বলেও তিনি মনে করেন।

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে বার্তা সংস্থা বাসস জানায়, পদ্মা সেতুর মতো বৃহৎ অবকাঠামো প্রকল্প সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়নের জন্য বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতা ও সমন্বয় দরকার। আর এই সেতু নির্মিত হলে তার যে ইতিবাচক প্রভাব দেশের অর্থনীতিতে পড়বে, তাও বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সম্পৃক্ত। তাই পদ্মাপারে এ সভার আয়োজন করা হয়েছে। সেখানে সচিব সভা হলে স্বাভাবিকভাবেই সচিবদের সম্পৃক্ততা আরো বাড়বে এবং প্রকল্পটির সুষ্ঠু বাস্তবায়ন সস্পর্কে সবাই সচেতন হবেন। এর মধ্য দিয়ে নির্ধারিত সময়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন সম্পর্কে সাধারণ মানুষের মধ্যেও আশাবাদ সৃষ্টি হবে।

জানা গেছে, রাজধানীর রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন ‘যমুনা’ থেকে বাসে চড়ে সচিবরা আসবেন সভাস্থলে, ফিরবেনও বাসে। সাধারণত সচিব সভায় অংশ নেন সরকারের সব সচিব। এতদিন এ সভা হয়ে আসছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে। এবারই প্রথম সচিবালয়ের বাইরে পদ্মা সেতুর নির্মাণস্থলে সভাটি হতে যাচ্ছে। সভা শেষে সচিবরা পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্প বাস্তবায়ন কার্যক্রম সরেজমিন পরিদর্শন করবেন।

সরকারিভাবে দেওয়া কর্মসূচিতে দেখা যায়, শনিবার সকাল সাড়ে ৭টায় সচিবরা রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন ‘যমুনা’ থেকে বাসে চড়ে রওনা দেবেন পদ্মা সেতু প্রকল্প এলাকায়। এক ঘণ্টার বাস ভ্রমণ শেষে সকাল সাড়ে ৮টায় পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্পের মাওয়া প্রান্তে অবস্থিত ‘সার্ভিস এরিয়া-১’-তে উপস্থিত হবেন তাঁরা। সকাল ৯টায় পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্প সম্পর্কে নানা তথ্য সচিবদের সামনে উপস্থাপন করবেন প্রকল্পের পরিচালক শফিকুল ইসলাম। প্রকল্প সম্পর্কে ধারণা নেওয়ার পর সকাল ১০টায় সচিবরা বসবেন মূল সভায়, যা ‘সচিব সভা’ নামে পরিচিত।

সভায় পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্পের দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য আন্তমন্ত্রণালয় সমন্বয়ের ক্ষেত্র চিহ্নিতকরণ এবং জাতীয় অর্থনীতির বিভিন্ন খাতে পদ্মা সেতুর প্রত্যাশিত প্রভাব পর্যালোচনা করবেন সচিবরা। এ ছাড়া বরাবরের মতো সার্বিক প্রশাসনিক বিষয়াদি নিয়ে আলোচনা করবেন তাঁরা।

দুপুর ১২টা পর্যন্ত সভা করে সব সচিব মিলে পদ্মা সেতু প্রকল্প বাস্তবায়ন পরিস্থিতির অগ্রগতি দেখতে সরেজমিন পরিদর্শন করবেন প্রকল্প এলাকা। এক ঘণ্টা প্রকল্প এলাকা পরিদর্শন করে দুপুরের খাবার খেয়ে বিকেল ৩টায় বাসযোগে ঢাকার উদ্দেশে মাওয়া ত্যাগ করবেন সচিবরা। বিকেল ৪টায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন ‘যমুনা’য় ফিরবেন।